জেলা শহরগুলোতে বিদ্যুৎ তুলনামূলক দ্রুত ফিরলেও রাজধানীর সব এলাকায় কিছুটা দেরি হচ্ছে। লোড বেশি হওয়াই এর কারণ বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।
সন্ধ্যা সাতটার দিকে রাজধানীর কিছু কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ ফিরতে শুরু করলেও রাত আটটার দিকে এখনও দেশের প্রধান শহরটির একটি বড় অংশ অন্ধকারে ডুবে।
রাত সাতটার দিকে নসরুল হামিদ বিদ্যুৎ পরিস্থিতির আপডেট তথ্য জানিয়ে ফেসবুকে লেখেন, ‘ইতিমধ্যে টাঙ্গাইল, কিশোরগঞ্জ, ময়মনসিংহ, জামালপুর, মানিকগঞ্জে বিদ্যুৎ সরবরাহ সচল হয়েছে এবং ঢাকা, গাজীপুর, চট্টগ্রাম, সিলেট, নারায়ণগঞ্জ ও সিদ্ধিরগঞ্জের আংশিক এলাকায় সরবরাহ চালু হয়েছে।
‘ঢাকায় লোড বেশি হবার কারণে সব লাইন সচল করতে কিছুটা দেরি হতে পারে।’
মঙ্গলবার দুপুর দুইটার দিকে ইস্টার্ন গ্রিড ফেল করার পর ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট ও ময়মনসিংহ বিভাগ বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়ে।
দেশের একটি বড় অংশ বিদ্যুৎহীন হয়ে যাওয়ার পর সন্ধ্যায় মোমবাতির চাহিদা উঠে তুঙ্গে। স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি চাহিদার এই সময়ে বিক্রেতারা ১০ টাকার মোম ২০ টাকাও চাইতে শুরু করে। বিদ্যুতের অভাবে রাতে এটিএম বুথে টাকা উঠাও বন্ধ হয়ে যায়।
এই ধরনের বিপর্যয় হলে সবগুলো বিদ্যুৎকেন্দ্র স্বয়ংক্রিয়ভাবে বন্ধ হয়ে যায়। এরপর ম্যানুয়ালি আবার চালু করতে হয়। এই চালু করতেও লাগে বিদ্যুৎ আর সেটি যোগাড় করতে হয় প্রথমে।
বিদ্যুৎ বিভাগ বা সরকারের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য আসেনি বেশ কয়েক ঘণ্টা। যা কিছু তথ্য পাওয়া যায় ঢাকার বাইরের কর্মকর্তাদের কাছ থেকে।
বরং অন্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক তার ফেসবুকে বিষয়টি নিয়ে লেখালেখি করতে থাকেন। হালনাগাদ তথ্যও তিনিই দিচ্ছেন।
চট্টগ্রাম শহরের একটি বড় অংশে বিদ্যুৎ ফিরেছে
তথ্য ও যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী পলক প্রথমে বিকেল পাঁচটার দিকে জানান, রাজধানী ঢাকায় সন্ধ্যা থেকে বিদ্যুৎ সংযোগ পুনরায় চালু হওয়া শুরু করবে আর রাত আটটায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে। চট্টগ্রামে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে সময় লাগবে আরও এক ঘণ্টা।
বিপর্যয়ের প্রায় চার ঘণ্টা পর বিকেল পৌনে ৬টার দিকে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ তার ফেসবুকে বিষয়টি নিয়ে লেখেন।
তিনি উল্লেখ করেন, ‘জাতীয় গ্রিড ট্রিপ করার কারণে ঢাকা, চট্টগ্রামসহ পূর্বাঞ্চলের বড় একটি এলাকায় আজ দুপুর ২টা ৪মিনিট থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহে বিঘ্ন ঘটে। আকস্মিক এই সমস্যা সমাধানে বিদ্যুৎ বিভাগের প্রকৌশলীবৃন্দ নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। ইতোমধ্যে কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ সচল হয়েছে। আশা করি দ্রুততম সময়ের মধ্যে সকল এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হবে।’
বিদ্যুৎ ফেরার এই ছবিটি ফেনী শহরের
প্রতিমন্ত্রী পলক আবার বিকেল ৫টা ৪৪ মিনিটে জানান, অগ্রগতি কতটা হলো।
‘পাওয়ার গ্রিড রেস্টোরেশন আপডেট’ শিরোনামে তিনি লেখেন, ‘ঢাকা ও আশেপাশের অঞ্চলে বিদ্যুৎ রিস্টোর হতে শুরু করেছে। কিছুক্ষণ আগেই সিদ্ধিরগঞ্জ ও ঘোড়াশালের কিছু এলাকায় এবং ঢাকার বঙ্গভবনে বিদ্যুৎ রিস্টোর হয়েছে।’
সাতটার পর হবিগঞ্জে পরিস্থিতি প্রায় স্বাভাবিক হয়ে আসে, চাঁদপুরও আলোতে উজ্জ্বল হয়ে উঠে। নেত্রকোণাতেও জ্বলে উঠে বিজলি বাতি। ফেনীতেও বিদ্যুৎ আসতে শুরু করে। বিভাগীয় শহর চট্টগ্রাম ও সিলেটেও বিদ্যুৎ আসতে শুরু করে রাত সাড়ে সাতটার দিকে।
আলোয় উজ্জ্বল চাঁদপুর রেল স্টেশন শহরবাসীর মনে স্বস্তি দিয়েছে
তবে ঢাকার একটি বড় অংশ তথনও অন্ধকারে। মিরপুরে বিদ্যুৎ আসে সন্ধার পর পর, সন্ধ্যা সাড়ে সাতটির দিকে আসে আদাবরে। উত্তরায় বিদ্যুৎ আসে পৌনে আটটার দিকে। বাড্ডা এলাকাতেও বিদ্যুৎ আসে আটটার আগে।