সারা দেশের মানুষ উত্তাল হয়ে উঠেছে, আর কোনো ব্যারিকেড দিয়ে সরকার তাদের রুখতে পারবে না। হাতিশালে হাতি, ঘোড়াশালে ঘোড়া থাকলেও আওয়ামী লীগ আর সিংহাসনে থাকতে পারবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ন মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
আন্দোলনে যারা নিহত হয়েছেন, তাদের নিয়ে যারা বিভ্রান্তিমূলক কথা ছড়াচ্ছে, একদিন তারাও রেহাই পাবে না বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি।
রাজধানীতে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে রোববার বাংলাদেশ লেবার পার্টির উদ্যোগে বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি ও নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের উদ্যোগগতি নিয়ন্ত্রণের দাবিতে এক সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, ‘বর্তমান দেশের যে পরিস্থিতি তা আর চলতে দেয়া যাবে না। গুলি করবেন? সেই গুলিতে শরীর থেকে রক্ত ঝরবে; সেই রক্ত যে মাটিতে পড়বে সেই মাটি আরও তেজস্বী হয়। সেই মাটি অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিরোধে আরও অঙ্গীকারবদ্ধ হয়। দুই শাওন, নারায়ণগঞ্জের এবং মুন্সিগঞ্জের আব্দুর রহিম, নূরে আলমের যে রক্ত ঝরেছে নিশ্চয়ই এটা বৃথা যাওয়ার জন্য নয়।’
তিনি বলেন, ‘সারা দেশের মানুষ উত্তাল হয়ে উঠেছে, আর কোনো ব্যারিকেড দিয়ে রুখতে পারবেন না। পথে-ঘাটে-মাঠে এমন ব্যারিকেড তৈরি হবে। আজ যারা ফালতু কথা বলছে, হত্যা করার পরেও যারা নানাভাবে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে, জনগণের আক্রোশ থেকে তারা রেহাই পাবেন না।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘মিথ্যা কথা বলে, জনগণের টাকা লুট করে আপনারা মনে করেছেন আপনাদের সাধের সিংহাসন ঠিক থাকবে। হাতিশালে হাতি আর ঘোড়াশালে ঘোড়া থাকবে, এই সুখের স্বপ্ন আর আপনাদের থাকবে না।’
প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে বিএনপির মুখপাত্র বলেন, ‘জনগণ প্রস্তুত আছে চূড়ান্ত আঘাতের জন্য। আপনি বন্দুক দিয়ে জনগণের শক্তিকে দমাতে পারবেন না। সেই রাইফেল জনগণের শক্তি কোন দিকে ঘুরিয়ে দিবে সেটা চিন্তা করে কথা বলবেন। এখনো সময় আছে, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করুন।’
নির্বাচন কমিশনার শেখ হাসিনার চাকর বলেও মন্তব্য করেন রিজভী। বলেন, ‘এরা নির্বাচন কী করবে? শেখ হাসিনা যদি এ কে বি বলে, এরাও বি ই বলবে। শেখ হাসিনা যদি দিনকে রাত বলে, এরা তাই বলবে। তাই এই চাকর-বাকর দিয়ে অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব হবে না।
‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার এসে সবার গ্রহণযোগ্য একটা নির্বাচন কমিশন গঠন করবে সেই নির্বাচনের অধীনেই সুষ্ঠু নির্বাচন হবে। সেই নির্বাচনের গ্যারান্টি গণতন্ত্রের মা মুক্তি।’
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া জীবনের সব সুখ-শান্তি বিসর্জন দিয়ে গণতন্ত্রের পক্ষে কাজ করছেন বলেও জানান তিনি। তাই তাকে এখনো সরকার ভয়ে মুক্তি দিচ্ছে না বলেও উল্লেখ করেন।
একজনকে মারলে আওয়ামী লীগ সরকার ১০ জনকে মারে। অথচ জাতিসংঘে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী শান্তির পক্ষে বক্তব্য দিচ্ছেন দাবি করে বলেন, তার এমন বক্তব্য দেয়া মানায় না।
সমাবেশে আয়োজক সংগঠনের চেয়ারম্যান ডাক্তার মুস্তাফিজুর রহমান ইরানসহ সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।