বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

‘রাতে ঘুমানোর আগে বিদ্যুৎ যাবেই যাবে’

  •    
  • ৯ অক্টোবর, ২০২২ ২০:৩৫

‘গতকাল রাতের কথাই যদি বলি, রাত সাড়ে ১১টার দিকে একবার গেছে বিদ্যুৎ। পরে সাড়ে ১২টা-১টার দিকে আসছে। কিন্তু এরমধ্যেই আড়াইটা ৩টার দিকে চলে গেছে। সকালেও গেছে কয়েকবার।’

‘দিনে প্রায় ৪-৫ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকে না। রাতে ঘুমানোর আগে বিদ্যুৎ যাবেই যাবে’- বিদ্যুৎ পরিস্থিতি নিয়ে বলছিলেন চট্টগ্রাম মহানগরের আন্দরকিল্লা এলাকার বাসিন্দা পার্থ প্রতিম নন্দী।

গত ৪ অক্টোবর দেশের পূর্বাঞ্চলীয় গ্রিড ফেল করার পর আট ঘণ্টার মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে এলেও এর পর দিন থেকে লোডশেডিংয়ের মাত্রা বেড়ে যাওয়ার যে সমস্যা, তা থেকে বাইরে নয় চট্টগ্রামও। ঢাকা, সিলেট ও ময়মনসিংহ বিভাগের মতো এই বিভাগের জেলাগুলোতেও বিদ্যুতের যখন-তখন চলে যাওয়া এক সাধারণ চিত্রে পরিণত হয়েছে।

সরকারি হিসেবে দেশে বিদ্যুতের লোডশেডিং এখন হাজার মেগাওয়াটের কম। কিন্তু ঢাকা-চট্টগ্রামে বিদ্যুতের যে যাওয়া আসা, তাতে এই হিসাব মেলানো কঠিন। তবে এ নিয়ে সরকারের পক্ষ থেকে দেয়া হচ্ছে না কোনো ব্যাখ্যা। তবে কবে নাগাদ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে, তা নিয়ে কিছুই বলা হচ্ছে না।

এর মধ্যে নিউজবাংলা খোঁজ নিয়ে জেনেছে পশ্চিমাঞ্চলীয় গ্রিড দিয়ে যে চার বিভাগে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়, সেই রংপুর, রাজশাহী, বরিশাল ও খুলনা বিভাগে বিদ্যুৎ পরিস্থিতি বেশ ভালো। এর মধ্যে সবচেয়ে ভালো বরিশাল অঞ্চলে।

চট্টগ্রামের পরিস্থিতি তুলে ধরে পার্থ প্রতীম বলেন, ‘সকাল-দুপুরেও নিয়ম করে বিদ্যুৎ চলে যায়। এতে করে শ্রমঘণ্টা নষ্ট হচ্ছে। বাচ্চা বয়স্কদের কষ্ট হচ্ছে। সংকটটা কোথায় সেটা জানা জরুরি।’

তবে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের দাবি, উৎপাদন কমায় সরাবারহ কমেছে। লোডশেডিংয়ের সঙ্গে সাম্প্রতিক ব্ল্যাক আউটের সম্পর্ক নেই।

তবে শহরবাসী বলছে, জুলাই থেকে ঘটা করে শুরু হওয়া লোডশেডিং পরিস্থিতি উন্নতির মধ্যে গত মঙ্গলবারের সেই বিপর্যয়ের পর কেন উৎপাদন কমবে।

রোববার সারাদিন আসা-যাওয়ার মধ্যেই ছিল বিদ্যুৎ। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কোনো কোনো এলাকায় লোডশেডিং হয়েছে পাঁচ থেকে সাতবার।

নগরীর অক্সিজেন এলাকার বাসিন্দা মো. ফাহিম হাসান বলেন, ‘আগে যে লোডশেডিংয়ের শিডিউল ছিল, তখনের চেয়েও বেশি লোডশেডিং হচ্ছে এখন। ব্ল্যাক আউটের আগে মোটামুটি ঠিক হয়ে গিয়েছিল।’

‘দিনে তো লোডশেডিং হয়ই। মধ্যরাতের পরও একাধিকবার বিদ্যুৎ যাওয়া আসা করে’- বললেন এই এলাকার আরেক বাসিন্দা আব্দুল জলীল।

তিনি বলেন, ‘গতকাল রাতের কথাই যদি বলি, রাত সাড়ে ১১টার দিকে একবার গেছে বিদ্যুৎ। পরে সাড়ে ১২টা-১টার দিকে আসছে। কিন্তু এরমধ্যেই আড়াইটা ৩টার দিকে চলে গেছে। সকালেও গেছে কয়েকবার।’

জুলাইয়ের শুরুর দিকে সরকারের পক্ষ থেকে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ও যুক্তরাষ্ট্র-ইউরোপের অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার কারণে জ্বালানির মূল্য বৃদ্ধি ও সরবরাহ ব্যাহতের কথা জানানো হয়। তাই নিজস্ব জ্বালানি দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা সত্ত্বে ভর্তুকি কমাতে বিদ্যুৎ উৎপাদন কমিয়ে এলাকাভিত্তিক লোডশেডিংয়ের কথা বলা হয়।

গত ১৯ জুলাই এলাকাভিত্তিক এক ঘণ্টা লোডশেডিংয়ের তালিকা তৈরি করা হয়। পরে বলা হয় দুই ঘণ্টার কথা। তবে আদতে লোডশেডিংয়ের পরিমাণ ছিল খুব বেশি। শহরাঞ্চলেরর চেয়ে গ্রামের পরিস্থিতি ছিল ভয়াবহ।

তবে সেপ্টেম্বর থেকে উন্নতি হতে থাকে পরিস্থিতির। কমতে থাকে লোডশেডিং। এর মধ্যে ৪ অক্টোবর বিদ্যুতের পূর্বাঞ্চলীয় গ্রিড অচল হয়ে পড়লে ঢাকা, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, সিলেটসহ ৩০টির বেশি জেলা ৬ থেকে ৭ ঘণ্টা বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়ে।

তবে গ্রিড বিপর্যয়ের সঙ্গে লোডশেডিংয়ের সম্পর্ক নেই বলে দাবি বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি)। সংস্থাটির বিতরণ-দক্ষিণাঞ্চলের (চট্টগ্রাম) প্রধান প্রকৌশলী রেজাউল করিম বলেন, ‘জ্বালানি সংকটে বিদ্যুৎ উৎপাদন কমে যাওয়াতেই লোডশেডিং বেড়েছে। ধীরে ধীরে উন্নতির দিকে যাচ্ছে। আগামীকাল কিছুটা ইম্প্রুভ হবে।’

এ বিভাগের আরো খবর