ময়মনসিংহের ফুলপুরে উদ্ধার মরদেহ মরিয়ম মান্নানের কি না- তা নিশ্চিত হতে ডিএনএ নমুনা পরীক্ষার অনুমতি দিয়েছে আদালত। জেলার মুখ্য বিচারিক ৬ নম্বর আমলি আদালতের বিচারক কে.এম রওশন জাহান রোববার বিকেলে এ অনুমতি দেন।
মরিয়মের শুক্রবার করা আবেদন আমলে নিয়েছেন বিচারক। অথচ শনিবার রাতেই মরিয়মের মা রহিমা বেগমকে অক্ষত অবস্থায় ফরিদপুর থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। এ খবরে আলোড়িত গোটা দেশ।
আদালত পরিদর্শক মো. জসিম উদ্দিন আদালতের ডিএনএ টেস্টের অনুমতি দেয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, গত শুক্রবার বিকেলে ময়মনসিংহের ফুলপুর থানায় করা মরিয়মের আবেদনটি শনিবার অনুমতির জন্য আদালতে তুলেছিল পুলিশ। বিচারক রোববার বিকেলে সেটির অনুমতি দেন।
ওসি আব্দুল্লাহ আল মামুন নিউজবাংলাকে জানান, গত ১০ সেপ্টেম্বর বেলা ১১টার দিকে উপজেলার বওলা ইউনিয়নের পূর্বপাড়া গ্রাম থেকে বস্তাবন্দি গলিত মরদেহ পাওয়া যায়। সেটি একজন নারীর। মরদেহ গলিত হওয়ায় ময়মনসিংহের পিবিআই সেটির হাতের আঙ্গুলের ছাপ নিতে পারেনি। পরে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে ১২ সেপ্টেম্বর সমাহিত করা হয়। তবে মরদেহটির ডিএনএ নমুনা সংরক্ষণ করা হয়।
ওসি বলেন, ‘গত শুক্রবার সকালে থানায় এসে ওই মরদেহের ছবি দেখে মরিয়ম মান্নান শতভাগ নিশ্চিত হয়ে বলেছিলেন শরীর, কপাল, হাত ও সালোয়ার-কামিজ তার নিখোঁজ মায়ের। তিনি তার মাকে চিনতে ভুল করেননি। এমন অবস্থায় ডিএনএ টেস্টের পরামর্শ দেয়া হলে তিনি আবেদন করেন। পরে আবেদনটি আদালতে অনুমতির জন্য পাঠানো হয়। কিন্তু বিচারক অনুমতি দেয়ার আগেই অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করা হয় রহিমা বেগমকে।’
ডিএনএ টেস্টের আবেদনটি আদলতে অনুমোদন পাওয়ার পর কী করা হবে- এমন প্রশ্নে ওসি বলেন, ‘রহিমা নামের ওই নারীকে উদ্ধার করতে না পারলে রোববারই তার মেয়ের ডিএনএ নমুনা পরীক্ষার প্রচেষ্টা চালানো হতো। কিন্তু এখন আরেকটি আবেদনে লিখতে হবে নারীকে উদ্ধার করা হয়েছে। পরে আদালতে সেটি জমা দিতে হবে।’
এদিকে মরিয়মের মাকে জীবিত উদ্ধারের পর অজ্ঞাত ওই মরদেহটির পরিচয় নিয়ে বিপাকে পড়েছে পুলিশ। কোনো ক্লু-ই মিলছে না এ বিষয়ে। কর্মকর্তারা বলছেন, তারা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
মেয়েটিকে শ্বাসরোধে হত্যার আলামত স্পষ্ট বলে জানিয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
ফুলপুর থানার ওসি আব্দুল্লাহ আল মামুন নিউজবাংলাকে জানান, মরদেহটি উদ্ধারের পরই সংবাদমাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়। ছবিসহ জামাকাপড় ফেসবুকে পোস্ট করা হয়।
এ ছাড়া দেশের বিভিন্ন থানায় মরদেহের বয়সসহ সব আলামতের বর্ণনা পাঠিয়ে খোঁজ করা হচ্ছে। তবে এখন পর্যন্ত ওই নারীর খোঁজ পেতে থানায় কেউ এসেছেন এমন তথ্য পাওয়া যায়নি।
প্রায় এক মাস ধরে খুলনার দৌলতপুরের মহেশ্বরপাশা থেকে মা নিখোঁজের অভিযোগ করে মরিয়ম মান্নানের পোস্টগুলো ফেসবুকে ভাইরাল হয়।
শনিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার সৈয়দপুর গ্রামের একটি ঘর থেকে অক্ষত অবস্থায় রহিমাকে উদ্ধার করে পুলিশ।