মানিকগঞ্জে মাঠপর্যায়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য আঞ্চলিক জনসংখ্যা প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। কিন্তু জনবলের অভাবে দীর্ঘ দুই বছর ধরে তালা ঝুলছে প্রতিষ্ঠানটির গেটে। অকেজো পড়ে আছে কোটি টাকা ব্যয়ে বানানো প্রতিষ্ঠানটি।
স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, প্রায় ১৯ কোটি টাকা খরচ করে মানিকগঞ্জ পৌরসভার নয়াকান্দি এলাকায় দেশের ১৩তম আঞ্চলিক জনসংখ্যা প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট নির্মাণ করা হয়। বর্তমান স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক ২০২০ সালের ১০ অক্টোবর ভবন উদ্বোধন করেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, নিপোর্ট এবং স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীন জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন এবং মাঠপর্যায়ে কর্মরত ফ্যামিলি ওয়েলফেয়ার ভিজিটির সিনিয়র স্টার্ফ নার্স, সাব-অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিউনিটি মেডিক্যাল অফিসারসহ স্বাস্থ্যের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জ্ঞান ও দক্ষতা বৃদ্ধি এবং মনোভাবের পরিবর্তনের জন্য বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণ দেয়া হয়ে থাকে।
সরেজমিনে দেখা যায়, লোকজন না থাকায় প্রতিষ্ঠানের গেটে তালা দিয়ে রাখা হয়েছে। ভেতরটা ময়লা আর আগাছায় ভরে গেছে। প্রশিক্ষণার্থীদের আবাসনের জন্য হোস্টেল, প্রশিক্ষক এবং স্টাফদের জন্য থাকার কক্ষও রয়েছে। লোকজন না থাকায় পরিত্যক্ত দাঁড়িয়ে আছে ভবনগুলো।
নৈশপ্রহরী মো. সাহাব উদ্দিন বলেন, ‘করোনা মহামারির সময় ভবনটি উদ্বোধন করা হয়। করোনার রোগী বেড়ে যাওয়ায় তখন এটাকে কোয়ারেন্টাইন সেন্টার বানানো হয়েছিল। তখন রোগী, ডাক্তার ও স্বাস্থ্যকর্মীরা এখানে ছিলেন। করোনা কমে যাওয়ায় কোয়ারেন্টাইন সেন্টারও নাই। আমি একাই এখানে থাকি আর রাতে পাহারা দেই। লোকজন না থাকায় ভেতরটা আগাছায় ভরে গেছে। মাঝেমধ্যে স্থানীয়রা এসে গবাদিপশুর জন্য এসব আগাছা কেটে নিয়ে যায়।’
জেলা সিভিল সার্জন ডা. মোয়াজ্জেম আলী খান চৌধুরী বলেন, ‘প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের কার্যক্রম শুরু হলে স্বাস্থ্যকর্মীরা নতুন নতুন প্রশিক্ষণ গ্রহণ করতে পারবেন। যত প্রশিক্ষণ হবে, তত বেশি অভিজ্ঞতা অর্জন হবে। এতে মানুষ সঠিক সেবা পাবে এবং সেবার গুণগত মান বাড়বে। আধুনিক স্বাস্থ্যসেবায় প্রশিক্ষণের বিকল্প নেই।’
প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ আবুল মঈদ বলেন, ‘এখনও প্রয়োজনীয় জনবল নিয়োগ হয়নি। আপাতত একজন নাইট গার্ড ও একজন পরিচ্ছন্নতাকর্মী নিয়োগ হয়েছে। বাকিদের নিয়োগ করা হবে। প্রশিক্ষণ শুরু হলে তিন ব্যাচে ৬০ জন স্বাস্থ্যকর্মী আবাসিকভাবে প্রশিক্ষণ নিতে পারবে। আগামী জানুয়ারির মধ্যে প্রশিক্ষণের কার্যক্রম শুরু হতে পারে।’