বিবাহিত, অছাত্র, বয়সোত্তীর্ণ, মাদকাসক্ত ও টাকার বিনিময়ে কমিটি গঠনের অভিযোগ এনে কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর উপজেলা ছাত্রলীগের নবগঠিত কমিটিকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছেন নেতা-কর্মীদের একাংশ।
বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে মাধ্যমে এ ঘোষণা দেন তারা।
উপজেলা ছাত্রলীগের নবগঠিত কমিটির সহ-সভাপতি মোখলেছুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাদেক মিয়া, সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক এমদাদ হোসেন মোল্লা মঈন, সাবেক সদস্য আমির হামজা, হোসেনপুর কলেজ ছাত্রলীগ নেতা মনিরুল ইসলাম মাছুম এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
লিখিত বক্তব্যে সাদেক মিয়া বলেন, ‘বুধবার রাতে প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিবাহিত, অছাত্র, বয়স উত্তীর্ণ, মাদকাসক্তদের দিয়ে ২৯ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি ঘোষণা করেছে জেলা ছাত্রলীগ। যেটা আমরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জানতে পারি।
‘কমিটিতে ৯ জন সহ-সভাপতি, ৯ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, ৯ জনকে সাংগঠনিক সম্পাদক করা হয়েছে। তাদের মধ্যে চারজন বিবাহিত। এই কমিটি বাংলাদেশ ছাত্রলীগের পবিত্র গঠনতন্ত্রকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে কোনোরূপ সম্মেলন ব্যতীত ঘোষণা করা হয়েছে, যা দীর্ঘদিন ধরে সংগঠনে জড়িত ত্যাগী ছাত্রলীগ কর্মীদের অত্যন্ত ব্যথিত করেছে।’
তিনি বলেন, ‘তথাকথিত কমিটিতে বিবাহিত, অছাত্র, মাদকাসক্ত, বয়স উত্তীর্ণ, বিএনপি-জামায়াত পরিবার থেকে উঠে আসা সুবিধাবাদীদের দিয়ে টাকার বিনিময়ে অনুমোদন দেয়া হয়েছে বলে প্রতীয়মান হয়। এটা উপজেলা ছাত্রলীগের কাঠমোকে দুর্বল করে দেয়ার চূড়ান্ত ষড়যন্ত্র।’
ছাত্রলীগ কখনও কোনো ব্যক্তির ‘মাই-ম্যান’ তৈরির কারখানা হতে পারে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা এই তথাকথিত ব্যক্তিপূজানির্ভর, অগঠনতান্ত্রিক কমিটি ঘৃণাভরে প্রত্যাখান করলাম এবং তথাকথিত কমিটি আজ্ঞাবই নেতৃত্বকে হোসেনপুর উপজেলার অবাঞ্ছিত ঘোষণা করলাম।’তবে সব অভিযোগ অস্বীকার করেছে হোসেনের উপজেলা ছাত্রলীগের নবগঠিত কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক।
উপজেলা ছাত্রলীগের নবগঠিত কমিটিতে সভাপতির নাম মুস্তাফিজুর রহমান মোখলেছ লেখা থাকলেও তার নামে যে জাতীয় দুটি পরিচয়পত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে সেটিতে তার নাম লেখা আছে মোখলেছুর রহমান। একটিতে তার জন্মতারিখ লেখা আছে ১৯ সেপ্টেম্বর ১৯৮৩, অপরটিতে লেখা ১ মে, ১৯৯০।’
মোখলেছ এর আগে হোসেনপুর পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন। তিনি বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছে তার কোনো ভিত্তি নেই। যারা অভিযোগ করছে তারা পদবঞ্চিত হয়ে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে এগুলো করছে।’
নবগঠিত কমিটির সাধারণ সম্পাদক ইয়াসীর আরাফাত শুভ। এর আগে তিনি জেলা ছাত্রলীগের উপ-ক্রীড়া সম্পাদক ছিলেন। শুভ বলেন, ‘আমাদের কমিটিতে একটি ছেলে বিবাহিত আছে। সেটা আমরা কমিটি পূর্ণাঙ্গ কমিটির সময়ে বাদ দিয়ে দেবো।’
অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘যে কোনো এলাকায় একটা কমিটি গঠন করা হলে সেটাকে বিতর্কিত করতে কিছু মানুষ উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বিভিন্ন প্রপাগান্ডা ছড়ায়। আমরাও তার বাইরে নই।’