ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলায় নাকের পলিপাস অস্ত্রোপচারের পর রুহুল আমিন নামের এক রোগীর মৃত্যু হয়েছে।
দেশ জেনারেল হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে শুক্রবার গভীর রাতে অস্ত্রোপচার হয় রুহুলের। শনিবার সকালে হাসপাতালের সামনে তার মরদেহ পান স্বজনরা।
এ ঘটনায় রুহুলের স্বজনদের বিক্ষোভের পর হাসপাতাল বন্ধ করে দেয় কর্তৃপক্ষ।
দেশ জেনারেল হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের গেটে তালা দেয় কর্তৃপক্ষ। ছবি: নিউজবাংলা
ভাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিয়ারুল ইসলাম জানিয়েছেন, পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে গেছে।
অস্ত্রোপচারের পর প্রাণ হারানো রুহুল আমিনের বাড়ি ভাঙ্গার ত্রিপাগদী এলাকায়। তার ৬ মাস বয়সী ছেলে রয়েছে।
তাকে অস্ত্রোপচারকারী চিকিৎসকের নাম মারুফ শাহরিয়ার। ঘটনার বিষয়ে জানতে মোবাইলে যোগাযোগ করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
কী বলছে রুহুলের পরিবার
রুহুল আমিনের মা ৬৫ বছর বয়সী ছবেদা খাতুন বলেন, ‘আমার ভালো ছেলে বাড়ি থেকে আসল। অপারেশন করার পরেই রাতে কোন সময় মরল, বুঝতে পারলাম না।
‘সকালে ফরিদপুর পাঠানোর কথা বলে রোডের সামনে রেখে দেছে আমার বাজানরে। ওরে কসাই; আমার বাজানরে মাইরা পালায় গেছে।’
রুহুলের ছোট ভাই আল-আমিন বলেন, ‘আমার ভাই বিদেশে ছিল। বিদেশ থেকে দেশে এসে প্রায় ২ বছর আগে বিয়ে করে। তারপর কৃষিকাজ করে সংসার চালাত। আমার ভাইয়ের অপারেশন করেছে ডা. মোহাম্মদ মারুফ শাহরিয়ার।’
প্রাণ হারানো রোগীর ফুফাতো বোন আলে বেগম জানান, তার মামাতো ভাই রুহুল আমিন শুক্রবার বিকেলে পলিপাস অস্ত্রোপচারের জন্য দেশ জেনারেল হাসপাতালে যান। রাতে তার অস্ত্রোপচার হয়।
তিনি আরও জানান, শনিবার সকালে ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানোর কথা বলে রুহুলের মরদেহ ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সামনের সড়কে রেখে প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ করে পালিয়ে যায় কর্তৃপক্ষ।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের ভাষ্য
দেশ জেনারেল হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মামুন চোকদার শনিবার দুপুরে নিউজবাংলাকে বলেন, ‘শুক্রবার রাত ১২টার দিকে অপারেশন ভালোভাবেই হয়। শনিবার সকাল ৬টার দিকে ওই রোগীর শ্বাসকষ্ট ও বুকে ব্যথা দেখা দেয়।
‘তাকে ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানোর জন্য হাসপাতালের সামনের সড়কে নেয়া হয়। ওই সময় তার মৃত্যু হয়।’
‘অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা’
এ বিষয়ে ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মহসিন উদ্দিন ফকির বলেন, ‘ঘটনাটি মৌখিকভাবে আমি শুনেছি, তবে রোগীর স্বজনদের পক্ষ থেকে কেউ আমাকে মৌখিক কিংবা লিখিত কোনো অভিযোগ করেনি।
‘লিখিত অভিযোগ পেলে ফরিদপুরের সিভিল সার্জনের সঙ্গে কথা বলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
ভাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জিয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘নাকের পলিপাস অপারেশন করতে গিয়ে রুহুল আমিন নামে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে—এমন খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে যাই। হাসপাতালটি বন্ধ পাই। লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসি।
‘এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নিতে রোগীর স্বজনকে থানায় এসে লিখিত অভিযোগ দিতে বলা হয়েছে।’