নির্বাচন ভবনে মতবিনিময় সভায় দেশের ৬১ জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও পুলিশ সুপারদের (এসপি) হইচইয়ে বিব্রত হয়েছেন নির্বাচন কমিশনার (ইসি) রাশেদা সুলতানা। তবে এ ঘটনায় তিনি বিচলিত নন বলে জানান।
তিনি বলেন, ‘ইসি আনিছুরের কথার প্রক্ষেপণটা ওনাদের ভালো লাগে নাই, তবে কথাগুলো সত্য এবং অমূলক নয়।’
সোমবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে রাশেদা সুলতানা এসব কথা বলেন।
ইসি রাশেদা বলেন, ‘হইচই করাটা তাদের ঠিক হয় নাই, এটা সত্য কথা। এ পরিবেশ তৈরি হওয়াটা কোনোভাবেই ঠিক হয় নাই। সাময়িকভাবে বলব, মনে একটু খারাপ লাগছে। বিব্রত তো বটেই, কারণ ওরকম একটা ঘটনা কে চায়? মাথার মধ্যেই তো আনতে পারি নাই। ওরকম একটা পরিস্থিতি তৈরি হবে। যেটা গেছে গেছে, ওটা নিয়ে আমরা এত বিচলিত না। বিচলিত হওয়ার কোনো কারণ আছে বলে আমি মনে করি না।’
জেলা পরিষদ ও গাইবান্ধা উপনির্বাচনসহ দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের ভোটের মাঠের পরিস্থিতি জানতে দেশের ৬১ জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারদের সঙ্গে ঢাকায় গত ঢাকায় শনিবার বৈঠক করে নির্বাচন কমিশন। সেখানে বক্তব্যে বিগত নির্বাচন ও জেলা পরিষদ ভোটে মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের পক্ষপাতমূলক আচরণের বিষয়টি তুলে ধরেন ইসি আনিছুর রহমান। তখনই সভাকক্ষে হইচই সৃষ্টি হয়। ডিসি-এসপিদের আপত্তির মুখে কমিশনার বলেন,‘আপনারা আমার বক্তব্য শুনতে চান কি না?’ জবাবে মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তারা নেতিবাচক সাড়া দিলে বক্তব্য থামিয়ে তিনি ডায়াসে ফিরে যান।
এ ঘটনার পর ইসি আনিছুরের প্রতিক্রিয়া জানতে চেয়ে যোগাযোগ করা হলে তিনি নিউজবাংলাকে কোনো বক্তব্য দিতে রাজি হননি। তবে ইসি আলমগীর দুপুরে সাংবাদিকদের জানান, ডিসি-এসপিদের সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ হওয়ার সুযোগ নাই।
সহকর্মীর সঙ্গে ঘটে যাওয়া এমন ঘটনায় বিব্রত ইসি রাশেদা। ডিসি-এসপিদের সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের কোনো বিতণ্ডা হয়নি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এটা নিয়ে গোটা দেশে মাতামাতি। সবাই এটা নিয়ে সোচ্চার।'
তিনি বলেন, ‘আমার কাছে মনে হয়েছে, হয়তো কথার প্রক্ষেপণটা ওনাদের ভালো লাগে নাই। যে প্রসঙ্গ নিয়ে হঠাৎ উত্তেজনাকর অবস্থার সৃষ্টি হলো, প্রসঙ্গগুলো খুব যে মিথ্যা তা কিন্তু না। প্রসঙ্গগুলো যে আমাদের সমাজে নাই, তা কিন্তু না। প্রসঙ্গগুলো সত্য। হয়তো বলার ধরনটা ওনারা নিতে পারেন নাই।
‘একটা বিচ্ছিন্ন বিষয় নিয়ে রিঅ্যাক্ট করার মানে এই না যে ওনারা সার্বিক দায়িত্ব থেকে সরে যাবেন। ওনারা বলেছেন, ইসি যেভাবে নির্দেশনা দেবেন, সেভাবে কাজ করবেন। তারা আমাদের সহযোগিতা করবেন না এটা আমি বিশ্বাস করি না।’
জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন অনুবিভাগ নির্বাচন কমিশন থেকে স্বরাষ্ট্র ও সেবা সুরক্ষা বিভাগে চলে যাওয়ার প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন ‘কমিশনের আসলে উদ্যোগ নেয়ার স্কোপ নাই। এই প্রক্রিয়া আমাদের সময়ে শুরু হয় নাই। আমরা এন্ডিং অবস্থায় পাচ্ছি। বিষয়টা পুরোটাই সরকারের পলিসির ব্যাপার। আমি বলব না ভালো হবে বা মন্দ হবে। যাওয়ার বিষয়টা আমাদের সময়ে কিছুই হয় নাই। যা কিছু ঘটার আগেই ঘটে গেছে।’
রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন যথাসময়ে হয়ে যাবে বলে জানান এই কমিশনার। তিনি বলেন, ‘যেখানেই নির্বাচনি পরিবেশ বিঘ্নিত হবে, আমরা নির্বাচন বন্ধ করে দেব। এটা পরিষ্কার কথা।’