গুলিস্তানে অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে পড়ে টাকা-পয়সাসহ কাপড়চোপড় খুইয়েছে এক কিশোর। তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ভর্তি করা হয়েছে।
চিকিৎসক ১৬ বছর বয়সী মো. বাতেন নামের ওই কিশোরের পাকস্থলী থেকে চেতনানাশক ওষুধ বের করার জন্য স্টমাক ওয়াশ করেন। পরে তাকে মেডিসিন বিভাগে স্থানান্তর করা হয়।
বুধবার রাতে গুলিস্তানের স্কয়ার মার্কেটের সামনে এ ঘটনা ঘটে। কর্মস্থল সাভারের একটি ভলক্যানাইজিং দোকান থেকে ছুটি পেয়ে পৈতৃক বাড়ি শরীয়তপুর যাওয়ার পথে বাসে অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে পড়ে ওই কিশোর।
পরে খবর পেয়ে পুলিশ অচেতন অবস্থায় উদ্ধারের পর তাকে ঢামেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ভর্তি করায়।
অসুস্থ কিশোরকে নিয়ে আসা বংশাল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘আমি প্যাট্রলে ছিলাম। তখন লোক মারফত খবর পেয়ে ফুলবাড়িয়া বাসস্ট্যান্ড থেকে তাকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যালে নিয়ে যাই। পরে চিকিৎসক স্টমাক ওয়াশ করে মেডিসিন ওয়ার্ডে ভর্তি করে দেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘অসুস্থ কিশোরের সম্পূর্ণ পরিচয় পাওয়া যায়নি। শুধু বলে, তার বাড়ি শরীয়তপুর। তার মানিব্যাগে ৩,০০০ টাকা ছিল। সেগুলো প্রতারকচক্র নিয়ে গেছে।’
রাতে মেডিসিন ওয়ার্ডে ওই কিশোরের খোঁজ নিলে চিকিৎসক বলেন, ‘তার শরীরে স্যালাইন দেয়া হয়েছিল। এখন তার মোটামুটি জ্ঞান ফিরেছে।’
প্রতারণার শিকার কিভাবে হয়েছে সে বিষয়ে তাকে জিজ্ঞাসা করলে কিশোর বলে, ‘আমি চার মাস আগে সাভারের হেমায়েতপুরে একটি ভলক্যানাইজিংয়ের দোকানে কাজ নিই। চার মাসের মধ্যে কোনো ছুটি না নেওয়ায় মালিক আবু বক্কর সিদ্দীক আমাকে এক সপ্তাহের ছুটি দেন। রাতে তিন হাজার টাকা দেন আমাকে বাড়িতে যাওয়ার জন্য।
‘সকাল ৯টার দিকে সাভার হেমায়েতপুর বাসস্ট্যান্ডে দাঁড়িয়ে ছিলাম। হঠাৎ এক লোক জিজ্ঞাসা করেন কোথায় যাব। আমি বললাম বাড়িতে। এরপর আমাকে ভাতের হোটেলে নিয়ে যায়। সেখানে পরোটা ভাজি এবং চা খাওয়ায়। এরপর শরীয়তপুরের উদ্দেশে ঢাকামুখী একটি বাসে উঠি। তিনিও আমার সঙ্গে বাসে ওঠেন। তিনি আমাকে বলেন, ‘তোমার কাছে যা আছে সেগুলো এই ব্যাগের মধ্যে রাখ। তখন আমি মানিব্যাগে ৩০০০ টাকাসহ আরো কিছু খুচরা টাকা ছিল। ওই টাকা আমি আমার ব্যাগে রাখি। এর কিছুক্ষণ পর ওই লোকটা বলে বাবা তুমি এক বোতল পানি নিয়ে আসো। এরপর আমি এক বোতল পানি কিনে তাকে দিলাম। এরপর কি হয়েছে আর বলতে পারব না। পরে আমার জ্ঞান ফিরলে দেখি আমি হাসপাতালে। তারা আমার ব্যাগের কাপড়চোপড়সহ ৩০০০ টাকা নিয়ে গেছে।
অসুস্থ কিশোর আরও বলে, ‘আমাদের বাড়ি শরীয়তপুর জেলার গোসাইরহাট থানা এলাকায়। আমার বাবার নাম জলিল শিকদার।’