বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বিমানবন্দরে গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিংয়ের দায়িত্ব পেতে চায় ডানাটা

  •    
  • ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ১০:৪৬

গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং এজেন্ট নিয়োগে আন্তর্জাতিক টেন্ডারের অগ্রগতি জানতে চাইলে বিমান প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এটা অনেক দূর এগিয়েছে। সর্বোচ্চ মহলে এটা নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। শাহজালালের থার্ড টার্মিনাল আগামী বছরের অক্টোবরে চালু হবে, তার আগেই এটা চূড়ান্ত করা হবে।’

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরসহ দেশের অন্য সব বিমানবন্দরে গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিংয়ের কাজ পেতে আগ্রহী সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রতিষ্ঠান ডানাটা। চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে একটি সমীক্ষা চালাচ্ছে তারা। লাভজনক বিবেচিত হলে পরে তারা আনুষ্ঠানিক দরপত্র প্রক্রিয়ায় অংশ নেবে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে বিমান প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ডেনাটা চট্টগ্রামে গিয়েছে, তারা সেখানে সার্ভে করছে। তারা গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিংয়ের কাজ করতে উৎসাহী।’

গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিংয়ে রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী প্রতিষ্ঠান বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একক আধিপত্যের অবসান ঘটাতে সম্প্রতি আন্তর্জাতিক টেন্ডার আহ্বানের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার।

অস্ট্রেলিয়ার বিমানবন্দরে গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিংয়ের কাজে সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রতিষ্ঠান ডানাটা। ছবি: অ্যাভিয়েশন অস্ট্রেলিয়া

আগামী বছর শাহজালালের থার্ড টার্মিনাল উদ্বোধনের আগেই দরপত্রের মাধ্যমে যোগ্য প্রতিষ্ঠান বাছাই করা হবে বলে জানিয়েছে বেসামরিক বিমান চলাচল মন্ত্রণালয়।

এ প্রক্রিয়ায় বিমানও অংশ নিতে পারবে। টেন্ডার প্রক্রিয়া পরিচালনার জন্য এরই মধ্যে পরামর্শক নিয়োগ দেয়া হয়েছে।

আরব আমিরাতের রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী এমিরেটস এয়ারলাইনসের সহযোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবে গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং সেবা দিচ্ছে ডানাটা। বিশ্বের অন্যতম বড় দুবাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ছাড়াও বিশ্বের আরও কয়েকটি বিমানবন্দরে তারা এ সেবা দিয়ে থাকে। এর মধ্যে আছে সিঙ্গাপুরে চাঙ্গি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, পাকিস্তানের করাচির জিন্নাহ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, মালদ্বীপের ভেলেনা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর।

বর্তমানে দেশের সব আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরেই দেশি-বিদেশি এয়ারলাইনসগুলোকে এককভাবে গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং সেবা দিচ্ছে বিমান। প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় বিমানের সেবার মান নিয়ে বিভিন্ন সময়ে অভিযোগ উঠেছে। এর আগে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) বিমানকে বাদ দিয়ে নতুন গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং এজেন্ট নিয়োগ দিতে কয়েকবার উদ্যোগ নিয়েও ব্যর্থ হয়।

২০১৩ সালের জানুয়ারিতে বিমান কর্মীদের একটি সংগঠনের ধর্মঘটে প্রায় ৫ ঘণ্টা শাহজালাল বিমানবন্দরের কার্যক্রম বন্ধ ছিল। ওই ধর্মঘটে অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক রুটের ২৪টি ফ্লাইটের প্রায় ৪ হাজার যাত্রী ভোগান্তিতে পড়েন। সে সময় গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিংয়ের কাজে বিকল্প এজেন্টের প্রয়োজনীয়তা জানিয়ে বিমান মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেয় বেবিচক।

বেবিচকের চিঠিতে বলা হয়, এ ধরনের জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলায় এবং গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিংয়ের কাজ নিরবচ্ছিন্ন করতে বিমান বাংলাদেশ ছাড়াও অন্য এজেন্সিকে অনুমতি দেয়া প্রয়োজন।

এর পর গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিংয়ের কাজে আধুনিকতা আনতে বিদেশি অংশীদার খোঁজা শুরু করে বিমান। তবে সে প্রক্রিয়াও আর বেশিদূর এগোয়নি বিমান কর্মীদের আরেকটি আন্দোলনের কারণে।

এর আগে, ২০০৬ সালে গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিংয়ের জন্য একটি স্বতন্ত্র কোম্পানি গঠনের পরিকল্পনা করা হয়, যার ওপর বিমানের সরাসরি নিয়ন্ত্রণ থাকবে না। তবে শেষ পর্যন্ত পরিকল্পনাটি অনুমোদন পায়নি।

বিমানের আয়ের একটি বড় অংশ আসে গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং থেকে, যা বছরে গড়ে ৫০০ কোটি টাকারও বেশি।

বিমান পরিচালনা পর্ষদের সাবেক সদস্য কাজী ওয়াহেদুল আলম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এটা (গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং এজেন্ট পরিবর্তন) দীর্ঘদিন ধরেই বিদেশি এয়ারলাইনস ও যাত্রীদের দাবি। কারণ আন্তর্জাতিক মানের গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং সেবার ১০ ভাগও বিমান দিতে পারছে না।

‘তারা বিদেশি এয়ারলাইনসগুলোর কাছে বিপুল পরিমাণ টাকা চার্জ করে। কিন্তু যে সেবা দেয়ার কথা সেটি দেয় না। এ কারণে বিদেশি এয়ারলাইনসগুলো বিমানের উপর ক্ষুব্ধ। পৃথিবীর বেশিরভাগ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে একাধিক গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং এজেন্ট আছে। এতে সেবা বাড়ানোর প্রতিযোগিতা থাকে। এখন বিমান একা কাজটি করছে বলে ইচ্ছামতো চলছে।’

সেবা দেয়ার ক্ষেত্রে বিমানের গাফিলতি তুলে ধরে এই এভিয়েশন বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘কর্মীদের শিফট পরিবর্তনের সময় দেখা যায়, তারা যে যেখানে যে অবস্থায় আছেন, সে অবস্থায় রেখে চলে যায়। পরবর্তী শিফটের কর্মী এলো কি এলো না তারা সেটা দেখে না। এর মধ্যে দেখা যায় যাত্রীরা ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাগেজের জন্য দাঁড়িয়ে আছেন।

দায়িত্ব গ্রহণের তিন সপ্তাহ পর গত ৪ আগস্ট বলাকা ভবনে আয়োজিত মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানে বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) যাহিদ হোসেন জানান বিমানের কাস্টমার সার্ভিস কাঙ্ক্ষিত পর্যায়ের নয়। ফাইল ছবি

‘সাধারণত আমরা দেখি, যারা গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং এজেন্ট হিসেবে কাজ করে তাদের স্টাফরাই কাউন্টারে চেক ইনের কাজ করে। যতগুলো কাউন্টার লাগে সেখানকার স্টাফ তারাই এয়ারলাইনসকে প্রোভাইড করতে বাধ্য। এটার জন্য তারা টাকা নেয়। কিন্তু আমাদের এখানে দেখা যায়, বিমান মাত্র একজন স্টাফ দেয়। এ কারণে প্রতিটি এয়ারলাইনসকেই নিজস্ব স্টাফ নিয়োগ দিতে হয়।’

তিনি বলেন, ‘বিমানের সব স্টাফ মাস্টার রোলে কাজ করেন, কেউই স্থায়ী কর্মী নন। তারা দৈনিক চুক্তির ভিত্তিতে কাজ করেন। এ কারণে তাদের মধ্যে কমিটমেন্ট তৈরি হয় না। পাশাপাশি তাদের প্রশিক্ষণেরও কোনো উদ্যোগ নেই। তাদের মানোনন্নয়নে কোনো কাজ করা হয় না। বিমানের এ রকম প্রায় আড়াই হাজার কর্মী আছে।

‘এসব কারণে যাত্রীরা হয়রানির মুখে পড়ছেন। তাদের লাগেজ খোয়া যাচ্ছে, সময় মতো লাগেজ পাচ্ছেন না। সরকার যদি এটা বুঝে নতুন কাউকে দেয় তাহলে আমাদের এখানে সেবার মান অনেক বাড়বে।’

গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং এজেন্ট নিয়োগে আন্তর্জাতিক টেন্ডারের অগ্রগতি জানতে চাইলে বিমান প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এটা অনেক দূর এগিয়েছে। সর্বোচ্চ মহলে এটা নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। শাহজালালের থার্ড টার্মিনাল আগামী বছরের অক্টোবরে চালু হবে, তার আগেই এটা চূড়ান্ত করা হবে।’

এ বিভাগের আরো খবর