ঝিনাইদহে ছাত্রলীগের এক গ্রুপের হামলা থেকে বাঁচতে মোটরসাইকলে পালানোর সময় সড়কে তিন শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে।
সদর উপজেলার আঠারো মাইল নামক স্থানে শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে লরির সঙ্গে তাদের মোটরসাইকেলটি ধাক্কা খেলে ঘটনাস্থলেই মারা যান তারা।
জেলার সরকারি ভেটেরিনারি কলেজের আন্দোলনের নেতৃত্ব নিয়ে ছাত্রলীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের জেরে ওই হামলার ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
মারা যাওয়া তিনজন হলেন কলেজের ছাত্র সংসদের ভিপি চতুর্থ বর্ষের ছাত্র মুরাদ হোসেন, তৌহিদুল ইসলাম ও সমরেশ বিশ্বাস। তাদের রাজনৈতিক পরিচয় তাৎক্ষণিকভাবে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
ঝিনাইদহ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মোহাম্মদ সোহেল রানা তিনজনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জানা গেছে, ডক্টর অফ ভেটেরিনারি মেডিসিন (ডিভিএম) ডিগ্রির দাবিতে বছরখানেক ভেটেরিনারি কলেজের আন্দোলন চালিয়ে আসছেন শিক্ষার্থীরা। এই আন্দোলনের নেতৃত্ব দেয়া নিয়ে কলেজের সাবেক শিক্ষার্থী ও জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি ফাহিম আহমেদের সঙ্গে বর্তমান কলেজছাত্র সংসদের জিএস সজীবের বিরোধ চলে আসছে।
শুক্রবার রাতে কলেজ ছাত্র সংসদের ভিপি মুরাদ ও জিএস সজীবসহ আরও কয়েকজন শহর থেকে ক্যাম্পাসে ফিরছিলেন। ১০টার দিকে জোহান পার্কের সামনে পৌঁছানোর সঙ্গে সঙ্গেই প্রতিপক্ষরা তাদের ওপর ধারালো অস্ত্র দিয়ে হামলা চালায়। এতে সজীবসহ কয়েকজন গুরুতর আহত হন।
এ সময় হামলা থেকে বাঁচতে মুরাদসহ তিনজন মোটরসাইকেলে পালানোর চেষ্টা করেন। একপর্যায়ে তাদের মোটরসাইকেলটি রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা একটি লরির সঙ্গে ধাক্কা লাগে। । এতে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় মুরাদসহ তৌহিদুল ও সমরেশের।
ফায়ার সার্ভিসের উপসহকারী পরিচালক শামিমুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা ঘটনাস্থলে এসে তিনজনকে মৃত অবস্থায় পেয়েছি। লরিটির পেছনে কোনো আলো ছিল না। প্রাথমিক ধারণা, মোটরসাইকেলের অতিরিক্ত গতির কারণে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে।’
এ বিষয়ে ঝিনাইদহ জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সজীব আহমেদ বলেন, ‘এমন ঘটনার সঙ্গে ছাত্রলীগের কেউ জড়িত থাকলে তদন্ত করে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
ঝিনাইদহ সদর থানার ওসি বলেন, ‘মরদেহ উদ্ধার করে সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।’