বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

সম্ভাবনা থাকলেও পর্যটনে পিছিয়ে বাগেরহাট

  •    
  • ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ১৯:৫৭

বাগেরহাটের প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের তালিকাভুক্ত সংরক্ষিত অধিকাংশ পুরাকীর্তিগুলো অযত্ন আর অবহেলায় পড়ে আছে দীর্ঘদিন ধরে। স্থাপনা প্রাঙ্গণে চরছে গরু-ছাগল। কয়েকটি স্থাপনার দেয়ালও ধসে গেছে। সবকিছু মিলিয়ে সংস্কার ও সংরক্ষণের অভাবে দিন দিন নষ্ট হয়ে যাচ্ছে প্রাচীন এসব স্থাপনা।

একদিকে সুন্দরবনের অপার সৌন্দর্য আর অন্যদিকে ঐতিহাসিক ষাট গম্বুজ মসজিদ। দেশের তিনটি বিশ্ব ঐতিহ্যের দুটিই বাগেরহাটে। পর্যটন শিল্পে এ জেলার অপার সম্ভবনা থাকলেও দীর্ঘদিনেও নিশ্চিত করা যায়নি প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা। রয়েছে মানসম্মত হোটেল-আবাসন ব্যবস্থার সংকট। সবকিছু মিলিয়ে নানা সংকটে দিন দিন সীমাবদ্ধ হয়ে পড়ছে সম্ভাবনাময় এ জেলার পর্যটন শিল্প। তবে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সুন্দরবন ও ষাটগম্বুজ মসজিদসহ জেলাকে পর্যটনবান্ধব করে গড়ে তুলতে নেয়া হচ্ছে নানা পদক্ষেপ।

বাগেরহাটের প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের তালিকাভুক্ত সংরক্ষিত অধিকাংশ পুরাকীর্তিগুলো অযত্ন আর অবহেলায় পড়ে আছে দীর্ঘদিন ধরে। স্থাপনা প্রাঙ্গণে চরছে গরু-ছাগল। কয়েকটি স্থাপনার দেয়ালও ধসে গেছে। সবকিছু মিলিয়ে সংস্কার ও সংরক্ষণের অভাবে দিন দিন নষ্ট হয়ে যাচ্ছে প্রাচীন এসব স্থাপনা।

প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর ও পূর্ব সুন্দরবন বিভাগ সূত্রে জানা যায়, হযরত খানজাহান আমলে নির্মিত ইসলামী স্থাপত্য রীতির মসজিদগুলোর ঐতিহাসিক গুরুত্ব বিবেচনা করে ১৯৮৫ সালে বাগেরহাট জেলাকে ঐতিহাসিক মসজিদের শহর হিসেবে ঘোষণা এবং ৩২১তম বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকাভুক্ত করে ইউনেস্কো। এর মধ্যে বাগেরহাটের ১৭টি স্থাপনাকে তালিকাভুক্ত করা হয়। তালিকাভুক্ত স্থাপনা ছাড়াও বাগেরহাটে আরও অনেক পুরাকীর্তি ও দৃষ্টিনন্দন স্থাপনা রয়েছে।

সম্প্রতি বাগেরহাটের বিভিন্ন এলাকায় আরও ১৬৩টি প্রত্নস্থান (সাইট) শনাক্ত করেছে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর। গত এক বছরে সুন্দরবনের বাগেরহাট অংশে পর্যটক এসেছে ১ লাখ ২০ হাজার। অন্যদিকে বাগেরহাটের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত ষাটগম্বুজ মসজিদে এসেছে ১ লাখ ৮০ হাজার দর্শনার্থী।

ষাটগম্বুজ-সুন্দরবন ট্যুরিজম ট্যুর অপারেটরের পরিচালক মীর ফজলে সাঈদ ডাবলু বলেন, ‘বাগেরহাটে অনেক পর্যটন স্পট থাকলেও সুযোগ-সুবিধা খুবই কম। প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণের অভাবে পর্যটকদের সঙ্গে স্থানীয়দের আচার-ব্যবহারে ঘাটতি রয়েছে।’

ষাটগম্বুজ, মোংলাসহ বিভিন্ন স্থানে হোটেল-রেস্টুরেন্টের কর্মচারীদেরও প্রশিক্ষণ দেয়ার দাবি জানান তিনি।

সুন্দরবন। ছবি: নিউজবাংলা

সদর উপজেলা পরিষদের নারী ভাইস চেয়ারম্যান রিজিয়া পারভীন বলেন, ‘পদ্মা সেতুর ফলে বাগেরহাটের সঙ্গে সারাদেশের যোগাযোগ সহজ হয়েছে। জেলার প্রবেশপথে নির্দিষ্ট স্থানে ব্যানার বা বিলবোর্ডের মাধ্যমে যদি এক নজরে বাগেরহাটের দর্শনীয় স্থাপনার বর্ণনা, যাতায়াত ব্যবস্থা, খাবার ও থাকার হোটেল লেখা যায় তবে দর্শনার্থীদের জেলায় ভ্রমণ আরও সহজ হবে।’

বাগেরহাট প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের কাস্টোডিয়ান মো. যায়েদ বলেন, ‘বাগেরহাটে আসা দর্শনার্থীদের জন্য লোকালয়ে থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করতে পারলে স্থানীয়রা বেশ লাভবান হবেন। এছাড়া দর্শনার্থীদের সুবিধার্থে ষাট গম্বুজের সামনে বিশ্রামাগার নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে।’

পাশাপাশি মসজিদ সংলগ্ন ঘোড়াদীঘিকে নান্দনিক করতে ওয়াকওয়ে তৈরি করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. বেলায়েত হোসেন বলেন, ‘সুন্দরবনে পরিবেশবান্ধব পর্যটন বা ইকো-ট্যুরিজম সুবিধা সম্প্রসারণ ও উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় আরও চারটি ইকো-ট্যুরিজম কেন্দ্র গড়ে তোলা হচ্ছে।’

ষাট গম্বুজ মসজিদ। ছবি: নিউজবাংলা

তৈরি হতে যাওয়া ইকো-ট্যুরিজম কেন্দ্রগুলো হচ্ছে সুন্দরবনের খুলনা রেঞ্জের শেখেরটেক ও কালাবগী এবং শরণখোলা রেঞ্জের আলীবান্ধা ও চাঁদপাই রেঞ্জের আন্ধারমানিক।

বাগেরহাট জেলা প্রশাসক মো. আজিজুর রহমান বলেন, ‘বাগেরহাটকে পর্যটনবান্ধব হিসেবে গড়ে তুলতে সরকার নানা উদ্যেগ নিয়েছে। প্রত্যেকটি পর্যটন কেন্দ্রের শোভাবর্ধন, আবাসন ব্যবস্থা, বিপণন কেন্দ্র, সহজ যাতায়াত, সার্বিক নিরাপত্তাসহ বিভিন্ন পরিকল্পনা রয়েছে।’

খুব তাড়াতাড়ি বাগেরহাটের পর্যটন শিল্প আরও বিকাশিত হবে বলে আশা করেন তিনি।

এ বিভাগের আরো খবর