দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলার সাবেক নির্বাহী কর্মকর্তা ওয়াহিদা খানম ও তার বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা ওমর আলী শেখকে হত্যাচেষ্টা মামলার রায় আজ ঘোষণা করা হচ্ছে না।
দিনাজপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর রনজিৎ কুমার সরকার মঙ্গলবার সকাল ১০টায় এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আদালতের বিচারক বদলি হওয়ায় রায়টি ঘোষণা করা হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘ঘোড়াঘাটের চাঞ্চল্যকর এই মামলাটি আজ (মঙ্গলবার) অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ-৩ আদালতে রায় ঘোষণা হওয়ার তারিখ ঠিক ছিল। কিন্তু এই আদালতের বিচারক শ্যাম সুন্দর রায় অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ-২ আদালতে বদলি হয়েছেন। আর অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ-৩ আদালতে নতুন বিচারক হিসেবে বেগম সাদিয়া সুলতানা বসছেন। তিনি মামলাটির বিস্তারিত শোনার পর পরবর্তী রায় ঘোষণার তারিখ নির্ধারণ করবেন।’
মামলায় একমাত্র আসামি ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বাসভবনের বরখাস্তকৃত মালি রবিউল ইসলামের উপস্থিতিতে আদালতে বিচারকাজ পরিচালনা করা হচ্ছে। ছবি: নিউজবাংলা
এর আগে গত ২৬ সেপ্টেম্বর দিনাজপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ-৩ আদালতে মামলার যুক্তিতর্ক সম্পন্ন করা হয়। বিচারক ৪ অক্টোবর রায় ঘোষণার তারিখ নির্ধারণ করেছিলেন। মামলাটি প্রথম থেকে মোট ৬১ কার্যদিবস পরিচালনা করা হয়েছে।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, দিনাজপুরের অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে প্রথম থেকে মামলাটির কার্যক্রম পরিচালিত হয়েছে। কিন্তু মামলাটি শেষের দিকে দিনাজপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ-৩ আদালতে হস্তান্তর করা হয়। সেখানেই গত ২৬ সেপ্টেম্বর যুক্তিতর্ক শুনানি হয়।
মামলাটিতে সর্বমোট ৫৩ সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। মামলায় একমাত্র আসামি ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বাসভবনের বরখাস্তকৃত মালি রবিউল ইসলাম উচ্চতর আদালত থেকে জামিনে রয়েছেন। তবে তার উপস্থিতিতে আদালতে বিচারের সব কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ২ সেপ্টেম্বর রাত ২টার দিকে সরকারি ডাকবাংলাতে ঘোড়াঘাট ইউএনওর ওয়াহিদা খানম ও তার বাবা ওমর আলী শেখের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে।
৩ সেপ্টেম্বর সকাল ৮টায় তাদের উদ্ধার করে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে দুপুর ১টায় হেলিকপ্টার যোগে জাতীয় নিউরোসায়েন্স হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
সেদিন সন্ধ্যায় ইউএনও ওয়াহিদা খানমের ভাই শেখ ফরিদ বাদী হয়ে ঘোড়াঘাট থানায় একটি মামলা করেন। মামলার পর পুলিশ ও র্যাব সদস্যরা বেশ কয়েকজনকে আটক করে।
১১ সেপ্টেম্বর রাতে জেলার বিরল উপজেলার বিজোড়া ইউনিয়নের বিজোড়া গ্রামের বাসিন্দা ও ঘোড়াঘাটের ইউএনও বাসভবনের সাবেক কর্মচারী রবিউল ইসলামকে আটক করা হয়।
২০ সেপ্টেম্বর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলী আদালত-৭-এর বিচারক ইসমাইল হোসেনের কাছে নিজের দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন রবিউল ইসলাম।
২১ নভেম্বর দুপুরে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইমাম জাফর আদালতে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে রবিউলের বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা দেন।