বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

সাগরে ট্রলারডুবিতে ৩ রোহিঙ্গার মরদেহ উদ্ধার, নিখোঁজ ২৯

  •    
  • ৪ অক্টোবর, ২০২২ ১৮:২২

পুলিশ ও কোস্ট গার্ড জানিয়েছে, তারা মূলত ট্রলারে করে অবৈধ পথে মালয়েশিয়া পাড়ি জমাচ্ছিল। সোমবার রাতে দালাল চক্রটি রোহিঙ্গাদের বাহারছড়া ইউনিয়নের হলবনিয়া গ্রামের বাইন্যাঘেনা এলাকায় একটি বাড়িতে নিয়ে রাখে। ভোরের দিকে তারা ছোট ট্রলারে করে হলবনিয়া সৈকত থেকে গভীর সাগরে অপেক্ষায় থাকা বড় ট্রলারের উদ্দেশে রওয়ানা হয়। কিছুদূর যাওয়ার পর সমুদ্রের ঢেউয়ের তোড়ে ট্রলারটি ডুবে যায়।

দালালের মাধ্যমে বঙ্গোপসাগর পাড়ি দিয়ে অবৈধভাবে মালয়েশিয়া যাওয়ার সময় অন্তত ৮০ যাত্রী নিয়ে ট্রলারডুবির ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ ও কোস্ট গার্ড ৩ জনের মরদেহ উদ্ধার করেছে। ৪৮ জন নানাভাবে পাড়ে উঠলেও নিখোঁজ রয়েছেন কমপক্ষে ২৯ জন।

সাগর উত্তাল থাকায় ট্রলারটি দুলছিল। কয়েক কিলোমিটার গিয়ে ঢেউয়ের ধাক্কায় ট্রলারটি ডুবে যায়। কয়েকজন রোহিঙ্গা প্লাস্টিকের গ্যালন, কাঠের তক্তায় ভেসে ও সাঁতরে উপকূলে ওঠে।

সাঁতরে তীরে ফেরা আনোয়ার খালেক মঙ্গলবার সকালে ট্রলারডুবির এমন বর্ণনা দিয়েছেন। তিনি হাকিমপাড়া ক্যাম্পের বাসিন্দা।

তিনি জানান, গভীর সমুদ্রে অপেক্ষমাণ বড় জাহাজে তোলার কথা বলে তিনদিন আগে দালালচক্র শতাধিক রোহিঙ্গা নারী-পুরুষকে উখিয়ার কুতুপালং, লম্বাশিয়া, বালুখালী, মধুরছড়া ক্যাম্প থেকে গাড়িতে তুলে নিয়ে যায় টেকনাফের বাহারছড়ায়।

সোমবার মধ্যরাতে বাহারছড়া সৈকতের বাইন্যাপাড়া ও হলবনিয়া এলাকার ৮০ জনকে একটি ট্রলারে ওঠানো হয়। অবৈধভাবে মালয়েশিয়া যাওয়ার পথে কক্সবাজারের টেকনাফে বঙ্গোপসাগর উপকূলে ভোরে ট্রলারটি ডুবে যায়। মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত তিন রোহিঙ্গা নারীর মরদেহ উদ্ধার করেছে কোস্ট গার্ড ও পুলিশ। তারা ৪ বাংলাদেশিসহ ৪৮ রোহিঙ্গাকে উদ্ধার করেছে।

খালেকের মতো কুতুপালং ক্যাম্প থেকে গিয়েছিলেন মোহাম্মদ শরীফ। তিনি জানান, দালালের মাধ্যমে তারা মালয়েশিয়া যাওয়ার জন্য রওনা দেন ৷ ছোট ছোট ট্রলারে করে নিয়ে বড় ট্রলারে তোলা হয়। এক পর্যায়ে পানি ঢুকে ট্রলারটি ডুবে যায়৷ সেখানে প্রায় ৮০ জন ছিল।

ক্যাম্প ২০ এর জমিলা বেগম জানান, স্বামী মালয়েশিয়ায় থাকেন। সেখানে যাচ্ছেন। দালালদের দুই দফায় ৮০ হাজার টাকা দিয়েছেন। তিনদিন আগে বাইন্যাপাড়া পাহাড়ে রাখা হয়। সেখান থেকে সোমবার মধ্যরাতে ট্রলারে তোলা হয়। কিছুদূর গিয়ে ট্রলারে পানি ঢুকেছে বলে দালালরা অন্যবোটে করে পালিয়ে যায়।

বাহারছড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আমজাদ হোসেন খোকন জানান, মালয়েশিয়া যাওয়ার সময় ট্রলার ডুবে গেছে। এখন পর্যন্ত ৪ বাংলাদেশিসহ ৪৮ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশ ও কোস্ট গার্ড উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছে।

এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন টেকনাফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাফিজুর রহমান। তিনি জানান, মরদেহ আরও বাড়তে পারে।

তিনি বলেন, ‘উদ্ধার হওয়া তিন মরদেহ রোহিঙ্গা নারীর। আর জীবিত উদ্ধার হওয়া রোহিঙ্গারা উখিয়ার বালুখালী, কুতুপালং ও হাকিম পাড়াসহ বিভিন্ন ক্যাম্পে থাকেন। বাংলাদেশি চার দালালের মধ্যে মহেশখালীর দুইজন, টেকনাফের সাবরাং ও ঈদগাঁওয়ের একজন করে।’

পুলিশ ও কোস্ট গার্ড জানিয়েছে, তারা মূলত ট্রলারে করে অবৈধ পথে মালয়েশিয়া পাড়ি জমাচ্ছিল। সোমবার রাতে দালালচক্রটি রোহিঙ্গাদের বাহারছড়া ইউনিয়নের হলবনিয়া গ্রামের বাইন্যাঘেনা এলাকায় একটি বাড়িতে নিয়ে রাখে। ভোরের দিকে তারা ছোট ট্রলারে করে হলবনিয়া সৈকত থেকে গভীর সাগরে অপেক্ষায় থাকা বড় ট্রলারের উদ্দেশে রওয়ানা হয়। কিছুদূর যাওয়ার পর সমুদ্রের ঢেউয়ের তোড়ে ট্রলারটি ডুবে যায়।

ওসি হাফিজুর রহমান বলেন, ‘তারা বিভিন্ন ক্যাম্প থেকে পালিয়ে মালয়েশিয়া যাওয়ার চেষ্টা করছিল। খবর পেয়ে বাহারছড়া কোস্ট গার্ডের একটি টহল টিম উদ্ধার অভিযান শুরু করে। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত সাঁতরে ও ভেসে কূলে আসা ৪৮ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে।

‘ওই ট্রলারে কতজন ছিল, নিশ্চিত হওয়া যায়নি। মানব পাচারের সঙ্গে কারা জড়িত তাদের বিষয়ে অভিযান শুরু করেছে পুলিশ।’

কোস্ট গার্ড টেকনাফের বাহারছড়া আউটপোস্ট স্টেশনের কন্টিনজেন্ট কমান্ডার মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘মঙ্গলবার সকালে টেকনাফের বাহারছড়া ইউনিয়নের হলবনিয়া পাড়া সাগর পয়েন্টে উপকূলে কিছু রোহিঙ্গাকে সাঁতরে আসতে দেখে কোস্ট গার্ডকে জানান জেলেরা। পরে কোস্ট গার্ড সদস্যরা তাদের উদ্ধার করেন।’

এ বিভাগের আরো খবর