সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে যুদ্ধাপরাধী ও জাতির পিতার খুনিদের আত্মীয়স্বজন নানা অপপ্রচারে লিপ্ত বলে উল্লেখ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একই সঙ্গে তিনি এসব অপপ্রচারের তাৎক্ষণিক জবাব দিতে প্রবাসীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশন উপলক্ষে যুক্তরাষ্ট্রে সফররত প্রধানমন্ত্রী শনিবার নিউ ইয়র্কে প্রবাসী বাংলাদেশিদের এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে এই আহ্বান জানান।
ভার্চুয়াল মাধ্যমে অনুষ্ঠিত এই সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনা বলেন, ‘যুদ্ধাপরাধী ও জাতির পিতার খুনিদের আত্মীয়স্বজনের পাশাপাশি দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়া অর্থ পাচারকারীসহ নানা অপরাধী এই অপপ্রচারের নেপথ্যে রয়েছে। আমাদের বিরুদ্ধে চালানো অপপ্রচারের তাৎক্ষণিক উপযুক্ত জবাব দিন।
‘সোশ্যাল মিডিয়ায় যারা অপপ্রচার চালাচ্ছে, তাদের বেশির ভাগকেই অপকর্মে জড়িত থাকার জন্য চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে। অনেকে অপরাধ করে দেশ ছেড়ে পালিয়েছে। তাদের কথায় কর্ণপাত করবেন না, বরং আমাদের উন্নয়নকে জনগণের সামনে তুলে ধরুন।’
প্রবাসীদের উদ্দেশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের উন্নয়ন সম্পর্কে আপনার এলাকার কংগ্রেসম্যান, সিনেটর ও নির্বাচিত প্রতিনিধিদের অবহিত করুন। তাদের সঙ্গে যোগাযোগ বজায় রাখুন। বিএনপি-জামায়াত জোট ও আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বাজেটের আকারের তুলনামূলক চিত্র দেখে তাদের দ্বারা কতটা উন্নয়ন হয়েছে তা বিচার করতে পারবেন।
‘বিএনপি আমলে বাজেটের আকার ছিল মাত্র ৬০ হাজার কোটি টাকা। আওয়ামী লীগ সরকারের শেষ বাজেট ছিল ৬ লাখ কোটি টাকার ওপরে। বাংলাদেশ এখন বিশ্বে যে মর্যাদা ও সম্মান অর্জন করেছে, তা সমুন্নত রাখতে আপনাদের সবার প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।’
মিথ্যা ও বানোয়াট অভিযোগ এনে পদ্মা সেতু প্রকল্প থেকে বিশ্বব্যাংকের তহবিল প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়ায় প্রবাসীদের ধন্যবাদ জানান সরকারপ্রধান। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের সিদ্ধান্ত বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি বদলে দিয়েছে। এই সেতু নির্মাণ প্রমাণ করেছে যে বাংলাদেশ যা বলে তা করার ক্ষমতা রাখে।’
জলবায়ু পরিবর্তন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, নিষেধাজ্ঞা ও পাল্টা নিষেধাজ্ঞার কারণে বিশ্বে আসন্ন তীব্র খাদ্যসংকট সম্পর্কে দেশবাসীকে সতর্ক করে সবাইকে আরও বেশি করে খাদ্য উৎপাদনের তাগিদ দেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘একটি প্রকট খাদ্যসংকট আসন্ন। তাই দেশে আপনাদের স্বজনকে বলুন- বিভাজনের কারণে দেশের কোনো জমিই অনাবাদি রাখা যাবে না।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘২০০৯ সাল থেকে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া অনুসরণ করে বাংলাদেশ এখন আর্থসামাজিকভাবে উন্নত হচ্ছে। বিএনপি-জামায়াত জোট বারবার অগ্নিসংযোগ, সন্ত্রাস ও হত্যার সংস্কৃতির আশ্রয় নিয়ে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা করেছে। কিন্তু জনগণ কখনই তাদের কর্মকাণ্ডে সাড়া দেয় না। কারণ তারা হত্যা, দুর্নীতি, অর্থ পাচার, অস্ত্র ব্যবসাসহ নানা অপকর্মে জড়িত।’
সংকটকালীন দেশের পাশে থেকে প্রবাসীদের নিজ দেশে আরও বিনিয়োগ করার আহ্বান জানান সরকারপ্রধান।