বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

গ্রিড বিপর্যয়ের কারণ এখনও অজানা

  •    
  • ৬ অক্টোবর, ২০২২ ১৮:১৭

জাতীয় গ্রিডে বিপর্যয়ের কারণে মঙ্গলবার ঢাকাসহ দেশের প্রায় অর্ধেক অংশ দীর্ঘক্ষণ বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়ে। এর আগে কয়েক বার ছোট পরিসরে এ ধরনের ঘটনা ঘটলেও সবচেয়ে বড় বিপর্যয় ঘটে ২০১৪ সালের ১ নভেম্বর। সেবার সারা দেশ ১৭ ঘণ্টা ব্লাকআউট ছিল।

বিদ্যুতের জাতীয় গ্রিডে বিপর্যয়ের কারণ দুই দিনেও পরিষ্কার হয়নি। ঘটনার সঙ্গে এখন পর্যন্ত মানুষের ত্রুটির (হিউম্যান ফল্ট) কোনো প্রমাণ মেলেনি বলে নিউজবাংলাকে জানিয়েছেন পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অফ বাংলাদেশ (পিজিসিবি) লিমিটেডের তদন্ত কমিটির প্রধান মো. ইয়াকুব ইলাহী চৌধুরী।

তবে প্রাথমিক তদন্তে এসেছে বড় বিপর্যয় ঠেকাতে স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থার অংশ হিসেবেই মঙ্গলবার ‘গ্রিড ট্রিপ’ এর ঘটনা ঘটে।

তদন্ত কমিটির প্রধান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘দুর্ঘটনার সময় প্রত্যেকটি পাওয়ার প্ল্যান্টেই কিছু না কিছু ঘটেছে। কেন সেটি ঘটেছে বা ওইসব ঘটনার সঙ্গে কোনো বিশেষ ত্রুটির সম্পর্ক আছে কিনা- আমরা অনুসন্ধান করছি।’

বিভিন্ন বিদ্যুৎকেন্দ্র ও সরবরাহ ব্যবস্থা পরিদর্শন শুরু করেছেন তদন্ত কমিটির সদস্যরা। ইয়াকুব ইলাহী চৌধুরীর নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের কমিটি বুধবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ বিদ্যুৎকেন্দ্র পরিদর্শন করেন। এর আগে তারা ঘোড়াশাল বিদ্যুৎকেন্দ্রেও যান।

ইয়াকুব ইলাহী চৌধুরী বলেন, ‘আমরা অন্য বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোতেও যাব। কেন্দ্রগুলো থেকে আমরা বিভিন্ন তথ্যসংগ্রহ করছি। এগুলো পর্যালোচনা করা হবে। তবে এখনই গ্রিড বিপর্যয়ের কারণ সম্পর্কে স্পষ্ট কিছু বলা যাবে না। সব কিছু বিবেচনায় নিয়েই তদন্ত চলছে।’

জাতীয় গ্রিডে বিপর্যয়ের কারণে মঙ্গলবার ঢাকাসহ দেশের প্রায় অর্ধেক অংশ দীর্ঘক্ষণ বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়ে। এর আগে কয়েক বার ছোট পরিসরে এ ধরনের ঘটনা ঘটলেও সবচেয়ে বড় বিপর্যয় ঘটে ২০১৪ সালের ১ নভেম্বর। সেবার সারা দেশ ১৭ ঘণ্টা ব্লাকআউট ছিল।

স্মার্ট গ্রিড সিস্টেম চালু না হওয়া পর্যন্ত এ ধরনের ঝুঁকি থাকবে বলে মনে করেন বিদ্যুৎ খাত বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, পুরোনো আমলে অ্যানালগ পদ্ধতির লোড ব্যবস্থাপনাই জাতীয় গ্রিডকে ঝুঁকিতে ফেলেছে।

কেন এমনটা ঘটে

বিদ্যুৎ প্রবাহ লাইনে চলমান ফ্রিকোয়েন্সিতে তারতম্য ঘটলেই ব্লাক আউটের ঘটনা ঘটতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে বড় কোনো বিপর্যয় এড়াতে নিজ থেকেই ‘গ্রিড ট্রিপ’ ঘটে বা স্বয়ংক্রিয়ভাবে বিদ্যুৎ প্রবাহ বন্ধ হয়ে যায়।

বিদ্যুৎ বিভাগ বলছে, বাংলাদেশে ৫০ মেগাহার্টজ তরঙ্গে বিদ্যুৎ সরবরাহ হয়। কোনো কারণে এটি বেড়ে কিংবা কমে গেলে গ্রিড ট্রিপের ঘটনা ঘটে। প্রাথমিক অনুসন্ধানে দেখা গেছে, মঙ্গলবারের ব্ল্যাকআউটের মূল কারণ ছিল এই গ্রিড ট্রিপ।

বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব মো. হাবিবুর রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ঘোড়াশাল বিদ্যুৎকেন্দ্রে দুটি সাবস্টেশনের মাঝখানে যে ইন্টারকানেকশন রয়েছে, সেখানেই মূলত সমস্যা। তবে সমস্যাটা কেন হল সেটা এখনও জানা যায়নি।’

তদন্ত কমিটির প্রধান প্রকৌশলী ইয়াকুব এলাহি চৌধুরী জানান, দেশের কয়েকটি বিদ্যুৎকেন্দ্রের পাওয়ার কন্টোল রুমগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে। সব পরীক্ষা শেষে বিপর্যয়ের কারণ জানা যাবে।

৪ সেপ্টেম্বরের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী এই কমিটিকে তিন দিনের মধ্যে তদন্ত শেষ করতে বলা হয়েছে।

এর আগে ২০১৪ সালের নভেম্বরের ব্ল্যাকআউটের পর ঘটনা তদন্তে একটি কমিটি করা হয়। ওই কমিটির প্রতিবেদনে কারিগরি ত্রুটি, দায়িত্বপালনে সীমাবদ্ধতা এবং নির্দেশ পালনে অবহেলাকে মূল কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছিল।

প্রতিবেদনে বিদ্যুৎ সঞ্চালন ব্যবস্থার আধুনিকায়ন ও ডিজিটাল করা, কারিগরি ব্যবস্থার উন্নয়নসহ ২০ দফা সুপারিশ করা হয়। তবে আট বছরেও বেশির ভাগ সুপারিশ বাস্তবায়ন করা হয়নি।

২০১৭ সালে গ্রিড বিপর্যয়ে কয়েক ঘণ্টা বিদ্যুৎহীন ছিল দেশের উত্তরবঙ্গ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ৩২ জেলা। সর্বশেষ গত মাসে গ্রিড বিপর্যয়ে রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল অঞ্চল ৪০ মিনিট থেকে দেড় ঘণ্টার বেশি সময় বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন ছিল।

এর আগে ২০০২, ২০০৭, ২০০৯ সালেও গ্রিড বিপর্যয়ের ঘটনা ঘটে।

এ বিভাগের আরো খবর