বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

১০২ কোটি টাকার কাজে ৫৬ কোটি সাশ্রয়

  •    
  • ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ১৬:০৬

সড়ক উন্নয়নের ভূমি অধিগ্রহণের কাজ করতে গিয়ে জেলা প্রশাসক দেখেন ১০২ কোটি টাকা বরাদ্দ হলেও মাত্র ৪৬ কোটি টাকায় ভূমি অধিগ্রহণ করা সম্ভব। তিনি ওই ব্যয়ে ভূমি অধিগ্রহণ করায় এ কাজে ৫৬ কোটি টাকাই সাশ্রয় হয়।

নেত্রকোণার জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশের ব্যতিক্রমী উদ্যোগের কারণে ১০২ কোটি টাকার একটি উন্নয়ন প্রকল্পে সরকারের ৫৬ কোটি টাকা সাশ্রয় হয়েছে। নেত্রকোণা-কলমাকান্দা সড়ক উন্নয়ন ও প্রশস্তকরণ প্রকল্প থেকে এই বিপুল পরিমাণ টাকা সাশ্রয় করা হয়।

জেলা প্রশাসক জানান, সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তরের উদ্যোগে নেত্রকোণার ঠাকুরাকোনা থেকে কলমাকান্দা সদর পর্যন্ত ২৪ কিলোমিটার সড়ক উন্নয়নের কাজ চলছে বছর চারেক ধরে। সড়ক উন্নয়ন, প্রশস্তকরণ, সংস্কার ও ১১টি সেতু নির্মাণ বাবদ প্রকল্পটির মোট ব্যয় ধরা হয়েছিল ৩২৮ কোটি টাকা। এর মধ্যে শুধু ভূমি অধিগ্রহণের ব্যয় ধরা হয় ১০২ কোটি ৪৮ লাখ টাকা। আর বাকি ২২৬ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয় সড়ক উন্নয়ন, প্রশস্তকরণ ও সেতু নির্মাণের কাজে।

ইতোমধ্যে সড়কের ১১টি সেতু নির্মাণের কাজ শেষ হয়েছে। করা হয়েছে সড়ক উন্নয়নের কাজও। কিন্তু ভূমি অধিগ্রহণ না করার অজুহাতে সেতুগুলোর অ্যাপ্রোচ সড়ক নির্মাণ ও সড়ক প্রশস্তকরণের বেশ কিছু কাজ দীর্ঘদিন ধরে থেমে থাকায় প্রকল্পটির কাজ শেষ করা যাচ্ছিল না। আর এ কারণে অবসান হচ্ছিল না জনভোগান্তির।

সম্প্রতি নেত্রকোণার জেলা প্রশাসক বিষয়টি সম্পর্কে জানতে পেরে দ্রুত অধিগ্রহণের কাজ শেষ করার উদ্যোগ নেন। কিন্তু অধিগ্রহণের কাজ করতে গিয়ে তিনি দেখেন, অধিগ্রহণ বাবদ যে পরিমাণ টাকা বরাদ্দ আনা হয়েছে, প্রকৃতপক্ষে নির্ধারিত ভূমির দাম তার অধের্কেরও কম।

সন্দেহ দেখা দিলে তিনি ভূমি প্রশাসনের ১০ জন সার্ভেয়ারের মাধ্যমে একটি জরিপকাজ পরিচালনা করান। তাতে দেখা যায়, মাত্র ৪৬ কোটি টাকা হলেই ভূমি অধিগ্রহণ করা সম্ভব। যথারীতি তিনি তাই করেন। ৪৬ কোটি টাকা ব্যয় ধরে অধিগ্রহণের কাজ শেষ করেন এবং সড়ক ও জনপথ বিভাগকে জমি বুঝিয়ে দেন।

জেলা প্রশাসকের এ উদ্যোগের কারণে ১০২ কোটি টাকার ভূমি অধিগ্রহণের কাজে ৫৬ কোটি টাকাই সাশ্রয় হয়।

জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ জানান, সাশ্রয় করা ৫৬ কোটি টাকা সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ে ফেরত পাঠানো হবে। তিনি বলেন, ‘আমরা অধিগ্রহণ করা জমি সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরকে বুঝিয়ে দিয়েছি। আশা করছি, তারা এখন দ্রুততার সঙ্গে প্রকল্পটির কাজ শেষ করবে।’

এদিকে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী শাহরিয়ার শারিফ খান বলেন, ‘প্রকল্পটির প্রাক্কলন তৈরি করা হয়েছিল অনেক আগে। তখন জেলা প্রশাসনের মতামত নিয়েই ভূমির মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছিল।’

সুশাসনের জন্য প্রচারাভিযানের (সুজন) জেলা শাখার সভাপতি শ্যামলেন্দু পাল বলেন, ‘১০২ কোটি টাকার কাজে ৫৬ কোটি টাকা সাশ্রয় একটি ব্যতিক্রমী ঘটনা। এতে প্রতীয়মান হয়, প্রকল্পটির প্রস্তাব তৈরির সময় যারা সম্ভাব্য ব্যয় নির্ধারণ করেছিলেন, তারা ভুল করেছিলেন অথবা অনর্থক বেশি টাকা বরাদ্দ এনেছিলেন। জেলা প্রশাসকের উদ্যোগের কারণে সরকারের এই বিপুল টাকা বেঁচে গেল।’

তিনি আরও বলেন, ‘ঠিকমতো মনিটর ও তদারিক করলে অনেক উন্নয়নকাজে এভাবে অর্থ সাশ্রয় করা সম্ভব।’

এ বিভাগের আরো খবর