বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

চাঁদপুর সদরে ৯ মাসে নিখোঁজ চার শতাধিক

  •    
  • ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ২১:৪৯

চাঁদপুর মডেল থানার ওসি আবদুর রশিদ বলেন, ‘ছেলে-মেয়েদের ঘর ছাড়ার মূল কারণ সামাজিক অবক্ষয় এবং সোস্যাল মিডিয়া। এসব ক্ষেত্রে অভিভাবক ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে আরও সচেতন হতে হবে। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চাঁদপুর সদর মডেল থানায় চার শতাধিক নিখোঁজের ডায়রি হয়েছে। এর মধ্যে উদ্ধার হয়েছে দুই শতাধিক। বাকিগুলো তদন্তাধীন।’

চাঁদপুরে সামাজিক অবক্ষয়ের ঘটনায় বাড়ছে নিখোঁজের সংখ্যা। শিশু, বিবাহিত নারী ও কলেজ শিক্ষার্থী নিখোঁজের ঘটনায় চলতি বছরের নয় মাসে সদর থানায় চার শতাধিক ডায়েরি করেছে ভুক্তভোগী পরিবার।

সামাজিক অবক্ষয় রোধে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি পরিবারের সদস্যদের সচেতন হওয়ার পরামর্শ দিয়েছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সুধী সমাজ।

আহমদ উল্লাহ তানভীর চাঁদপুর সরকারি কলেজ থেকে মাস্টার্স পাস করেছেন। পরিবারের সঙ্গে অভিমান করে কয়েক মাস ধরে নিখোঁজ তিনি। সন্তানের কোনো খোঁজ না পেয়ে পরিবারের লোকজনের সময় কাটছে দুশ্চিন্তায়।

তানভীরের বাবা আব্দুল মতিন বলেন, ‘আমার ছেলে মাস্টার্স পাস করার পর কোনো চাকরি পাচ্ছিল না। আমি, ওর মা ও বোন বিভিন্ন সময় তাকে চাকরির জন্য বলতাম। এ নিয়ে আমার ছেলে মানসিক দুশ্চিন্তায় থাকত। হঠাৎ করে সে কাউকে কিছু না বলে বাড়ি থেকে বের হয়ে যায়।

‘অনেক চেষ্টা করেও ছেলের খোঁজ পাইনি। ছেলে বাড়ি ছাড়ার পর দুশ্চিন্তা করেই ওর মা মারা যায়। আমরা ওর অপেক্ষায় পথ চেয়ে আছি।’

আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তথ্যমতে, চাঁদপুরে কিশোর-কিশোরী, যুবক-যুবতী নিখোঁজের ঘটনায় চার শতাধিক সাধারণ ডায়েরি হয়েছে। ভুক্তভোগী পরিবারগুলো তাদের নিখোঁজ স্বজনদের ফিরে পাওয়ার দাবি জানিয়ে থানায় এসব জিডি করে।

নিখোঁজদের মধ্যে পরকীয়া ও প্রেম-ভালবাসা এবং পারিবারিক কলহে ঘর ছাড়ার সংখ্যাই বেশি। সামাজিক অবক্ষয় রোধে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের ভূমিকার পাশাপাশি পরিবারের লোকজনদের এগিয়ে আসা উচিত বলে মনে করছে সুশীল সমাজ।

নিখোঁজদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সংখ্যায় ঘর ছেড়েছে কথিত প্রেমিক যুগল। পারিবারিক কলহেও অনেকে ঘরছাড়া। পরকীয়ার ঘটনাও আছে। তবে নিখোঁজদের মধ্যে মানসিক ভারসাম্যহীন, বৃদ্ধা ‌এবং শিশুও রয়েছে।

চাঁদপুর সরকারি কলেজের সমাজকর্ম বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ইয়াহ ইয়া খান বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা অধিকাংশ সময় পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কাটায়। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের চেয়ে এ ব্যাপারে পরিবারের সদস্যদের অধিক সচেতন হতে হবে। তারা কোথায় যায়, কার সঙ্গে মেশে- এমন সব তথ্য অভিভাবকদের পক্ষ থেকে আমাদের সময়ে সময়ে জানানো উচিত।’

চাঁদপুর সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর অসিত বরণ দাশ বলেন, ‘ইদানীং দেখা যাচ্ছে তরুণ সমাজ পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছে। হঠাৎ করেই শোনা যায় অমুককে খুঁজে যাওয়া যাচ্ছে না। ‘এক্ষেত্রে পরিবার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।’

চাঁদপুর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবদুর রশিদ বলেন, ‘ছেলে-মেয়েদের ঘর ছাড়ার মূল কারণ সামাজিক অবক্ষয় এবং সোস্যাল মিডিয়া। এসব ক্ষেত্রে অভিভাবক ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে আরও সচেতন হতে হবে। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চাঁদপুর সদর মডেল থানায় চার শতাধিক নিখোঁজের ডায়রি হয়েছে। এর মধ্যে উদ্ধার হয়েছে দুই শতাধিক। বাকিগুলো তদন্তাধীন।’

এ বিভাগের আরো খবর