রমনা থানা ছাত্রলীগের এক নেতাকে হত্যার আট বছর পর এ মামলার এক পলাতক আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
মাদক ব্যবসায়ীদের দেয়া তথ্যে বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীর দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে র্যাব-৩।
গ্রেপ্তার মো. ইকবাল হোসেন তারেক ২০১৪ সালে রমনা থানা ছাত্রলীগের তৎকালীন সহসভাপতি মাহবুবুর রহমান ওরফে রানাকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় অন্যতম প্রধান পলাতক আসামি।
শুক্রবার রাজধানীর কারওয়ান বাজার র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান র্যাব-৩-এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ।
তিনি জানান, তারেক তৎকালীন সুইফ ক্যাবল লিমিটেড নামে ডিশ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে চাকরি করতেন। প্রতিষ্ঠানটির মালিক কামরুল ইসলাম ও তানভিরুজ্জামান রনির সঙ্গে ছাত্রলীগ নেতা রানার ব্যবসায়িক বিরোধ ছিল।
এই বিরোধের জেরে এক পক্ষ আরেক পক্ষের ডিশের ক্যাবল কেটে দিত এবং প্রায়ই মারামারি হতো। এরই ধারাবাহিকতায় ২০১৪ সালের ২৩ জানুয়ারি সন্ধ্যায় রানা মোটরসাইকেলে করে মগবাজার চৌরাস্তা থেকে মসজিদের পাশের গলিতে প্রবেশ করলে তার মুখে ও মাথায় এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে তারেকসহ অন্যরা। পরে স্থানীয়রা রানাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
র্যাব-৩ অধিনায়ক আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ জানান, এ ঘটনার মামলার তদন্ত শেষে ২০১৫ সালে ১৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেন তদন্তকারী কর্মকর্তা। এর মধ্যে ১০ জন গ্রেপ্তার এবং চারজন পলাতক। পলাতকদের মধ্যে ইকবাল হোসেন তারেক একজন, তার নামে ২০২০ সালে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে আদালত।
তিনি জানান, ২০১৪ সালের ২৩ জানুয়ারি রানা হত্যাকাণ্ডের পর তারেক প্রথমে পালিয়ে চাঁদপুরের নিজ বাড়িতে চলে যান। চাঁদপুর বাড়ি হলেও তার বেড়ে ওঠা ছিল যশোরে। তাই তাকে না চেনার সুযোগে নিজেকে তাহের হিসেবে পরিচয় দেন। এর মধ্যে চাষাবাদের চেষ্টা করে সুবিধা করতে না পেরে আবার যশোর চলে যান। কিছুদিন পরিবহন শ্রমিক হিসেবে কাজ করার পর মাদক ব্যবসা শুরু করেন তারেক।
র্যাবের এই কর্মকর্তা জানান, ২০১৯ সালে আবার ঢাকায় এসে তাহের পরিচয়ে বিভিন্ন এলাকায় বসবাস শুরু করেন। গার্মেন্টস থেকে পরিত্যক্ত কার্টন সংগ্রহ করে বিক্রির আড়ালে মাদক ব্যবসা চালিয়ে আসছিলেন তিনি। সর্বশেষ দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ এলাকায় মাদক ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে তার প্রকৃত পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পর ধরা পড়েন তারেক।
তিনি বলেন, ‘তারেক মাদকসহ একাধিকবার বিভিন্ন সময় গ্রেপ্তার হন। কিন্তু নিজেকে তাহের পরিচয় দিয়ে হত্যা মামলার দায় থেকে বেঁচে যান। তার নামে হত্যা, মাদকসহ চারটি মামলার তথ্য পাওয়া গেছে।’