বগুড়ায় ইউপি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বীর সমর্থককে হত্যার দায়ে ইউপি চেয়ারম্যানসহ ১১ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।
বগুড়ার অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালতের বিচারক হাবিবা মণ্ডল সোমবার দুপুর ১২টার দিকে এই রায় দেন। এ সময় এক নম্বর আসামি ইউপি চেয়ারম্যান রশিদুল ইসলামসহ ৮ আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
রাষ্ট্রপক্ষের সহকারী আইনজীবী (এপিপি) নাছিমুল করিম হলি নিউজবাংলাকে রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
দণ্ডিতরা হলেন সদর উপজেলার শেখেরকোলা ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতা রশিদুল ইসলাম মৃধা, সবুজ আকন্দ, উজ্জ্বল আকন্দ, আব্দুল মান্নান, পিলু খন্দকার, মোখলেছার রহমান মুকুল, আব্দুল হামিদ খোকা আকন্দ, জাহেদুর রহমান, বিপ্লব মিয়া, রাসেল মিয়া এবং জুয়েল প্রামানিক।
আসামিরা সবাই সদরের শেখেরকোলার দক্ষিণভাগ এলাকার বাসিন্দা। এর মধ্যে বিপ্লব, রাসেল ও জুয়েল পলাতক।
এপিপি জানান, ২০০৩ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি শেখেরকোলা ইউনিয়নে ভোট অনুষ্ঠিত হয়। ভোটে আব্দুস সাত্তার খাঁ এবং রশিদুল ইসলাম মৃধা চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এতে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন রশিদুল। ওই নির্বাচনে আব্দুস সাত্তারের সমর্থক হিসেবে কাজ করেন শাহজাহান আলী।
নির্বাচনে জয়ের পর ১১ ফেব্রুয়ারি দলীয় লোকজন নিয়ে রশিদুল স্থানীয়দের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। সন্ধ্যায় বাড়ি ফেরার সময় পথে দক্ষিণভাগ গ্রামে রশিদুলের মুখোমুখি হন শাহজাহান আলী। এ সময় নির্বাচনে তাকে ভোট না দেয়ার অভিযোগ তুলে গাল-মন্দ করে শাহজাহানের ওপর হামলা চালান রশিদুলের লোকজন।
আইনজীবী নাছিমুল আরও জানান, হামলায় রড দিয়ে শাহজাহানের মাথায় ও হাতে আঘাত করা হয়। এতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৩ ফেব্রুয়ারি ভোরে বগুড়ার মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে মারা যান শাহজাহান। এ ঘটনায় ওইদিন ১১ জনের নামে নিহতের ভাই মাহমুদুর রহমান সদর থানায় হত্যা মামলা করেন।
দীর্ঘ ১৯ বছর পর সেই মামলার রায় হলো আজ সোমবার। রায়ে ১১ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। একই সঙ্গে আসামিদের প্রত্যককে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
এই আইনজীবী বলেন, ‘আসামিরা জামিনে ছিলেন। বিচারকার্যের দিন হাজিরা দিতেন। আজকে আটজন হাজিরা দেন। আর তিনজন পলাতক রয়েছেন। রায়ের পর আসামিদের কারাগারে নিয়েছে পুলিশ।’
প্রসঙ্গত, রশিদুল ইসলাম ২০০৩ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত শেখেরকোলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ছিলেন। পরবর্তীতে চলতি বছরে পুনরায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।