পাকিস্তান আমলে কোন দিক দিয়ে এখনকার চেয়ে ভালো ছিলেন- বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের কাছে জানতে চেয়েছেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক।
তিনি বলেছেন, মুক্তিযেদ্ধারা বঙ্গবন্ধুর কাছে অস্ত্র জমা দিয়েছেন, কিন্তু প্রশিক্ষণ ও চেতনা জমা দেননি। প্রয়োজনে ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে আবার যুদ্ধের নেতৃত্ব দেবে তারা।
সোমবার শরীয়তপুর সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবনের উদ্বোধন শেষে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
গত ১৫ সেপ্টেম্বর বিএনপি মহাসচিব ঠাকুরগাঁওয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বলেন, ‘পাকিস্তান সরকার থেকে বর্তমান সরকার আরও নিকৃষ্ট। আমরা পাকিস্তান আমলে আর্থিক ও জীবনযাত্রার দিক থেকে এর থেকে ভালো ছিলাম। তার পরও পাকিস্তান সরকার যেহেতু আমার অধিকার ও সম্পদ হরণ করত, সে কারণে আমরা যুদ্ধ করেছি। কিন্তু এখন তার থেকেও খারাপ অবস্থায় আমরা আছি।’
এর জবাবে মির্জা ফখরুলকে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী বলেন, ‘কোন মানদণ্ডে পাকিস্তান ভালো ছিল তা আপনি সুস্পষ্ট করুন।’
তিনি বলেন, ‘স্বাধীন বাংলাদেশে থেকে যারা বলে পাকিস্তান ভালো ছিল তাদের দাঁতভাঙা জবাব দিতে হবে, বিষদাঁত উপড়ে ফেলতে হবে।’
মন্ত্রী বলেন, ‘১৯৭৫ সালে দেশের মানুষের মাথাপিছু আয় ছিল ২৭৮ ডলার, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর ১৯৭৬ সালে তা নেমে আসে ১২৩ ডলারে।’
৭৫-এর হাতিয়ার আবার গর্জে ওঠার বিষয়ে বিএনপির সমাবেশ থেকে যে বক্তব্য দেয়া হয়েছে, সেটি নিয়েও প্রশ্ন রাখেন মন্ত্রী। বলেন, ‘এ কথা দিয়ে কী বোঝাতে চাইছেন? বঙ্গবন্ধুর রক্তের ছিটেফোঁটা যা আছে, আজকের সফল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে কি তারা হত্যা করতে চান? যারা বলেন তাদের উদ্দেশ্য কী? তা জাতির সামনে পরিষ্কার করতে হবে।’
বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সুযোগ-সুবিধা বাড়াতে সরকার কাজ করছে বলেও জানান মোজাম্মেল হক। জানান, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে নির্মিত প্রত্যেকটি মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবনে ক্যাপসুল লিফট বসানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য নির্মাণাধীন বন্ধ থাকা ঘরগুলো দ্রুত সময়ের মধ্যে নির্মাণ করা হবে।
বীর মুক্তিযোদ্ধাদের এক প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী বলেন, ‘রাজাকারদের তালিকা প্রস্তুতের কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে। শিগগির তা প্রকাশ করা হবে।
বেলা ১১টার দিকে জেলা শহরের পালং স্কুল সড়কে সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবনের উদ্বোধন করেন মন্ত্রী।
শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসক পারভেজ হাসানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন শরীয়তপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য ইকবাল হোসেন অপু, শরীয়তপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য নাহিম রাজ্জাক, পুলিশ সুপার সাইফুল হক।
বীর মুক্তিযোদ্ধা ও আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীরাও এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
এরপর মন্ত্রী যান জাজিরা উপজেলায়। সেখানে নির্মিত উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবনও উদ্বোধন করেন তিনি।