নোয়াখালী জেলা শহরে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ুয়া স্কুলছাত্রীকে গলাকেটে হত্যার ঘটনায় স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দী দিয়েছেন গৃহশিক্ষক আবদুর রহিম রনি। ৩০ বছর বয়সী রনি নোয়াখালী পৌরসভার লক্ষ্মীনারায়নপুর এলাকার খলিল মিয়ার ছেলে।
শনিবার বিকেলে নোয়াখালী মুখ্য বিচারিক আদালতের জেষ্ঠ্য হাকিম মো. এমদাদ এর আদালতে রনির স্বীকারোক্তি লিপিবদ্ধ করা হয়।
সন্ধ্যায় নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি নিশ্চিত করেন পুলিশ সুপার শহিদুল ইসলাম।
তিনি জানান, সাবেক গৃহ শিক্ষক রনি বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে বাসার দরজা নক করলে ওই ছাত্রী খুলে দেন। এ সময় রনি বাসায় ঢুকে গল্প গুজব করে।
এক পর্যায়ে রনি ওই স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টা চালান। কিন্তু স্কুলছাত্রী তাকে বাধা দেয়। এ সময় ধস্তাধস্তিতেই রনির ঘাড় ও গলায় আঁচড়ের চিহ্ন বসে যায়।
এ ঘটনা সবাইকে জানিয়ে দেয়ার হুমকি দিলে স্কুলছাত্রীকে প্রথমে বালিশ চাপা দিয়ে হত্যা করেন রনি। পরে মৃত্যু নিশ্চিত করতে ঘরে থাকা ছোরা দিয়ে তার গলা ও হাতের রগ কেটে দেন।
এ ছাড়া ঘটনা ভিন্ন খাতে নেওয়ার জন্য ঘরের আলমারিতে থাকা জিনিসপত্র ছড়িয়ে ছিটিয়ে রাখেন।
পুলিশ সুপার বলেন, ‘স্বীকারোক্তিতে রনি বলে- টিভিতে ক্রাইম পেট্রোল দেখে হত্যাকাণ্ড থেকে নিজেকে আড়াল রাখার কৌশল রপ্ত করেছিল সে।’
বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে নোয়াখালী জেলা শহরের লক্ষ্মীনারায়নপুর এলাকার জাহান মঞ্জিলের একটি কক্ষ থেকে স্থানীয় একটি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণির ছাত্রীর গলাকাটা ও অর্ধনগ্ন মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। রাতেই প্রধান অভিযুক্ত হিসেবে ওই ছাত্রীর সাবেক গৃহশিক্ষক আবদুর রহিম রনিকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পুলিশ জানায়, ওই শিক্ষককের শরীর ও গলায় নখের আঁচড়ের চিহ্ন দেখে এ ঘটনার সঙ্গে তার সম্পৃক্ততা সন্দেহ করা হয়। এ ঘটনায় সন্দেহভাজন আরও তিনজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
এদিকে, এ হত্যার প্রতিবাদ ও বিচার চেয়ে মানববন্ধন করেছে বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা। হত্যার প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে উঠেছে নোয়াখালীর শিক্ষাঙ্গন ও রাজপথ।
শনিবার দুপুরে নোয়াখালী প্রেসক্লাব ও জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে নোয়াখালীর বিভিন্ন স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরা ঘণ্টাব্যাপি এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়। এ সময় হাজারো শিক্ষার্থী এসএসসি পরীক্ষা শেষ করে মানববন্ধনে অংশ নেন। তারা স্কুলছাত্রী হত্যার প্রধান আসামি রনির ফাঁসি দাবি করেন।