নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকার না হলে ভোট বর্জনে বিএনপি ও সমমনাদের ঘোষণার মধ্যে সবার অংশগ্রহণে জাতীয় নির্বাচনের ওপর জোর দিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল।
নির্বাচন কমিশনে মঙ্গলবার ইলেকশন মনিটরিং ফোরাম (ইএমএফ) এর চেয়ারম্যান অধ্যাপক মোহাম্মদ আবেদ আলীসহ পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধি দলের বৈঠকের পর তিনি এ কথা বলেন।
সিইসি বলেন, ‘আমরা যেটা চাচ্ছি ইভিএম বা ব্যালট মূল কথা নয়। মূল কথা হলো সবাইকে চেষ্টা করতে হবে একটা সুন্দর, সুষ্ঠু অবাধ, নির্বিঘ্ন ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন। আমরা সব সময় বলছি আপনারা নির্বাচনে আসুন, অংশগ্রহণ করুন। অংশগ্রহণ করে নির্বাচন তাকে ফলপ্রসূ করুন। যাতে নির্বাচনটা সুন্দর হয়, জনমানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য হয়।’
২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় ফেরার দুই বছর পর উচ্চ আদালতের এক রায়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে অবৈধ ঘোষণা করা হয়। এরপর সরকার নির্বাচিত সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচনের পদ্ধতি ফেরায়।
এর প্রতিবাদে ২০১৪ সালের দশম সংসদ নির্বাচন বর্জন করে আন্দোলনে যায় বিএনপি এবং তার শরিকরা। তবে ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে তারা ভোটে আসে। সেই নির্বাচনে আগের রাতেই ভোট হয়ে যাওয়ার অভিযোগ তুলে বিএনপি আবার নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকারের দাবিতে ফিরে গেছে।
দাবি আদায় ধারাবাহিক নানা কর্মসূচি দিয়ে রাজপথে সক্রিয় হওয়ার পাশাপাশি তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া ভোট হতে না দেয়ার ঘোষণাও দিয়েছে বিএনপি। ফলে ২০১৩-১৪ সালের মতো রাজনৈতিক সংঘাতের আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এর মধ্যে নির্বাচন কমিশন থেকে একাধিকবার বলা হয়েছে, ভোট কারা এলো বা না এলো সেটি তাদের দেখার কথা নয়। তাদের দায়িত্ব ভোটের আয়োজন করা, সেটি তারা করবে।
আবার আগামী নির্বাচনে বিএনপি ও সমমনাদের আপত্তির মুখে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন বা ইভিএম ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তিন শ আসনের মধ্যে সর্বোচ্চ অর্ধেক আসনে ব্যালটে আর অর্ধেক আসনে ইভিএমে ভোট নেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
সিইসি বলেন, ইভিএম নিয়ে আমাদের সিদ্ধান্ত হয়েছে- সর্বোচ্চ ১৫০টি আসনে। কিন্তু এখনো পর্যন্ত কোন নিশ্চয়তা নেই। কারণ এটা ডিপেন্ড করবে যদি সরকার এ প্রকল্প অনুমোদন করে।’
নতুন ইভিএম কিনতে প্রায় সাড়ে নয় কেনার নতুন প্রকল্প গ্রহণ করে সরকারকে পাঠিয়েছে নির্বাচন কমিশনার। তাহলে সেই প্রকল্প অনুমোদন কি নিশ্চিত নয়?- এমন প্রশ্নে সিইসি বলেন, ‘এখন পর্যন্ত কোনো নিশ্চয়তা নেই। এর আর্থিক সংশ্লিষ্টতা যেটা আছে, সেটা যদি সরকারের দৃষ্টিভঙ্গীতে যথার্থ মনে না হয়, তাহলে অ্যালাউ নাও করতে পারে।’
বৈঠকে কী নিয়ে আলোচনা হয়েছে-জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ইভিএম নিয়ে জনমনে যেসব পারসেপশন আছে, সে সম্পর্কে কিছু জানতে চেয়েছেন তারা। নেগেটিভ যে পারসেপশন বিরাজ করছে, সেটাকে দূরীভূত করার জন্য তারা সচেষ্ট আছেন।
‘সংক্ষিপ্ত একটি মতবিনিময় ছিল। যারা এসেছিল তারা বিশিষ্ট ব্যক্তি। আমাদের সঙ্গে সৌহার্দ্যমূলক আলোচনা হয়েছে।’