মাদকাসক্তরা যেন পুলিশে ঢুকতে না পারে, সে জন্য নিয়োগের আগেই ডোপ টেস্ট করার উদ্যোগ নেয়ার কথা জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।
ডোপ টেস্ট করে বেশ কিছু পুলিশ সদস্যকে চাকরিচ্যুত করার মধ্যে নতুন এই উদ্যোগের কথা জানিয়েছেন তিনি।
সোমবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ‘মাদকাসক্তি নিরাময়ে বেসরকারি খাতের ভূমিকা’ বিষয়ে এক গোলটেবিল সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা জানান।
মন্ত্রী বলেন, ‘পুলিশে যারা মাদক নেয় তদের ডোপ টেস্ট করা হচ্ছে। ডোপ টেস্টে পজিটিভ হলে তাকে সাসপেন্ড করা হচ্ছে। এই জায়গাটায় আমরা খুব কঠিন অবস্থানে চলে আসছি।
‘চাকরির শুরুতে যারা সিলেক্টেড হবে, তাদের ডোপ টেস্ট করার প্রচলন পুরোপুরি নিতে যাচ্ছি। পুলিশ-বিজিবি সব জায়গায় ডোপ টেস্টের প্রচলন রয়েছে। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা মাদকাসক্ত হচ্ছে কি না, সেখানেও মনে হলে আমরা ডোপ টেস্ট করব।’
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সব চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে ডোপ টেস্ট যেন বাধ্যতামূলক করা হয়। তিনি সম্মতি দিয়েছেন। চাকরির শুরুতে যারা সিলেক্টেড হবে তাদের ডোপ টেস্ট করার প্রচলন পুরোপুরি নিতে যাচ্ছি। পুলিশ-বিজিবি সব জায়গায় ডোপ টেস্টের প্রচলন রয়েছে। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা মাদকাসক্ত হচ্ছে কি না, সেখানেও মনে হলে আমরা ডোপ টেস্ট করব।’
মাদক কেনাবেচায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের জড়িয়ে পড়ার বিষয়টিও উঠে আসে তার বক্তব্যে। তিনি বলেন, ‘আপনি জেলখানায় গিয়ে দেখুন মাদকের মামলায় পুলিশের সদস্য যেমন আছে, র্যাবের সদস্যও আছে, তেমন অন্য ব্যবসায়ীরাও রয়েছে। পুলিশ বলে তার জন্য আইন আলাদা হবে- বিষয়টি এমন নয়।’
কারাগারে বন্দিদের সিংহভাগই মাদক মামলার আসামি বলে জানান মন্ত্রী। জানান, কারাগারে বন্দির সংখ্যা ৮০ হাজার থেকে এক লাখের মতো। এর মধ্যে ৬০ শতাংশই মাদক বিক্রেতা।
মাদক মামলায় বিচারের জটিলতা নিয়েও কথা বলেন তিনি। বলেন, ‘বিচারের সময় সাক্ষী পাওয়া যায় না। আর আমাদের লম্বা জট লেগেছে মামলার। সেখানে এই মাদক মামলা হারিয়ে যায়।
‘আমরা চেয়েছিলাম বিশেষ ট্রাইব্যুনাল চাইছিলাম। যদিও আমরা সেটা এখনও পাইনি। যদি শাস্তিটা দৃশ্যমান হতো, তাহলে ডিমান্ড হ্রাস ও সাপ্লাই কমে যেত।’
মাদকের সরবরাহ কমাতে বিজিবি, কোস্টগার্ডের সক্ষমতা ও জনবল বাড়ানো হচ্ছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘বর্ডারে আমরা এখন অনেক কিছু করতেছি। টেকনাফে দেখেন নাফ নদীর যে বর্ডার তা দুর্গম। সেখানে বিওপি থেকে বিওপি যেতে সময় লাগে। আমরা সেন্সর লাগাচ্ছি সমস্ত বর্ডারে। হেলিকপ্টার টহলের ব্যবস্থা করছি, যাতে মাদকের সাপ্লাই বন্ধ করা সম্ভব হয়।’
‘চিকিৎসকরা নাকি সবচেয়ে বেশি মাদক নেন’মন্ত্রী বলেন, ‘চিকিৎসরা নাকি সবচেয়ে বেশি মাদক গ্রহণ করেন। তবে বিষয়টি আমার জানা নেই। নেশা করে মাদক নেয় চিকিৎসক, সাংবাদিক, ইঞ্জিনিয়ার ও আমরাও নিয়ে থাকি। চিকিৎসকরা মাদক নেবে না এমন তো কথা নেই। তারা তো আলাদা জাতি না। দু-একজন পথভ্রষ্ট হতে পারে।’
অসাধু লোক সব জায়গাতেই আছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘হেরোইন উদ্ধারের পর নাকি পরীক্ষায় পাউডার হয়ে যায়। কারণ শুধু পোর্টে কিংবা পুলিশে নয়, সব জায়গাতেই খারাপ মানুষ আছে।’
সীমান্তেও অনেকে চোখ বন্ধ করে আছে বলেও মন্তব্য করেন মন্ত্রী।