ফরিদপুর সদর উপজেলা ছাত্রলীগের নতুন কমিটি গঠন করা হয়েছে। এতে সভাপতি হয়েছেন শাহীন আহমেদ সোহান এবং সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রানা।
অভিযোগ উঠেছে, সভাপতি ও সম্পাদক হওয়া দুজনেই বিবাহিত। তাদের একটি করে সন্তানও রয়েছে।
এ ছাড়া নতুন কমিটিতে বিতর্কিত অনেকের নাম আছে বলে বলে দাবি করেছে উপজেলা ছাত্রলীগের একাংশ। গঠনতন্ত্র অমান্য করে বিবাহিতদের সভাপতি ও সম্পাদক করায় মঙ্গলবার দুপুরে জেলা প্রেস ক্লাবের সামনে প্রতিবাদ সভা ও বিক্ষোভ মিছিল করেছেন তারা।
এর আগে সোমবার জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি তামজিদুল রশিদ চৌধুরী রিয়ান ও সাধারণ সম্পাদক মো. ফাহিম আহামেদ স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে সদর উপজেলা ছাত্রলীগের পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়। এই কমিটির মেয়াদ এক বছর বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
তবে এই কমিটির বিরোধিতা করে জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি অমিয় সরকার বলেন, ‘সদর উপজেলা ছাত্রলীগের নতুন কমিটির সভাপতি সোহানের এক বছর বয়সী কন্যা ও সাধারণ সম্পাদক রানার চার বছরের ছেলে আছে, যা ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্রের পরিপন্থি। অবিলম্বে এ কমিটি বাতিল করা হোক।’
সদ্য বিলুপ্ত সদর উপজেলা কমিটির সভাপতি আশিকুর রহমান বিপ্লবের অভিযোগ, অবৈধভাবে বিতর্কিত ও অযোগ্যদের পদ দিয়েছেন জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সম্পাদক।
জেলা ছাত্রলীগের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি সাদিকুর রহমান সবুজ বলেন, ‘নতুন কমিটির সভাপতি শাহীন আহমেদ সোহানের স্ত্রীর নাম জেনিমি সুরাত জেনি। ডাকনাম বিথী। সোহানের শ্বশুরবাড়ি সদরের অম্বিকাপুর ইউনিয়নে। তার শ্বশুরের নাম বিল্লাল শেখ। তার মেয়ের বয়স এক বছর।’
তবে এসব অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন দাবি করে নতুন কমিটির সভাপতি শাহীন আহমেদ সোহান বলেন, ‘আমার নামে ষড়যন্ত্র চলছে। আমি তো বিবাহিতই না; বাচ্চা থাকবে কীভাবে? এগুলো আমার নামে পদবঞ্চিতদের অপপ্রচার। যাচাই না করেই মিথ্যা অভিযোগ তোলা হচ্ছে।’
সোহান আরও বলেন, ‘আগের কমিটি ঘোষণার পর তার মেয়াদ হয়েছিল ৯ বছর। সেই কমিটিতে আমি সেক্রেটারি ছিলাম। আর ৯ বছর তো একটি কমিটির মেয়াদ থাকতে পারে না। তাই আগের কমিটি ভেঙে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সঙ্গে কথা বলে নতুন কমিটি ঘোষণা করেছে জেলা ছাত্রলীগ।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি সূত্র দাবি করেছে, নতুন কমিটির সাধারণ সম্পাদক রানার স্ত্রীর নাম আম্বিয়া। তার শ্বশুরবাড়িও অম্বিকাপুর ইউনিয়নে। চার বছর বয়সী তার ছেলের নাম আয়ান।
তবে এসব অভিযোগকে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন রানা। তিনি বলেন, ‘যারা অভিযোগ তুলেছে, তারা প্রমাণ করুক। প্রমাণ দিতে পারলে অব্যাহতি নেব।’
এ বিষয়ে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি তামজিদুল রশিদ চৌধুরী রিয়ান বলেন, ‘এসব মিথ্যা ও ভিত্তিহীন অভিযোগ। আমরা খোঁজ নিয়েই কমিটি দিয়েছি। বিবাহিত কারও ছাত্রলীগে স্থান পাওয়ার সুযোগ নেই। সভাপতি-সম্পাদক বিবাহিত প্রমাণ পেলে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শামীম হক বলেন, ‘আমিও এমন শুনেছি। তবে এখনও যাচাই করিনি। যেহেতু বিষয়টি ছাত্রলীগের, সেহেতু কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগই এটি দেখবে।’