শরীয়তপুরে কাজের মেজারমেন্ট বুক (এমবি) দিতে দেরি করায় ভেদরগঞ্জ জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপজেলা প্রকৌশলী সমেশ আলীকে মারপিটের অভিযোগ উঠেছে চার ঠিকাদারদের বিরুদ্ধে। পরে অভিযুক্ত চার ঠিকাদারকেই আটক করেছে পুলিশ।
রোববার বিকেল ৫টার দিকে উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর অফিস কক্ষে এ মারধরের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় আটক ঠিকাদাররা হলেন আলমগীর মাদবর, চুন্নু ব্যাপারী, এস এম আমগীর হোসেন রিপন ও শফিকুল ইসলাম কোতোয়াল।
সন্ধ্যায় নিউজবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ভেদরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল মামুন।
ইউএনও জানান, রোববার বিকেলে অভিযুক্ত চার ঠিকাদার উপজেলা প্রকৌশলী সমেশ আলীর কাছে কাজের মেজারমেন্ট বুক চান। এ সময় সমেশ আলী তা দিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে পরদিনের কথা বলেন। এতে ঠিকাদাররা ক্ষিপ্ত হয়ে সমেশ প্রকৌশলী আলীকে মারপিট করেন।
ইউএনও বলেন, ‘খবর পেয়ে আমি আনসারসহ ঘটনাস্থলে গিয়ে আহত ওই কর্মকর্তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি ও চিকিৎসার ব্যবস্থা করি। তার শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাতের চিহ্ন দেখা গেছে। পরে অভিযুক্ত ঠিকাদারদের আটক করে ভেদরগঞ্জ থানায় হস্তান্তর করা হয়।’
মারপিটের শিকার প্রকৌশলী শমেস আলী বলেন, ‘ঠিকাদার আলমগীর মাদবরসহ চার-পাঁচজন অফিসে এসে তাদের কাজের মেজারমেন্ট বুক চাইলে আমি নির্বাহী প্রকৌশলীকে অবহিত করে আগামীকাল তা দেয়ার কথা বলি। এতে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে অফিস কক্ষের দরজা-জানালা বন্ধ করে সবাই মিলে আমাকে মারধর করে। আমি কোনো রকমে সেখান থেকে পালিয়ে ইউএনও স্যারকে জানালে তিনি এসে আমাকে উদ্ধার করেন।’
আটকের আগে অভিযুক্ত ঠিকাদার আলমগীর হোসেন বলেন, ‘আমাদের কাজ শেষ হয়েছে আরও ছয় মাস আগে। মেজারমেন্ট বই তো এতদিন আটকে রাখার কথা নয়। আজ এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা প্রকৌশলী ৬০ হাজার টাকা ঘুষ দাবি করেন। জেলা অফিস থেকে শুরু করে বিভাগীয় অফিসে টাকা দিতে হয়। তাই আমাদের সঙ্গে কথা-কাটাকাটি হয়েছে। কোনোভাবেই তাকে মারধর করা হয়নি।’
এ বিষয়ে ভেদরগঞ্জ থানার ওসি বাহালুল খান বাহার বলেন, ‘ইউএনও মহোদয় ফোন দিয়ে আমাকে বিষয়টি জানান। সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ পাঠিয়ে ওই কর্মকর্তাকে উদ্ধার করা হয়। মারপিটের সত্যতা পাওয়ায় চারজনকে আটক করা হয়েছে। ভুক্তভোগীর অভিযোগ পেলে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।’