বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

মাদকের টাকা জোগাতে চুরি-মলমপার্টি চক্র, বাড়ি বাড়ি পাহারা

  •    
  • ১০ অক্টোবর, ২০২২ ১৩:৫৭

ওসি আবু সাঈদ চৌধুরী বলেন, ‘আমি থানায় যোগদান করার পরপরই মাদক, চুরি, জুয়াসহ বিভিন্ন সমস্যা রোধে অভিযান পরিচালনা করছি। তেঁতুলিয়ায় যেন কোনো মানুষের বাড়িতে চুরি কিংবা হয়রানির শিকার না হয় তার জন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি। মলমপার্টির চক্র যদি থেকে থাকে, আমরা তাদের অব্যশই খুঁজে আইনের আওতায় আনব।’

পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলায় সংঘবদ্ধ মলম পার্টির খপ্পরে সর্বশান্ত হচ্ছে সাধারণ মানুষ। সেই সঙ্গে চুরি-ছিনতাই, ডাকাতি শিকার হলেও তারা আইনগত সহযোগিতা পাচ্ছেন না বলেও অভিযোগ আছে।

স্থানীয়রা বলছেন, এসব কর্মকাণ্ডে জড়িত এলাকার মাদকাসক্তরা। গত কয়েক মাসে উপজেলার ভজনপুরসহ বিভিন্ন বাড়িতে বড় ধরনের অর্ধশতাধিক চুরির ঘটনা ঘটেছে। এতে আতঙ্ক বিরাজ করছে এলাকায়, তাই রাত জেগে বাড়ি পাহারা দিচ্ছেন স্থানীয়রা।

সেসব ঘটনায় কয়েকজনকে পুলিশ আটক করলেও পরে এলাকার প্রভাবশালীদের মাধ্যমে ছাড়িয়ে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ করেন ভুক্তভোগীরা।

ভুক্তভোগী এক ব্যক্তি নাম প্রকাশ না করার কথা জানান, চক্রটি তাদের স্থানীয় সোর্সের মাধ্যমে টার্গেট করা বাড়িতে কৌশলে প্রবেশ করে রান্না ঘরে যায়। এরপর চা, চিনি, হলুদ, মরিচ গুঁড়া, পানি, লবণসহ বিভিন্ন মসলার সঙ্গে চেতনানাশক মেডিসিন মিশিয়ে দেন। সে উপকরণ দিয়ে রান্না করার পর পরিবারে সদস্যরা রাতের খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়লে অচেতন হয়ে যান। সেই সুযোগে পুরো বাড়ির সব দামি জিনিসপত্র নিয়ে যায় চোরেরা।

তেঁতুলিয়া উপজেলার ভজনপুর ইউনিয়নের গোলাপব্দীগছ এলাকার বাসিন্দা শরিফুল ইসলাম ও তার ভাই বকুল হোসেন, একই ইউনিয়নের ভদ্রেশ্বর এলাকার রবিউল ইসলাম, শান্তিনগর এলাকার গ্রামপুলিশ সেকেন্দার, নয়াবাড়ি এলাকার ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম, দেবনগড় ইউনিয়নের আমজুয়ানী এলাকার ব্যবসায়ী ইসহাক আলী, শেখগছ এলাকার হাইয়ুল ইসলামের বাড়িতে গত কয়েক মাসে চুরির ঘটনা ঘটেছে।

স্থানীয়রা বলছেন, এক সময় করতোয়া নদী ও সমতল ভূমিতে প্রচুর পাথর পাওয়া যেত, যা উত্তোলন করে জীবিকা চলতো ওই এলাকার মানুষের। কিন্তু ড্রেজার মেশিনে পাথর তোলায় অনেক মানুষ বেকার হয়ে গেছে। ফলে তারা মাদকে আসক্ত হয়ে পড়েছে। মাদকের টাকা জোগাড় করতে এখন সীমান্তে চোরাচালান, চুরি, অজ্ঞানপার্টি ও ডাকাতিতে ঝুঁকেছে।

ভুক্তভোগী শরিফুল ইসলাম ও বকুল ইসলাম জানান, কয়েক দিন আগে তাদের বাড়িতে মলমপার্টির সদস্যরা প্রবেশ করে রাতে চেতনানাশক ওষুধ খাইয়ে তালা ভেঙে টাকা-পসয়া, সোনা-গহনা ও জমির দলিলপত্র নিয়ে যায়।

শরিফুল বলেন, ‘তেঁতুলিয়া মডেল থানায় অভিযোগ দিলেও পুলিশ তদন্ত করে গেছে, আর কোনো খবর নেই।’

একই ইউনিয়নের ভদ্রেশ্বর এলাকার ভুক্তভোগী রবিউল ইসলাম বলেন, ‘আমি ব্যবসার জন্য ১৫ লাখ টাকা বাড়িতে নিয়ে আসি। তার আগে আমার বাড়িতে কৌশলে খাবারে চেতনানাশক ওষুধ মিশিয়ে রাখে। আমরা খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়লে তারা সব টাকাসহ অনেক মালামাল নিয়ে যায়। চুরির পর আমি পথে বসে গেছি।’

ভজনপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মসলিম উদ্দিন বলেন, ‘আমি নির্বাচিত হওয়ার পর মাদক, চুরিসহ বিভিন্ন অসামাজিক কাজের বিরুদ্ধে একাধিকবার অভিযান চালিয়েছি। আমার এমন অভিযানে আমার ইউনিয়নে অনেক অপরাধ কমে গেছে। তবে যারা মাদকাসক্ত তারাই মূলত মলমপাটি বা বাড়িতে চুরির ঘটনা ঘটাচ্ছে। যারাই এমন কাজে জড়িত থাকুক না কেন আমরা বিষয়টি গভীরভাবে তদন্ত করছি। গ্রামে গ্রাম পুলিশের তৎপরতা বৃদ্ধি করা হয়েছে।’

তেঁতুলিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু সাঈদ চৌধুরী বলেন, ‘আমি থানায় যোগদান করার পরপরই মাদক, চুরি, জুয়াসহ বিভিন্ন সমস্যা রোধে অভিযান পরিচালনা করছি। তেঁতুলিয়ায় যেন কোনো মানুষের বাড়িতে চুরি কিংবা হয়রানির শিকার না হয় তার জন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি। মলমপার্টির চক্র যদি থেকে থাকে, আমরা তাদের অব্যশই খুঁজে আইনের আওতায় আনব।’

এ বিভাগের আরো খবর