শারদীয় দুর্গোৎসব চলছে দেশজুড়ে। তবে সেই উৎসবের লেশমাত্র নেই দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার টংগুয়া কুমারপাড়ায়। প্রতি বছর এলাকার মন্দিরে ধুমধাম করে হয় দেবী আরাধনা। এবার সেই মন্দির নিস্তব্ধ। মন্দিরের সামনে ঝুলছে কালো পতাকা।
এলাকার এক হিন্দু গৃহবধূ দুই মাস আগে ধর্ষণ ও হত্যার শিকার হন। সে ঘটনায় জড়িতদের এত দিনেও চিহ্নিত করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী। এর প্রতিবাদে এবার দুর্গা পূজা করছেন না এলাকার হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা।
পূজা বর্জনের পাশাপাশি তারা মন্দিরের সামনে টানিয়েছেন শোক প্রতীক কালো পতাকা।
উপজেলার ২ নম্বর ভেড়ভেড়ী ইউনিয়নের টংগুয়া কুমারপাড়ায় বাবার বাড়ি থেকে স্বামীর বাড়িতে যাওয়ার পথে গত ২৯ জুলাই ওই গৃহবধূকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়। তার সঙ্গে থাকা ১০ বছরের মেয়েকেও নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে।
এ ঘটনায় গৃহবধূর স্বামী থানায় মামলা করেন। পরে সেটি তদন্তের দায়িত্ব পায় পুলিশ ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। তবে ঘটনার দুই মাস পরেও জড়িতদের চিহ্নিত করা যায়নি।
এলাকার বাসিন্দা অনন্ত কুমার রায় নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ধর্ষণ-হত্যার বিচার না পাওয়ায় আমরা শারদীয় দুর্গাপূজা বর্জন করে কালো পতাকা উত্তোলন করে শোক পালন করছি। যতদিন ন্যায়বিচার পাব না, ততদিন আমরা এই মণ্ডপে কোনো ধর্মীয় উৎসব করব না। আমরা শোককে শক্তি রূপে নিতে চাই।’
ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের দাবিতে বেশ কয়েকবার মানববন্ধন, প্রতিবাদ সভা ও স্মারকলিপি দিয়েছে নিহতের পরিবার, এলাকাবাসী ও বিভিন্ন সংগঠন।
নিহতের কাকা জীতেন্দ্র নাথ রায় নিউজবাংলাকে বলেন, ‘দুই মাসেও ধর্ষণ ও হত্যার আসামি ধরা না পড়ায় আমরা হতাশ। স্বাধীন দেশেও যদি সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচার হয় তাহলে আমরা যাব কোথায়?’
খানসামা উপজেলা পূজা উদ্যাপন পরিষদের সভাপতি ধীমান দাস বলেন, ‘তারা (এলাকাবাসী) তাদের মেয়ে হত্যার প্রতিবাদ করবে এটা স্বাভাবিক। তারা বিভিন্ন পর্যায়ে এ বিষয়ে অবহিত করার পরেও কোনো সুরাহা না পাওয়ায় তারা এমন প্রতিবাদ করেছে। তাদের বিভিন্ন কর্মসূচিতে আমি সংহতি প্রকাশ করেছি।’
এ ব্যাপারে দিনাজপুর পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার মো. মকবুল হোসেন নিউবাংলাকে বলেন, ‘মামলাটি কয়েক দিন আগে আমাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। মামলায় কারও নাম দেয়া হয়নি, অজ্ঞাতদের আসামি করা হয়েছে। আমাদের তদন্ত চলছে।’