গাজীপুরে এক যুবককে চুরির অপবাদে ডেকে নিয়ে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে।
শ্রীপুরে শনিবার ভোররাতে এ ঘটনা ঘটে।
৩০ বছর বয়সী নিহত রানা মিয়ার বাড়ি উপজেলার মুলাইদ গ্রামে। তিনি স্থানীয় একটি কারখানায় চাকরি করতেন।
এ ঘটনায় অভিযুক্তরা হলেন ২৫ বছরের মো. শিপন মিয়া, ২২ বছরের আকাশ মিয়া, ২৫ বছরের উজ্জল মিয়া ও ২৬ বছরের ইমন।
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান নিউজবাংলাকে এসব তথ্য জানান।
নিহতের স্বজনদের বরাতে তিনি জানান, অভিযুক্ত শিপন ভাঙ্গারির ব্যবসা করেন। এলাকা থেকে ভাঙ্গারি মালামাল সংগ্রহ করতে ব্যবহার করা হতো ১৫টি ভ্যানগাড়ি। সম্প্রতি বিভিন্ন সময় শিপনের পাঁচটি ভ্যানগাড়ি চুরি হয়। শনিবার রাত ৩টার দিকে রানাকে ভ্যানগাড়ি চুরির অভিযোগে এনে আটকে রাখে শিপন।
পরে রাত থেকে দিনভর মারধর ও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় রানাকে। স্থানীয়দের অনুরোধ উপেক্ষা করে সবার সামনেই রানাকে মারধর করে অভিযুক্তরা। মারধরে তিনটি ভ্যানগাড়ি চুরির কথা স্বীকার করে রানা। পরে স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর রেখে ছেড়ে দেয়া হয় রানাকে। স্বজনরা স্থানীয়দের সহায়তায় রানাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বিকেলে তার মৃত্যু হয়।
নিহতের বাবা আমিরুল ইসলাম জানান, অভিযুক্তদের হাত থেকে ছেলেকে উদ্ধার করে প্রথমে শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হয়। সেখানে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানকার চিকিৎসক তাকে উন্নত চিকিৎসার পরামর্শ দিলে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, ‘আমি বারবার আকুতি-মিনতি করলেও আমার ছেলেকে তারা ছাড়ল না, আমি তাদের পায়ে পর্যন্ত ধরেছি। তবুও তারা আমার কথা শুনল না। সবশেষ আমার ছেলেকে মেরেই ফেলল। আমার ছেলেকে তুলে নিয়ে দফায় দফায় নির্যাতন করে বুকের পাজর, দুই হাত ও পা ভেঙে দেয়। আমার ছেলের শরীরের এক ইঞ্চি পরিমাণ জায়গা নেই যে ওই স্থানে আঘাত করেনি। আমার ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে, আমি হত্যাকারীদের বিচার চাই, বিচার চাইতে হাসপাতাল থেকে অ্যাম্বুলেন্সে লাশ নিয়ে সরাসরি থানায় এসেছি।’
তবে এ ঘটনার পর থেকে অভিযুক্তরা গা ঢাকা দিয়েছেন। এ বিষয়ে অভিযুক্ত ব্যবসায়ী শিপনের বাড়িতে গেলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
এ সময় তার মা বলেন, ‘শিপন ব্যবসার কাজে এলাকার বাইরে আছে।’
ওসি মনিরুজ্জামান বলেন, ‘এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন। অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করতে কাজ করছে পুলিশ।’