বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

উত্তরার বারে অভিযান নিয়ে ডিএনসি ও পুলিশের দ্বন্দ্ব

  •    
  • ৯ অক্টোবর, ২০২২ ১৩:৫৯

ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, ‘পুলিশ প্রয়োজনে কোনো জায়গায় অসামাজিক কার্যকলাপ, অবৈধভাবে মদ বিক্রি এবং যেকোনো ঘটনা ঘটলে পুলিশ যেকোনো জায়গায় অভিযান বা তল্লাশি চালাতে পারে। আমরা সব সময় এটা করে আসছি।’

রাজধানীর উত্তরার গরীবে নেওয়াজ অ্যাভিনিউয়ে লেকভিউ বারে অভিযান নিয়ে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর (ডিএনসি) ও পুলিশের মধ্যে দ্বন্দ্ব দেখা গেছে। ডিএনসি বলছে, ওই বারে আইনের কোনো ব্যত্যয় ঘটেনি। বারটি বৈধভাবেই চলছিল। অন্যদিকে পুলিশ জানিয়েছে, কোনো জায়গায় অসামাজিক কার্যকলাপ বা অবৈধভাবে মদ বিক্রি করা হলে পুলিশ যেকোনো সময় অভিযান পরিচালনা করতে পারে।

রোববার দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ এ কথা জানান।

বৃহস্পতিবার রাতে উত্তরার একটি ভবনে অভিযান চালায় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। সেখানকার একটি বার থেকে প্রায় সাড়ে ছয় হাজার ক্যান বিয়ার ও সাড়ে চার শতাধিক বোতল বিদেশি মদ উদ্ধার করার কথা ডিবির পক্ষ থেকে জানানো হয়। ডিবির দাবি, ওই ভবনে অবৈধভাবে দেশি-বিদেশি মদ ও বিয়ারের ব্যবসা করা হয়। কিংফিশার রেস্টুরেন্ট নামে ওই ভবনের পঞ্চম, ষষ্ঠ ও সপ্তম তলায় অবৈধ কার্যক্রম চলত।

সেদিন রাতে লেকভিউ বার থেকে ম্যানেজারসহ ৩৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে ডিবি পুলিশ। তবে কিংফিশার রেস্টুরেন্ট ও লেকভিউ বারের মালিক মুক্তার হোসেনকে এখনও গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।

ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলন।

এই অভিযানকে আইনবহির্ভূত কর্মকাণ্ড বলে মনে করছেন ডিএনসির কর্মকর্তারা।

ডিএনসি বলছে, ওই বারে আইনের কোনো ব্যত্যয় ঘটেনি। লাইসেন্স নিয়ে বারটি পরিচালনা করা হচ্ছিল। আর বার থেকে যেসব মদ-বিয়ার উদ্ধার করা হয়েছে, লাইসেন্স অনুযায়ী তারা সেসব সংরক্ষণ করতে পারে।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের উত্তরা এলাকার পরিদর্শক মাহবুবুর রহমান অভিযোগ করেছেন, ‘লেকভিউ বারের লাইসেন্স সঠিক আছে। তাদের কাগজপত্র ঠিক আছে। অভিযানের সময় ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে আমি সেখানে গেলে ডিবির সদস্যরা আমার সঙ্গে অশোভন আচরণ করেছে।’

তবে ডিবি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ডিএনসির অসাধু কর্মকর্তাদের যোগসাজশে উত্তরা এলাকার ওই বারে অবৈধভাবে মদ-বিয়ার রেখে ব্যবসা করা হচ্ছিল। অভিযানের সময় সংরক্ষিত মদ ও বিয়ার আমদানির বৈধ কোনো কাগজপত্র তারা দেখাতে পারেনি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) হারুন অর রশীদ বলেন, ‘পুলিশ মাদকদ্রব্য উদ্ধার করতে পারে কি না বা মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করতে পারে কি না তা আপনারা (সাংবাদিক) ভালো জানেন। আমাদের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের ২৩ ধারায় স্পষ্ট বলা আছে কারা তল্লাশি করবে বা করবে না।’

তিনি বলেন, ‘পুলিশ প্রয়োজনে কোনো জায়গায় অসামাজিক কার্যকলাপ, অবৈধভাবে মদ বিক্রি এবং যেকোনো ঘটনা ঘটলে পুলিশ যেকোনো জায়গায় অভিযান বা তল্লাশি চালাতে পারে। আমরা সব সময় এটা করে আসছি, আমরা বড় বড় চালান ধরছি। এ ছাড়া অবৈধ বারে আমরা অভিযান পরিচালনা করছি।’

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের ২৩ ধারায় যা আছে

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন-২০১৮ এর ২৩ ধারায় বলা হয়েছে, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরসহ পুলিশ, কাস্টমস, বিজিবি, কোস্টগার্ড লাইসেন্স করা প্রতিষ্ঠান ছাড়া যেকোনো মাদকের বিষয়ে অভিযান চালাতে পারে। তবে আইনের ২০ ধারা অনুযায়ী লাইসেন্স নেয়া প্রতিষ্ঠানে শুধু মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর অভিযান চালাতে পারবে।

এ বিষয়ে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক রাশেদুজ্জামান বলেন, ‘অধিদপ্তরের ধারায় স্পষ্ট করে বলা রয়েছে, বৈধ বারে অভিযান করতে গেলে আমাদের জানাতে হবে। শুক্রবারের ঘটনায় পুরোপুরি আইনের ব্যত্যয় ঘটছে। এখানে পুলিশকে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের আলাদা করে কিছু বলার নেই। যা বলার আদালতই বলবেন।’

এদিকে সম্প্রতি রাজধানীর উত্তরা ও যাত্রাবাড়ী থেকে দুইজনকে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে উঠিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে।

এ বিষয়ে ডিবির বক্তব্য জানতে চাওয়া হলে হারুন অর রশীদ সংবাদ সম্মেলনে বলেন,‘ জনগণের কাছে অনুরোধ থাকবে কেউ যদি ডিবি পরিচয় দেয় তাহলে তাদের আইডি কার্ড দেখতে চাবেন। আমাদের ডিবির প্রতিটি টিমের কাছে বলা আছে, যে এলাকায় অভিযান পরিচালনা করবেন চাওয়ামাত্র কার্ড প্রদর্শন করবেন। কিন্তু আমরা ইদানীং এটাও শুনেছি ডিবির পরিচয় দিয়ে অনেককে ধরে নিয়ে আসছেন। পরে আমাদের কাছে আসলে অনেক খুঁজাখুঁজি করে এসব ব্যক্তিদের পাওয়া যায়নি। আমরা যখন খোঁজাখুঁজি করে পায়নি তখন আমরা মনে করি, কেউ ডিবির পরিচয় দিয়ে ওই ব্যক্তিকে উঠিয়েছে।

‘আমরা শুধু এটুকু বলতে চাই, আমরা স্বচ্ছ। কোথাও কোনো এলাকায় কেউ ডিবির নাম ব্যবহার করলে আপনারা চ্যালেঞ্জ করবেন। আইডি কার্ড দেখাতে না পারলে তখন আপনারা যা করবার তা করবেন।’

তিনি বলেন, ‘ডিবি যখন অভিযান করে তখন সঠিক তথ্য দিয়েই আমরা অভিযান পরিচালনা করি। ডিবির নাম যেন কেউ ব্যবহার না করতে পারে সেজন্য আমরা যেমন অত্যাধুনিক আইডি কার্ড তৈরি করেছি, তেমনি কিউআর কোড সংবলিত নতুন পোশাকও সংযুক্ত করেছি। এগুলো যদি না থাকে তাহলে মনে রাখতে হবে ডিবির নাম কেউ ব্যবহার করেছে।’

এ বিভাগের আরো খবর