নিজের উপবৃত্তির টাকা না পেয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে একটি চিঠি লিখেছিল রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলার তেবিলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণির ছাত্র জুনাইদ সিদ্দিক।
রিকশাচালক বাবার সামর্থ্য না থাকায় ছেঁড়া ছাতা আর ছেঁড়া ব্যাগ নিয়ে স্কুলে যেতে হচ্ছে- এমন কষ্টের কথা চিঠিতে জানিয়েছিল জুনাইদ।
সেই চিঠি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে হলো ভাইরাল!
এ চিঠি নজরে আসায় শনিবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সোহেল রানা জুনাইদের হাতে উপহার হিসেবে তুলে দেন নতুন স্কুলব্যাগ, ছাতা, খাতা-কলমসহ আরও বেশ কিছু শিক্ষা উপকরণ।
দুর্গাপুর উপজেলার রঘুনাথপুর গ্রামের রিকশাচালক সিরাজুল ইসলামের ছেলে জুনাইদ সিদ্দিক। তার লেখা ভাইরাল চিঠিতে জানা গেছে, সরকারের দেয়া তার উপবৃত্তির টাকা কেউ তুলে নিয়েছে। তাই তার মন খারাপ।
চিঠিতে জুনাইদ লিখেছে, ‘আমার উপবৃত্তির টাকা আমি এখনও পাইনি। বাবা বলেছিল, উপবৃত্তির টাকা পেলে স্কুলব্যাগ আর ছাতা কিনে দেবে। কিন্তু আর তা হলো না। স্যারদের মাধ্যমে জানতে পারলাম, কেউ আমার টাকা তুলে নিয়েছে। প্রতিদিন আমাকে ছেঁড়া স্কুলব্যাগ আর ভাঙা ছাতা নিয়ে স্কুলে যেতে হয়। তাতে আমার কোনো দুঃখ নেই। এরপর যেন এমনটি না হয় এটাই দাবি।’
জুনাইদের চিঠির বিষয়ে তেবিলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাফির উদ্দিন বলেন, ‘তার বাবা একজন রিকশাচালক। ছেলেকে তিনি নতুন ব্যাগ আর ছাতা কিনে দিতে পারেন না। ছেলেকে বলেছিলেন, উপবৃত্তির টাকাটা দিয়ে তাকে ব্যাগ-ছাতা কিনে দেবেন। কিন্তু সেটি হয়নি। কেউ তাদের টাকা তুলে নিয়ে গেছে।’
প্রধান শিক্ষক জানান, প্রতিটি শিক্ষার্থীকে নতুন পোশাকের জন্য ১ হাজার টাকা ও ছয় মাসের উপবৃত্তি হিসেবে ৯০০ টাকা দেয়া হয়। কিন্তু অনেক শিক্ষার্থীর নগদ অ্যাকাউন্ট হ্যাক করে কেউ টাকা তুলে নিয়ে গেছে।
শনিবার উপজেলা হলরুমে মিনা দিবসের অনুষ্ঠানে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সোহেল রানা ব্যক্তিগত উদ্যোগে জুনাইদের হাতে উপহারসামগ্রী তুলে দেন।
এ সময় ভবিষ্যতে যেন আর কেউ তার মতো বিড়ম্বনায় না পড়ে, সে জন্য ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানান ইউএনও।
ইউএনও বলেন, ‘শিশুটির উপবৃত্তির টাকা প্রদানের জন্য সংশ্লিষ্টদের অনুরোধ করা হয়েছে। ভবিষ্যতে আর কেউ এ রকম বিড়ম্বনায় না পড়েন তার জন্য সবাইকে সজাগ থাকতে হবে।’