বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ধর্মীয় লেবাসের আড়ালে চোর চক্রের সর্দার

  •    
  • ৯ অক্টোবর, ২০২২ ১৭:০২

প্রথম দিকে ছোটখাটো চুরি করলেও গত প্রায় দুই দশক থেকে চক্রটি বাসাবাড়ির গ্রিন কেটে, দরজা ভেঙে বড় ধরনের চুরি করে আসছিল বলে জানিয়েছে পুলিশ।

জব্বার মোল্লাহ। বয়স ৬৭ বছর। সাদা পাঞ্জাবি-লুঙ্গি, মাথায় টুপি। দেখলে কেউ তাকে চোর বলে সন্দেহ করবে না। অথচ দীর্ঘ দিন ধরেই তিনি নেতৃত্ব দিয়ে আসছিলেন একটি চোর চক্রের।

এমন বেশভূষায় অপরিচিত কোনো বাড়িতে প্রবেশের ক্ষেত্রেও খুব একটা সন্দেহ হতো না। ফলে চুরি করে সহজেই পালিয়ে যেত চক্রটি। রাজধানীসহ আশপাশের এলাকায় এভাবে দীর্ঘদিন ধরে চুরি করে আসছিল জব্বার মোল্লাহর নেতৃত্বে চক্রটি।

প্রথম দিকে ছোটখাটো চুরি করলেও গত প্রায় দুই দশক থেকে চক্রটি বাসাবাড়ির গ্রিন কেটে, দরজা ভেঙে বড় ধরনের চুরি করে আসছিল বলে জানিয়েছে পুলিশ।

শনিবার মিরপুর পল্লবী এলাকার একটি বাসায় চুরির সময় হাতেনাতে চক্রের ৪ সদস্য ও তাদের তথ্যে দুই জুয়েলারি দোকানের মালিককে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) গুলশান বিভাগ।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন- চোরচক্রের সর্দার জব্বার মোল্লাহ, জামাল সিকদার, মো. আবুল, আজিমুদ্দিন, টঙ্গী এলাকার জুয়েলারি দোকান মালিক আনোয়ার হোসেন ও তাঁতীবাজার এলাকার জুয়েলারি দোকান মালিক আব্দুল ওহাব।

গ্রেপ্তারের সময় তাদের কাছ থেকে প্রায় ৯ ভরি স্বর্ণালঙ্কার, ৮২ ভরি রূপা, ১৭ লাখ টাকা, দরজা ভাঙার যন্ত্রপাতি ও মোবাইল ফোন জব্দ করে পুলিশ।

রোববার দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।

তিনি বলেন, গত ১৭ আগস্ট নিকুঞ্জ-২ এর ডাক্তার দম্পতির বাসায় দিনের বেলায় চুরি হয়। বাসায় দারোয়ান ও সিসিটিভি না থাকার সুযোগে জব্বার ও তার চোরচক্রের সদস্যরা বাসায় প্রবেশ করে তৃতীয় তলার দরজা ভেঙে ঘরের ভেতরে প্রবেশ করে। আলমারির লক ভেঙে ৪২ ভরি স্বর্ণ ও ৪০০০ ডলার চুরি করে।

ডিবিপ্রধান জানান, চোরচক্রটির সর্দার জব্বার মোল্লাহর বয়স ৬৭ বছর। সাদা পাঞ্জাবি-লুঙ্গি, মাথায় টুপি এই বেশভূষাই চোরচক্রের প্রধান হাতিয়ার। চুরির আগে দাড়ি-টুপি-পাঞ্জাবি পরা থাকায় কোনো অপরিচিত ভবনে উঠলেও প্রাথমিকভাবে কেউ তাদেরকে সন্দেহ করতো না। চুরির আগের দিন তারা রাজধানীর বিভিন্ন আবাসিক এলাকায় ঘুরে সুবিধামতো একটি বাসা ঠিক করে। যেসব বাসার দরজা লক করা থাকতো সেসব বাসা তারা টার্গেট করত। পরে সেই বাসায় বিশেষভাবে তৈরি দেশীয় অস্ত্র দিয়ে দরজা ভেঙে চুরি করে।

হরুন অর-রশীদ জানান, জব্বারসহ চক্রটির সদস্যরা ৮ থেকে ১০ বছর বয়সে ঢাকার কারওয়ান বাজার, মিরপুরসহ সংসদ ভবনের আশপাশের এলাকায় টোকাই ছিল। এ সময় তারা বাসাবাড়ির ছাদে রোদে দেয়া জামাকাপড়, জুতা, রড ইত্যাদি চুরি করে বিক্রি করত। চোরাই মাল বিক্রি করতে গিয়ে একে অন্যের সঙ্গে পরিচিত হয় এবং তারা একত্রে চুরি করা শুরু করে। বিগত ২০-২৫ বছর ধরে ঢাকার বিভিন্ন আবাসিক এলাকায় দরজা ভেঙে বাসায় ঢুকে চুরি করা শুরু করে তারা।

ডিবির এই কর্মকর্তা বলেন, ‘জব্বার মোল্লা চারটি বিয়ে করেছেন। চুরির টাকা দিয়ে তাদের সুন্দরভাবে ভরণপোষণ করেন। চুরির টাকা দিয়ে নারায়ণগঞ্জ কেরানীগঞ্জ গাজীপুরসহ বিভিন্ন জায়গায় জমিও কিনেছেন।’

এ বিভাগের আরো খবর