টাঙ্গাইলের মির্জাপুর পুলিশ ফাঁড়িতে আটক এক ব্যক্তির মৃত্যুর পর ব্যাপক বিক্ষোভ দেখিয়েছেন এলাকাবাসী। তারা টায়ার জ্বালিয়ে সড়ক বন্ধ করার পাশাপাশি স্থানীয় একটি বাজারে ঘণ্টাব্যাপী অবরোধও করেন।
পুলিশের দাবি, সেই ব্যক্তি আত্মহত্যা করেছেন। তবে স্বজন ও এলাকাবাসীর অভিযোগ, তাকে পুলিশ নির্যাতন করে হত্যা করেছে। এর সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থার দাবি জানিয়েছেন তারা।
সোমবার রাতে উপজেলার বাঁশতৈল পুলিশ ফাঁড়িতে লেবু মিয়া নামে এক ব্যক্তি মারা যান। তিনি বাঁশতৈল গ্রামের বাহার উদ্দিনের ছেলে।
সখিনা আক্তার নামে এক নারীকে হত্যায় জড়িত থাকার সন্দেহে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য লেবু মিয়া ও সেই নারীর সাবেক স্বামী মফিজুর রহমানকে আটক করে।
পুলিশ জানায়, পাঁচ বছর আগে স্বামীর সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হয় সখিনা আক্তারের। দুই মেয়ের বিয়ে হয়ে যাওয়ার পর প্রবাসী ছেলের স্ত্রীকে থাকতেন। পুত্রবধূ বাড়িতে যাওয়ায় গত রোববার রাতে সখিনা বাড়িতে একাই ছিলেন। রাতের কোনো এক সময় তার ঘরে ঢুকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়। পরদিন বেলা ১২ টার দিকে তার মরদেহ উদ্ধার করে বাঁশতৈল ফাড়ি পুলিশ। এই ঘটনায় মফিজুর ও লেবুকে আটক করে রাতে ফাঁড়ির হাজাতখানায় রাখা হয়।
বাঁশতৈল ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মনিরুজ্জামান বলেন, ‘মঙ্গলবার সকালে পুলিশ ফাঁড়িতে যাই। সেখানে গিয়ে লেবু মিয়ার গলায় রশি পেঁচানো অবস্থায় তাকে দেখতে পাই।’
বাঁশতৈল পুলিশ ফাঁড়িতে মারা যান লেবু মিয়া। ছবি: সংগৃহীত
লেবু মিয়ার স্ত্রী আলেয়া বেগম বলেন, ‘ভালো মানুষকে নিয়ে গেছে পুলিশ। তার সঙ্গে কিছুই ছিল না। কীভাবে রশি তার কাছে গেলো? এটা আত্মহত্যা না হত্যা করা হয়েছে।’
এই ঘটনায় বিক্ষোভ দেখানো মাসুদ মিয়া বলেন, ‘এটা আত্মহত্যা না, হত্যা করা হয়েছে। তিনি মানসিক রোগী না যে আত্মহত্যা করবেন। তিনি ভালো মানুষ। তাকে বেধরক মারপিটের কারণে মারা গেছে।’
মির্জাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শেখ আবু সালেহ মাসুদ করিম বলেন, ‘বিষয়টি মর্মান্তিক। তার লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য টাঙ্গাইল সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের পরই আসলে বোঝা যাবে তার মৃত্যুটা কীভাবে হয়েছে।
‘যেহেতু ঘটনা স্পর্শকাতর তাই ঘটনা তদন্ত পূর্বক সকল ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
লেবুর স্ত্রীর অভিযোগ, পরিবারকে না জানিয়ে পুলিশ লাশ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়ে দিয়েছে।