যাতে কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠী তাদের হীন স্বার্থে ধর্মকে ব্যবহার করে জনগণকে বিভ্রান্ত করতে না পারে সেদিকে সবাইকে সজাগ থাকার আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।
বলেছেন, ‘সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বাঙালির চিরকালীন ঐতিহ্য। এখানে মেজরিটি বা মাইনরিটির কোনো স্থান নেই।’
বুধবার সন্ধ্যায় শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে বঙ্গভবনে হিন্দু ধর্মাবলম্বী বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় ও সৌজন্য সাক্ষাতে এ কথা বলেন।
দেশের সামগ্রিক অগ্রযাত্রায় রাষ্ট্রপ্রধান সম্মিলিতভাবে এ ঐতিহ্যকে এগিয়ে নিতে সবাইকে একযোগে কাজ করারও তাগিদ দেন।
বাংলাদেশসহ বিশ্বের হিন্দু ধর্মাবলম্বী সবাইকে বিজয়ার শুভেচ্ছা জানিয়ে আবদুল হামিদ বলেন, ‘দুর্গাপূজায় আমরা অবশ্যই আনন্দ উৎসব করব, কিন্তু মনে রাখতে হবে যে আমাদের প্রতিবেশী, বন্ধুবান্ধব ও আত্মীয়স্বজন তারাও যেন এই আনন্দ থেকে বঞ্চিত না হয়।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের সজাগ থাকতে হবে, যাতে কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠী তাদের হীন স্বার্থে ধর্মকে ব্যবহার করে জনগণকে বিভ্রান্ত করতে না পারে।’
রাষ্ট্রপতি গত ২৫ সেপ্টেম্বর পঞ্চগড় জেলার করতোয়া নদীতে নৌকাডুবিতে ৭০ জন পুণ্যার্থীর অকাল প্রয়াণে দুঃখ ভারাক্রান্ত হৃদয়ে গভীর শোক প্রকাশ করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতিও গভীর সমবেদনা জানান। রাষ্ট্রপতি আহতদের আশু আরোগ্য কামনা করেন।
সারা বিশ্বে বিরাজমান করোনার ছোবল ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বিশ্বব্যাপী অস্থিরতা ও সংঘাতময় পরিস্থিতির জন্ম দিয়েছে উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি হামিদ বলেন, ‘বিশ্ববাসী চরম অনিশ্চয়তার মধ্য দিয়ে দিনাতিপাত করছে। বিশ্ব অর্থনীতিতে প্রতিনিয়ত মন্দার ধাক্কা লাগছে।’
তিনি বিশ্বাস করেন 'এ অবস্থা থেকে উত্তরণে পরমতসহিষ্ণুতা, পারস্পরিক আস্থা ও বিশ্বাস আর সহযোগিতার কোনো বিকল্প নেই।’
গতকাল অনাকাঙ্ক্ষিত বিদ্যুৎবিভ্রাটের প্রসঙ্গ টেনে রাষ্ট্রপতি বলেন, এ জন্য কিছুটা বিঘ্ন ঘটেছে।
তবে তিনি আশা প্রকাশ করেন, সামনের দিনগুলোতে ধর্মীয় সব উৎসব আরও সুন্দর ও জাঁকজমকপূর্ণভাবে পালিত হবে এবং ধর্ম-বর্ণ-নির্বিশেষে সবার মধ্যে সম্প্রীতি ও সৌহার্দের বন্ধন আরও সুসংহত হবে।
অনুষ্ঠানে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান, ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান মনোরঞ্জন শীল গোপাল, হিন্দুধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ট্রাস্টি অধ্যাপক ডা. প্রাণ গোপাল দত্ত, হিন্দুধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ভাইস চেয়ারম্যান সুব্রত পাল, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি জে এল ভৌমিক, রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের অধ্যক্ষ স্বামী হরিপ্রেমানন্দ মহারাজ, ঢাকা মহানগর সর্বজনীন পূজা কমিটির সভাপতি মনিন্দ্র কুমার নাথ অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন।