সরকার পতনের এক দফা আন্দোলনে নামার আগে ঢাকা মহানগরকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে সাজানোর আহ্বান জানিয়েছেন তৃণমূলের নেতারা। তারা বলেছেন, চূড়ান্ত আন্দোলন শুরুর আগে গুরুত্বপূর্ণ এই ইউনিটকে সর্বোচ্চ শক্তিশালী করতে হবে।
গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সোমবার রাজশাহী, রংপুর ও কুমিল্লা বিভাগের জেলা ও মহানগর নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন বিএনপি হাইকমান্ড।
বৈঠকে তৃণমূলের নেতারা বলেন, ঢাকা মহানগরের ব্যর্থতার জন্যই আগের দুটি আন্দোলনে সফল হওয়া যায়নি। সারাদেশে আন্দোলনকে সাফল্যের পর্যায়ে নিয়ে যেতে ঢাকা মহানগরকেই দায়িত্ব নিতে হবে। তবে আশার কথা হলো, আগের মহানগর কমিটির চেয়ে এবারের কমিটি অনেক বেশি তৎপর।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে বৈঠকে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ছাড়াও স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন। জেলা ও মহানগর পর্যায়ে সভাপতি/আহ্বায়ক, সাধারণ সম্পাদক/সদস্য সচিবরা বৈঠকে অংশ নেন।
সোমবার গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে রাজশাহী, রংপুর ও কুমিল্লা বিভাগের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা। ছবি: নিউজবাংলা
জেলা ও মহানগর নেতারা বলেন, আন্দোলন কিংবা কর্মসূচিতে বিএনপির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনকে সমন্বয়ের উদ্যোগ নিতে হবে। অনেক ক্ষেত্রেই বিএনপির নেতাদের সঙ্গে ওইসব অঙ্গ সংগঠনের নেতাদের দূরত্ব রয়েছে। তারা দলের চেইন অফ কমান্ড মানতে চান না। এতে করে কর্মসূচি বাস্তবায়নে বেগ পেতে হয়।
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি ও সারাদেশে নেতাকর্মীদের হত্যা-নির্যাতনের প্রতিবাদে ঘোষিত বিভাগীয় গণসমাবেশ সফল করতে এবং দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে রাজনৈতিক পর্যালোচনা, আন্দোলনের কর্মসূচি চূড়ান্ত করতে জেলা ও মহানগর নেতাদের মতামত নিতে এই ধারাবাহিক বৈঠক করছে বিএনপি।
একই ইস্যুতে মঙ্গলবার বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে ঢাকা, বরিশাল ও ফরিদপুর বিভাগীয় নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন কেন্দ্রীয় নেতারা।
বিএনপি এর আগে বুধবার ১০টি সাংগঠনিক বিভাগে সমাবেশের ঘোষণা দেয়। সে অনুযায়ী ১২ অক্টোবর থেকে ধারাবাহিকভাবে এই সমাবেশ শুরু হবে। শুরুর দিন চট্টগ্রাম, ১৫ অক্টোবর ময়মনসিংহ, ২২ অক্টোবর খুলনা, ২৯ অক্টোবর রংপুর, ৫ নভেম্বর বরিশাল, ১২ নভেম্বর ফরিদপুর, ১৯ নভেম্বর সিলেট, ২৬ নভেম্বর কুমিল্লা, ৩ ডিসেম্বর রাজশাহী এবং সবশেষে ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় হবে সমাবেশ।
এসব সমাবেশসহ সব কর্মসূচি সর্বাত্মক সফল করতে দ্বিধা-দ্বন্দ্ব ভুলে ঐক্যবদ্ধভাবে আগামী দিনের আন্দোলন সফল করার নির্দেশ দেন দলটির শীর্ষ নেতা।
সভায় সাংগঠনিক বিভাগে ঘোষিত সমাবেশে সর্বোচ্চসংখ্যক নেতাকর্মীর উপস্থিতি চায় বিএনপি হাইকমান্ড। এজন্য নানা দিকনির্দেশনা দেন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। একইসঙ্গে জেলা ও মহানগরে দলের অভ্যন্তরে কোনো কোন্দল থাকলে তা সমাধানের ওপর জোর দেয় হাইকমান্ড। সমাবেশে সব পর্যায়ের নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধভাবে অংশ নেয়ার বিষয়ে যা যা করার দরকার, তা করতে নেতাদের নির্দেশনা দেয়া হয়।
বৈঠকে অংশ নেয়া বিএনপির একাধিক নেতা বলেন, ‘জ্বালানিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বৃদ্ধির মতো ইস্যুতে আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করায় সাধারণ মানুষের ব্যাপক সাড়া মিলছে। একইসঙ্গে সারাদেশে কমিটি পুনর্গঠন প্রক্রিয়া এবং কেন্দ্রের কড়া নজরদারিতে কর্মসূচিতে নেতাকর্মীর উপস্থিতিও অনেক বেড়েছে। এটা অব্যাহত রাখতে হবে এবং জনসম্পৃক্ত ইস্যুতে আরও কর্মসূচি দিতে হবে।