বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

শীতের জন্য প্রস্তুত হচ্ছে কুয়াকাটা

  •    
  • ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ০৯:২৫

কুয়াকাটা হোটেল-মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সেক্রেটারি জেনারেল এম এ মোতালেব শরীফ বলেন, ‘এখানে পর্যটকদের নিরাপত্তা বেশ ভালো। ট্যুরিস্ট পুলিশ, নেভাল পুলিশ এখানে আছে। নিরাপত্তা বেশ ভালো। ১০০ ভাগ না হলেও ৯০ ভাগ ভালো। পর্যটক এলে এখানে কোনো বৈরীভাব নাই। তাদের ট্রেইন্ডআপ করতে হবে, যাতে করে পর্যটকদের আরও সেবা দেয়া যায়।’

পৃথিবীব্যাপী পর্যটনকেন্দ্রিক সচেতনতা বৃদ্ধি করতে পালন করা হয় বিশ্ব পর্যটন দিবস। অন্যান্য দেশের সঙ্গে মিলে মঙ্গলবার বাংলাদেশেও পালন করা হচ্ছে পর্যটন দিবস।

এবার পর্যটন দিবসে দেশের পর্যটন খাতে যুক্ত হয়েছে এক নতুন অনুষঙ্গ, পদ্মা সেতু। গত ২৫ জুন দেশের সবচেয়ে বড় এই অবকাঠামো উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আর এর মাধ্যমে দক্ষিণাঞ্চলের সঙ্গে সরাসরি সড়কপথে যুক্ত হয় দেশের মূল ভূখণ্ড।

এই সেতুর কারণে দক্ষিণাঞ্চলে পর্যটনের এক নতুন দুয়ার খুলতে যাচ্ছে। দেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সাগর সৈকত পটুয়াখালীর কুয়াকাটাতেও বইছে নতুন বাতায়ন।

পদ্মা সেতু চালুর পর সেতুতে বিভিন্ন যান চলছে। ফাইল ছবি/নিউজবাংলা

এতদিন দেশের সমুদ্রকেন্দ্রিক পর্যটন বলতে মানুষ বুঝতো কক্সবাজারের কথা। একসময়ে ঢাকা থেকে কুয়াকাটায় সড়কপথে যেতে একাধিক ফেরি পার হতে হতো। সেসব নদীতে সেতু হয়ে গেছে। এখন পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় ঢাকা থেকে কুয়াকাটা পর্যন্ত সড়কে আর কোনো ফেরি নেই। এতে কোনো দুর্ভোগ ছাড়াই স্বল্প সময়ে কুয়াকাটা পৌঁছতে পারছেন পর্যটকরা। তাই আসন্ন পর্যটন মৌসুমে কুয়াকাটা সাজছে এক নতুন রূপে। শীতের জন্য তৈরি হচ্ছে সূর্যোদয়-সূর্যাস্তের এই শহর।

ভ্রমণপিপাসু পর্যটকদের অপেক্ষায় দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত। ছবি: নিউজবাংলা

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পরিকল্পিত অবকাঠামো, উন্নত সড়ক যোগাযোগ আর পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারলে কুয়াকাটা হতে পারে কক্সবাজারের সমান্তরাল বা বিকল্প পর্যটন কেন্দ্র।

কুয়াকাটায় অ্যাসোসিয়েশনভুক্ত আবাসিক হোটেল রয়েছে ৭৪টি। এর বাইরে আরও ৫৬টি হোটেল আছে। এ ছাড়া প্রথম শ্রেণির হোটেল আছে ১৫টি।

কুয়াকাটা হোটেল মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সেক্রেটারি জেনারেল এম এ মোতালেব শরীফ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘পদ্মা সেতু খোলার পর থেকেই এখানে পরিবহনের সংখ্যা অনেক বেড়ে গেছে। আগে যেখানে ৫ থেকে ৬টি পরিবহন কোম্পানি নিয়মিত সেবা দিত, এখন সেখানে শ’ খানেকের মতো পরিবহন কোম্পানি তাদের সেবা শুরু করেছে। এর কারণে পর্যটকের আনাগোনাও বহুলাংশে বেড়েছে। অনেক বিলাসবহুল পরিবহনও এখন সরাসরি এখানে আসছে। এই সিজনে মনে হচ্ছে অনেক পর্যটক এখানে আসবে।

কুয়াকাটা সৈকতে পর্যটকের ভিড়। ফাইল ছবি

‘কক্সবাজার অনেক বছরের সাধনার ফল সরকারের। এখানে সরকারি-বেসরকারি প্রচুর বিনিয়োগ আছে। আজকের এ অবস্থায় আসতে কিন্তু অনেক সময় লেগেছে। আমাদের এখানে কেবল শুরু। এখানে আমাদের এখন মেরিন ড্রাইভ দরকার। এটা না হলে পর্যটনের বিকাশ হবে না। যোগাযোগব্যবস্থা আরও ভালো করতে হবে। রাস্তাগুলো ফোর লেনে আনতে হবে। সেবার ক্ষেত্রেও মান বাড়াতে হবে। পর্যটনসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান বাড়াতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘এখানে পর্যটকদের নিরাপত্তা বেশ ভালো। ট্যুরিস্ট পুলিশ, নেভাল পুলিশ এখানে আছে। নিরাপত্তা বেশ ভালো। ১০০ ভাগ না হলেও ৯০ ভাগ ভালো। পর্যটক এলে এখানে কোনো বৈরীভাব নাই। তাদের ট্রেইন্ডআপ করতে হবে, যাতে করে পর্যটকদের আরও সেবা দেয়া যায়।’

কুয়াকাটাকে ঘিরে শীতকালের পরিকল্পনা সাজাচ্ছে এয়ারলাইনসগুলোও। বেসরকারি ইউএস বাংলা এয়ারের জনসংযোগ বিভাগের মহাব্যবস্থাপক কামরুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এভিয়েশনের জন্য শীতকাল হলো পিক সিজন। আশা করছি কুয়াকাটা বেসড এখন পর্যটকদের যে আকর্ষণ তৈরি হয়েছে, এতদিন বারবার একজন হয়তো কক্সবাজারেই যেত, এবার হয়তো নতুন গন্তব্য হিসেবে কুয়াকাটাকেই প্রায়োরিটি দেয়া হচ্ছে। শীতে আশা করছি যাত্রী বাড়বে।

‘এখানে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত খুব কাছাকাছি দুটি জায়গা থেকে দেখা যায়। এটা কক্সবাজারে পাওয়া যায় না। লোকাল কমিউনিকেশন, যেমন সৈকত থেকে যে অন্য পর্যটন গন্তব্যগুলো আছে, এগুলোর কমিউনিকেশন ও নিরাপত্তার বিষয়টি যদি আরেকটু বাড়ানো যায় তাহলে আকর্ষণ বাড়বে। পদ্মা সেতুর কারণে সড়ক পথের যাত্রীদের আনাগোনা তো থাকবেই। ফলে আকাশপথের যাত্রীদেরও আনাগোনা অনেকটা বাড়বে।’

দেশের পর্যটনের বিকাশে সরকার যে মহাপরিকল্পনা করছে তাতে কুয়াকাটার বিষয়েও অনেক উন্নয়ন পরিকল্পনার কথা রয়েছে বলে জানান পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী। তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের মাস্টারপ্ল্যান তো প্রায় চূড়ান্ত হওয়ার পথে। এটি হলে শুধু কুয়াকাটাই নয়, সারা দেশের পর্যটন অনেকটাই বদলে যাবে। এখন তো পদ্মা সেতুর কারণে সেখানে পর্যটক বাড়ছে। সেটা নিয়ে আমাদের চিন্তা-ভাবনা অবশ্যই আছে।

‘সাগরমুখী পর্যটন বলতে এখন আমরা কক্সবাজারকেই বুঝি। আমার মনে হয়, সেখানেও একটি বড় পরিবর্তন আসবে। কুয়াকাটাও কক্সবাজারের সমান্তরাল একটি পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে বলে আমার মনে হয়। গত রোববার সংসদীয় কমিটিতেও এ বিষয়টি নিয়ে আলাপ করেছি। সেখানে কী করা যায় সেটা নিয়ে আমরা বিস্তারিত আলোচনা করেছি।’

এ বছরের মধ্যেই মহাপরিকল্পনার কাজ শেষ হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এখন আমরা অবকাঠামো যেটা করব, সেটা হবে মাস্টারপ্ল্যানের আদলে। কোথায় কোন জিনিসটি হলে ভালো হয়, সেটার জন্যই তো মাস্টারপ্ল্যান। এটা একদম শেষ পর্যায়ে আশা করছি, এ বছরই শেষ হয়ে যাবে।’

এ বিভাগের আরো খবর