বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

মরিয়মের ডিএনএ পরীক্ষা বাতিলের আবেদন গোপন রাখতে চায় পুলিশ

  •    
  • ৪ অক্টোবর, ২০২২ ১০:৪১

ফুলপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আব্দুল মোতালেব চৌধুরী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আবেদন বাতিল চেয়ে আদালতে প্রতিবেদন দেয়া ইন্টারনাল বিষয়। এগুলো গণমাধ্যমে জানাজানি করা যাবে না৷ এতে আমাদের তদন্ত কাজে সমস্যা হতে পারে।’

জীবিত অবস্থায় খুলনার আলোচিত তরুণী মরিয়ম মান্নানের মা রহিমা খাতুন উদ্ধার হওয়ায় মেয়ের ডিএনএ টেস্টের আবেদন বাতিল চেয়ে আদালতে আবেদন করা যায় না, এমনটি জানিয়েছে পুলিশ। জীবিত উদ্ধারসংক্রান্ত প্রয়োজনীয় কাগজপত্র পুলিশের হাতে আসার পর আদালতে ডিএনএ পরীক্ষা বাতিলের আবেদন করা যাবে। তবে রহিমা খাতুনকে উদ্ধারের পর ১০ দিন পার হলেও আদালতকে বিষয়টি জানানো হয়নি।

গত ২৩ সেপ্টেম্বর শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মা রহিমা খাতুনের মরদেহ সন্ধানে ময়মনসিংহের ফুলপুর থানায় যান মরিয়ম মান্নান। এ সময় ছবিতে শরীর, কপাল, হাত ও থানায় সংগ্রহে থাকা সালোয়ার-কামিজ দেখে দাবি করা হয় ওই মরদেহটিই তার মায়ের। এ অবস্থায় ডিএনএ টেস্টের পরামর্শ দেয় পুলিশ। এদিন মরিয়ম মান্নান ওই থানায় ডিএনএ টেস্টের আবেদন করে চলে যান।

পরদিন শনিবার সকালে আবেদনটি মঞ্জুর করতে আদালতে জমা দেয় পুলিশ। কিন্তু ওই দিন রাত সাড়ে ১০টার দিকে ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার সৈয়দপুর গ্রামের একটি ঘর থেকে জীবিত অবস্থায় রহিমাকে উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় আলোড়িত হয়ে ওঠে গোটা দেশ। তবুও উদ্ধারের বিষয়টি পরদিন বিকেল ৪টা পর্যন্ত আদালতকে জানায়নি ফুলপুর থানা পুলিশ।

ফলে ২৫ সেপ্টেম্বর পুলিশের জমা দেয়া আবেদনটি মঞ্জুর করেন বিচারক। রোববার দুপুরে ফুলপুরের ৬ নম্বর আমলি আদালতের বিচারক এ কে এম রওশন জাহান এ নির্দেশ দেন।

সে সময় পুলিশ নিউজবাংলাকে জানিয়েছিল, যেহেতু জীবিত অবস্থায় রহিমা উদ্ধার হয়েছে, সেহেতু মেয়ে মরিয়ম মান্নানের ডিএনএ টেস্টের প্রয়োজন নেই। ফলে দ্রুত ওই আবেদন আদালতে জমা দিয়ে বাতিল করা হবে। কিন্তু ওই নারী উদ্ধারের ১০ দিন পার হলেও আদালতকে উদ্ধারের বিষয়টি জানানো হয়নি।

সোমবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে নিউজবাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন আদালত পরিদর্শক মো. জসিম উদ্দিন।

তিনি বলেন, ‘রহিমাকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধারের ঘটনাটি স্পষ্ট হয়েছে। এ জন্য তার মেয়ের ডিএনএ টেস্টের আর প্রয়োজন নেই। ডিএনএ টেস্ট বাতিল করতে আবেদনটি এখনো আদালতে জমা না দেয়ার কারণ ফুলপুর থানা পুলিশ ভালো বলতে পারবে।’

জানতে চাইলে ফুলপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আব্দুল মোতালেব চৌধুরী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আবেদন বাতিল চেয়ে আদালতে প্রতিবেদন দেয়া ইন্টারনাল বিষয়। এগুলো গণমাধ্যমে জানাজানি করা যাবে না৷ এতে আমাদের তদন্তকাজে সমস্যা হতে পারে।’

বিষয়টি ইন্টারনাল হওয়ার কারণ কী? এমন প্রশ্নের জবাবে পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, রহিমা খাতুনকে উদ্ধারের বিষয়টি আপনারা (গণমাধ্যম ব্যক্তিরা) যতটুকু জানেন, আমিও ততটুকুই জানি৷ কিন্তু ওই নারী জীবিত অবস্থায় উদ্ধার হয়েছে জানতে পেরেই ডিএনএ টেস্টের আবেদন বাতিল চেয়ে আদালতে প্রতিবেদন দিতে পারি না৷ খুলনার দৌলতপুর থানা থেকে ইয়েস (উদ্ধারের লিখিত কাগজ) পাঠাতে হবে। নয়তো জীবিত উদ্ধারের ডকুমেন্টস আমাদের এনে আদালতে জমা দিতে হবে। এগুলো গণমাধ্যমে এখন না জানিয়ে গোপন রাখাটাই ভালো মনে করি। জমা দেয়ার পর জানানো হবে।

এর আগে ২৭ আগস্ট রাতে খুলনা শহরের মহেষ্যপাশা গ্রাম থেকে নিখোঁজ হন রহিমা বেগম নামের এক নারী। নিখোঁজের পর থেকেই মায়ের সন্ধান চেয়ে আন্দোলনে নামেন মেয়ে মরিয়ম মান্নান ও তার বোনেরা। ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে।

গত ১০ সেপ্টেম্বর ফুলপুর উপজেলার বওলা পূর্বপাড়া গ্রাম থেকে বস্তাবন্দি এক অজ্ঞাত নারীর মরদেহ উদ্ধার করে ফুলপুর থানা পুলিশ। সেই মরদেহটি নিজের মায়ের বলে দাবি করেছেন নিখোঁজের মেয়ে মরিয়ম মান্নান।

গত ২৩ সেপ্টেম্বর সকালে থানায় এসে ওই মরদেহের ছবি দেখে মরিয়ম মান্নান শতভাগ নিশ্চিত হয়ে বলেছিলেন শরীর, কপাল, হাত ও সালোয়ার-কামিজ তার নিখোঁজ মায়ের। তিনি তার মাকে চিনতে ভুল করেননি। এমন অবস্থায় ডিএনএ টেস্টের পরামর্শ দেয়া হলে তিনি আবেদন করেন। পরে আবেদনটি অনুমতির জন্য জেলার মুখ্য বিচারিক হাকিম কে এম রওশন জাহানের আদালতে তোলা হয়। কিন্তু বিচারক অনুমতি দেয়ার আগেই অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করা হয় রহিমা বেগমকে।’

প্রায় এক মাস ধরে খুলনার দৌলতপুরের মহেশ্বরপাশা থেকে মা নিখোঁজের অভিযোগ করে মরিয়ম মান্নানের পোস্টগুলো ফেসবুকে ভাইরাল হয়।

গত ২৪ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ১০টার দিকে ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার সৈয়দপুর গ্রামের একটি ঘর থেকে অক্ষত অবস্থায় রহিমাকে উদ্ধার করে পুলিশ।

এ বিভাগের আরো খবর