‘সংবিধান ধর্মীয় গ্রন্থ নয় যে পরিবর্তন করা যাবে না। যুগে যুগে কালে কালে সংবিধান পরিবর্তন হয়েছে। এই সংবিধানের ১৭টা সংশোধনী ইতোমধ্যে হয়ে গেছে। প্রয়োজনে আরও ১৭টা হবে।’
গণঅধিকার পরিষদের সদস্য সচিব নুরুল হক নুর শনিবার এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন।
জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘আগামীর বাংলাদেশ বিনির্মাণে সংবিধান সংস্কার ও নাগরিক ভাবনা’ শীর্ষক এই আলোচনা সভার আয়োজন করে বাংলাদেশ আইনজীবী অধিকার পরিষদ।
সভায় নুর বলেন, ‘সরকারি দলের সিনিয়র নেতারা গোঁয়াড়ের মতো কথা বলছেন। তারা বলছেন যে সংবিধান থেকে এক চুল নড়া যাবে না। আপনারা বহু চুল নাড়িয়ে সংবিধানটাকে কাটা-ছেঁড়া করেছেন। এখন বলছেন এক চুল নড়া যাবে না। জনগণ চাইলে এক চুল না বহু চুল আপনাদের নড়তে হবে। সংবিধানের ধারা পরিবর্তন হবে নাকি পুরো সংবিধান পরিবর্তন হবে সেই আলোচনা জোরেশোরে তোলা দরকার।’
ডাকসুর এই সাবেক ভিপি বলেন, ‘দেশের শিক্ষিত মহল, সুশীল সমাজ যারা দেশ, সমাজ ও রাষ্ট্রকে নিয়ে ভাবেন তাদের কনসার্ন এখন এই জায়গায়- দেশটা যে জায়গায় এসে দাঁড়িয়েছে এখান থেকে উত্তরণটা কীভাবে?
‘শুধু একটি নির্বাচন দিয়ে উত্তরণ সম্ভব নয়। এক দলকে ক্ষমতা থেকে ফেলে আরেক দলকে ক্ষমতায় নিলেও এই অবস্থার উত্তরণ রাতারাতি সম্ভব নয়। বর্তমান সরকার ক্ষমতাকে যেভাবে কুক্ষিগত করেছে এবং সব জায়গায় যেভাবে দলীয়করণ করেছে তাতে করে একে ফেলে আরেকজনকে চেয়ারে বসিয়ে দিলে সে-ও একই চর্চায় এগিয়ে যাবে।
‘অবশ্যই আমরা এই সরকারের পরিবর্তন চাই। সঙ্গে সঙ্গে এই সরকার গত ১৩ বছরে যেভাবে স্বৈরতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা রাষ্ট্রের রন্ধ্রে রন্ধ্রে ঢুকিয়েছে সেটারও পরিবর্তন চাই।’
প্রশ্ন তুলে নুর বলেন, ‘এক পক্ষ রাস্তায় নামছে। আরেক পক্ষ পিটিয়ে নাক-মুখ ফাটিয়ে দিচ্ছে। আর পুলিশ গুলি চালাচ্ছে। যাদের হাতে বন্দুক থাকার নিয়ম নেই তারাও সিনেমার স্টাইলে গুলি চালাচ্ছে। মানুষ মেরে ফেলছে। এই বর্বতার শেষ কোথায়?
‘বিরোধী দল প্রতিবাদ করবে। সেটা দেখার জন্য পুলিশ আছে। সরকার কেন হুমকি দেবে- রাজপথে দেখে নেয়া হবে, প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে?’
গণঅধিকার পরিষদের এই নেতা আরও বলেন, ‘আমাদের দেশের বুড়ো রাজনীতিবিদদের ভাষা ছাত্র-যুব সংগঠনের মাস্তানদের মতো। তারা বলছেন- ফাইনাল খেলা তো তারা খেলতেই পারবে না লীগ খেলেই বিদায় হবে।
‘আপনারা নির্বাচন ব্যবস্থাকে জুয়া খেলায় পরিণত করেছেন। সংসদকে ফান ক্লাব বানিয়েছেন। সংবিধান পরিবর্তন ছাড়া, সংবিধান নতুন করে রচনা ছাড়া এ জাতির মুক্তি নেই।’