বিতর্কিত, জামায়াত-শিবির ও বিএনপি থেকে উঠে আসা বিবাহিত, অছাত্র, বয়সোত্তীর্ণ, মাদকাসক্ত ও টাকার বিনিময়ে কমিটি গঠনের অভিযোগ এনে কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলা ছাত্রলীগের নবগঠিত কমিটিকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছেন পদবঞ্চিত নেতা-কর্মীদের একাংশ।
উপজেলা পরিষদের বঙ্গবন্ধু চত্বরে সংবাদ সম্মেলনে মাধ্যমে শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে এ ঘোষণা দেন তারা।
এর আগে বেলা ১১টার দিকে নবগঠিত কমিটি বাতিলের দাবিতে ঝাড়ু মিছিল বের করেন তারা। মিছিলটি উপজেলা পরিষদ চত্বর থেকে শুরু হয়ে পৌর বাজারের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে। বিক্ষোভ মিছিল শেষে পাকুন্দিয়া-মির্জাপুর-মঠখোলা সড়কের তিন রাস্তা মোড়ে টায়ার জ্বালিয়ে রাস্তা অবরোধ করে। এতে প্রায় আধা ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ থাকে। পরে পুলিশ এসে যান চলাচল স্বাভাবিক করে।
সংবাদ সম্মেলন বক্তব্য রাখেন পাকুন্দিয়া উপজেলা ছাত্রলীগ নেতা সাকিবুল হাসান মুন্না।
নবগঠিত কমিটির বিরুদ্ধে অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘দীর্ঘ এক যুগ পর গত বুধবার রাতে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. আনোয়ার হোসেন মোল্লা ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ফয়েজ ওমান খানের সই করা এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ১৯ সদস্যবিশিষ্ট আংশিক কমিটি ঘোষণা করে জেলা ছাত্রলীগ।’
‘কমিটিতে নাজমুল আলমকে সভাপতি ও মো. তোফায়েল আহমেদ তুহিনকে সাধারণ সম্পাদক করে। এই কমিটিতে ৯ জন সহসভাপতি, চারজন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও চারজনকে সাংগঠনিক সম্পাদক করা হয়েছে, যাদের বেশির ভাগই বিতর্কিত, জামায়াত-শিবির ও বিএনপি থেকে উঠে আসা বিবাহিত, অছাত্র, বয়সোত্তীর্ণ, মাদকাসক্ত।’
কমিটির সভাপতির বিরুদ্ধে অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘নাজমুল ছোটবেলা থেকেই ছাত্রদল ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে শিবিরের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। তার পরিবারও বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত। এ ছাড়া এই কমিটির ১ নম্বর সহসভাপতি মো. আরমিন মিয়া ইতোমধ্যেই দুধ দিয়ে গোসল করে রাজনীতি থেকে বিদায় নিয়েছেন।
‘আরেক সহসভাপতি সোহান বরকত, সে ১০ বছর আগে বিয়ে করেছেন। সাংগঠনিক সম্পাদক করা হয়েছে ফরহাদ আলম ছোটন নামে একজনকে। তার বাড়ি কোথায়, সে কোথায় পড়াশোনা করে কেউ জানে না। তাকে কেউ চিনেও না। এ ছাড়া আরেক সাংগঠনিক সম্পাদক রাকিব হাসান ভূঁইয়া, তারও ছাত্রত্ব নেই।’
মুন্না বলেন, ‘মূলত টাকার বিনিময়ে আর নির্দিষ্ট কিছু ব্যক্তিকে খুশি করতেই জেলা ছাত্রলীগ এ সকল ব্যক্তিকে দিয়ে উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি গঠন করেছে৷ আমরা এই কমিটিকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করলাম। রাতের আঁধারে নয়, তৃণমূলের কর্মীদের মতামতের ভিক্তিতে সম্মেলনের মাধ্যমে সঠিক নেতৃত্ব নির্বাচন করার অনুরোধ জানাই।’
এ সময় উপজেলা ছাত্রলীগ নেতা রাকিবুল হাসান হিমেল, রাকিবুল হাসান হৃদয়, সোহেল আহম্মেদ, চরফরাদি ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন, পৌর ছাত্রলীগ নেতা নাফিজ আহম্মেদ নাদিমসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
এ বিষয়ে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন মোল্লা সুমন ফোনে নিউজবাংলাকে বলেন, ‘যারা প্রকৃত অর্থে সংগঠনকে ভালোবেসে মনেপ্রাণে ছাত্রলীগ করেন, তাদের সমন্বয়েই পাকুন্দিয়া উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি গঠন করা হয়েছে। যেকোনো জায়গায় যখন কোনো একটি ইউনিটের কমিটি গঠন করা হয় তখন সবাইকে তো আর সমানভাবে খুশি করা সম্ভব হয় না। এই ক্ষেত্রে একটি অংশের মধ্যে নানা ধরনের মান অভিমান থাকবেই।’