গ্রিড বিপর্যয়ে দেশের একটি বড় অংশ বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়ার পর বিষয়টি নিয়ে মন্ত্রণালয় বা কোনো সংস্থা থেকে যখন আনুষ্ঠানিক বক্তব্য আসছে না, তখন একজন পোশাক শিল্প মালিক নিউজবাংলাকে জানিয়েছেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে আট থেকে ১০ ঘণ্টা লাগতে পারে বলে তাদেরকে জানানো হয়েছে।
মঙ্গলবার বেলা ২টার দিকে যমুনার পূর্ব অংশের গ্রিড লাইন ফেল করার পর ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট ও ময়মনসিংহ বিভাগের প্রায় পুরোটাই বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছে। জেলা বা বিভাগীয় পর্যায়ের কর্মকর্তারা গ্রিড লাইন বিপর্যয়ের বিষয়টি নিয়ে কথা বললেও বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড-পিডিবি বা বিদ্যুৎ বিতরণ সংস্থা পাওয়ার গ্রিড বা বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয় থেকে আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য দেয়া হয়নি।
সংস্থাটির যে কর্মকর্তারা গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন, তারা কেউ নাম প্রকাশ করতে চাননি। এই বিদ্যুৎহীনতা কখন কাটতে পারে, সে বিষয়েও কোনো বক্তব্য দিচ্ছেন না কেউ।
তবে পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর সহ-সভাপতি ও আরডিএম গ্রুপের চেয়ারম্যান রকিবুল আলম চৌধুরী নিউজবাংলাকে জানান, বিদ্যুৎ বিভাগের পক্ষ থেকে তাদেরকে একটি বার্তা দেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আমাদের জানানো হয়েছে যে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হতে ৮ থেকে ১০ ঘণ্টা লাগতে পারে।’
এই দীর্ঘ সময় বিদ্যুৎ না থাকলে পোশাক কারখানায় বিশেষ করে টেক্সটাইল ও ওয়াশিং সেক্টরে সমস্যা হতে পারে বলে জানান তিনি।
রফিকুল আলম বলেন, ‘তবে এখন অর্ডার কম থাকায় বিকেল ৫টা পর্যন্ত আমাদের কারখানা চলে। ৫টার পর এমনিতেই ছুটি শ্রমিকদের। আর আমাদের জেনারেটরও আছে৷ তাই খুব একটা সমস্যা হবে না। তবে টেক্সটাইল ও ওয়াশিং সেক্টরে সমস্যা হতে পারে। কারণ তাদের সার্বক্ষণিক কাজ।’
মঙ্গলবার দুপুরে ইস্টার্ন গ্রিড ফেল করার পর চার বিভাগ বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছে
বিদ্যুৎ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে সময় লাগতে পারে বলে জানিয়েছেন পিডিবি সিলেট অফিসের প্রধান প্রকৌশলী আব্দুল কাদির। তিনি বলেন, ‘জাতীয় সঞ্চালন লাইনে ত্রুটির কারণে দেশের চারটি বিভাগই বিদ্যুৎহীন। সব বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ। কখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে তা বলা যাচ্ছে না। তবে সময় লাগবে।’
২০১৪ সালের ১ নভেম্বর দেশে সবশেষ বিদ্যুৎ বিপর্যয় দেখা দিয়েছিল। সেদিন বেলা ১১টা ২৭ মিনিট ৪১ সেকেন্ডে সারাদেশ বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়ে। ১২ ঘণ্টা পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
পাওয়ার গ্রিডের এক কর্মকর্তা জানান, এতে বেশ কয়েক ঘণ্টা সময় লাগবে। কারণ, গ্রিড বিপর্যয় হলে সব বিদ্যুৎকেন্দ্র স্বয়ংক্রিয়ভাবে বন্ধ হয়ে যায়। তার প্রতিটি ম্যানুয়ালি চালু করতে হয়।
এটি আবার বেশ কষ্টসাধ্য এ কারণে যে, বন্ধ কেন্দ্র চালু করতেও বিদ্যুৎ লাগে। সে জন্য দেশে চালু আছে এমন কেন্দ্র থেকে বা চালু করতে বিদ্যুৎ লাগে না, এমন কেন্দ্র আগে উৎপাদনে নিয়ে আসতে হয়। তারপর সেখান থেকে বিদ্যুৎ নিয়ে অন্য কেন্দ্র চালু করতে হয়।
এভাবে প্রতিটি কেন্দ্রই আলাদা আলাদা চালু করার পর তার আওতাধীন এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু করতে হয়।