চীনের সহযোগিতায় তিস্তা মহাপরিকল্পনা দ্রুত আলোর মুখ দেখবে বলে আশা করছেন বাংলাদেশে দেশটির রাষ্ট্রদূত এইচই মি লি জিমিং।
সকালে তিস্তা ব্যারেজ ও কমান্ড এলাকা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানান তিনি।
তিনি বলেন, প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যারেজ এলাকার সম্ভাব্যতা যাচাই চলছে এবং দুই দেশের সরকারের প্রচেষ্টায় দ্রুত কাজ শুরু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে সবদিক দিয়ে পরিবর্তন ঘটবে এই এলাকার। মানুষের জীবনমান উন্নয়ন, অর্থনীতি, প্রকৃতি ও পরিবেশ যোগাযোগ ব্যবস্থাসহ মানুষের প্রতিটি ক্ষেত্রে এটি অবদান রাখবে।
লি জিমিং বলেন, এই এলাকার মানুষরা কী ভাবছেন সেটি সবার আগে খেয়াল করছি আমরা। মানুষের কতটা চাহিদা রয়েছে সেটিও দেখা হচ্ছে।
তিস্তাকে ঘিরে মহাপরিকল্পনার অংশ হিসেবে পূর্ব চীনের জিয়াংসু প্রদেশের সুকিয়ান সিটির আদলে তিস্তার দুই পাড়ে পরিকল্পিত স্যাটেলাইট শহর গড়ে তোলার কথা ভাবা হচ্ছে। নদী খনন ও শাসন, ভাঙন প্রতিরোধ ব্যবস্থা, আধুনিক কৃষি সেচ ব্যবস্থা, মাছচাষ প্রকল্প, পর্যটনকেন্দ্র স্থাপন করা হবে। এতে ৭ থেকে ১০ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এর ফলে উত্তরের জেলা লালমনিরহাট, রংপুর, নীলফামারী, গাইবান্ধা ও কুড়িগ্রাম জেলার আর্থিক সমৃদ্ধি হবে।
চীনা দূত বলেন, ‘তিস্তা একটি বৃহৎ নদী। এটি খনন করতে পারলে এ অঞ্চলের মানুষের জীবনমানের পরিবর্তন হবে। এটি বাংলাদেশে আমার প্রথম কাজ। যদিও এ প্রকল্প বাস্তবায়ন চ্যালেঞ্জের, এরপরও এটি করব।
‘যেহেতু তিস্তা আন্তর্জাতিক নদী সে কারণে লাভ ও ক্ষতি কি রকম হচ্ছে সেটিও বিবেচনায় নেয়া হচ্ছে বলে জানান রাষ্ট্রদূত। বলেন, প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে এগুলো মূল্যায়ন করা হবে।
লালমনিরহাট-১ আসনের সংসদ সদস্য মোতাহার হোসেন, পানি উন্নয়ন বোর্ড রংপুর অঞ্চলের প্রধান আনোয়ারুল হক ভুঁইয়া, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী খুশি মোহন সরকার, পানি উন্নয়ন বোর্ডের ডালিয়া বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আশফাউদৌলা প্রিন্স, ডিমলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বেলায়েত হোসেনও এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
সংসদ সদস্য মোতাহার বলেন, ‘তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন সময়ের দাবি হয়ে দাঁড়িয়েছে। বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার প্রচেষ্টায় আলোর মুখ দেখছে তা।
‘চীনা রাষ্ট্রদূত লি জিমিংকে দেখে মনে হলো তার মনোভাব পজেটিভ। আমরা আশা করি দ্রুত সময়ের মধ্যে সু-খবর পাব।’
এই প্রকল্প বাস্তবায়ন জরুরি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বর্ষার সময় পানিতে এলাকা প্লাবিত হয়ে জমি জায়গা, ঘরবাড়ি যেমন তিস্তা গিলে খায়। তেমনি খরার সময় পানি অভাবে চাষাবাদ ব্যাহত হয়।
‘চীনের রাষ্ট্রদূত তিস্তা ব্যারাজ পরিদর্শনে এসে অত্যন্ত খুশি হয়েছেন। তারা কাজ করতে আগ্রহী। আমি মনে করি চীন ছাড়া তিস্তার মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন সম্ভব না।’