শ্রমিক নেতাদের বিরুদ্ধে মামলার প্রতিবাদে সিলেটে যানবাহন চলাচল হঠাৎ বন্ধ করে দিয়েছেন পরিবহন শ্রমিকরা।
পূর্বঘোষণা ছাড়াই বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে সড়ক অবরোধ করে যান চলাচল বন্ধ করেন তারা।
শ্রমিক নেতাদের বিরুদ্ধে গত ১৪ সেপ্টেম্বর দক্ষিণ সুরমা থানায় মামলার প্রতিবাদে সন্ধ্যা থেকে আন্দোলনে নামেন পরিবহন শ্রমিকরা।
সিলেট জেলা বাস মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়ন সভাপতি মইনুল ইসলাম, সিএনজি অটোরিকশা শ্রমিক ইউনিয়ন সভাপতি জাকারিয়া আহমদ, হিউম্যান হলার শ্রমিক ইউনিয়ন সভাপতি রুহুল মিয়া মইনসহ ২০-৩৫ জনের বিরুদ্ধে মামলাটি করেন লেগুনা শ্রমিক মো. শাহাব উদ্দিন।
মামলায় মারপিট ও টাকা-পয়সা ছিনিয়ে নেয়ার অভিযোগ করা হয়েছে।
এই মামলার প্রতিবাদে সন্ধ্যায় থেকে যানবাহন বন্ধ রেখে সিলেট নগরের বিভিন্ন মোড়ে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছেন শ্রমিকরা।
দূরপাল্লার বাসসহ সিলেটে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ হয়ে পড়েছে। হঠাৎ এমন কর্মসূচিতে দুর্ভোগে পড়েন যাত্রীরা। অনেকেই বাস কাউন্টারগুলোতে বসে আছেন।
রাত ৮টার দিকে নগরের উপশহর, শাহী ঈদগাহ, বালুচর, টিলাগড়, হুমায়ন রশীদ চত্বরসহ বিভিন্ন মোড়ে পরিবহন শ্রমিকরা টায়ারে আগুন দিয়ে বিক্ষোভ করেন।
দক্ষিণ সুরমা থানা পুলিশ জানায়, পরিবহন শ্রমিকদের দুটি গ্রুপ রয়েছে। দুই গ্রুপের বিরোধের জেরে থানায় পাল্টাপাল্টি মামলা হয়। একটি মামলায় পরিবহন শ্রমিক সংগঠনের নেতাদের আসামি করা হয়েছে।
মামলার আট দিন পর আন্দোলনে নামার বিষয়ে সিলেট জেলা বাস মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মইনুল ইসলাম বলেন, ‘মামলার বিষয়টি আমরা আজই জানতে পেরেছি। আজ কয়েকজন শ্রমিক পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে এ ব্যাপারে দেখা করতে যান। তিনি তাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেছেন।’
মইনুল বলেন, ‘যিনি আমাদের নামে মামলা করেছেন, তাকে আগেই শ্রমিক সমিতি থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এই কারণে ক্ষুব্ধ হয়ে তিনি আমাদের নামে চাঁদাবাজি, ছিনতাইয়ের অভিযোগে মিথ্যে মামলা করেন। পুলিশও কোনো তদন্ত ছাড়াই মামলাটি গ্রহণ করে।’
এই শ্রমিক নেতা আরও বলেন, ‘মামলার বিষয়টি জানতে পেরে শ্রমিকরা বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠছে। তারা বিভিন্ন স্থানে সড়ক অবরোধ করে টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করছে। এতে যান চলাচল বন্ধ হয়ে পড়েছে। পুলিশ কমিশনারের অপসারণ ও মামলা প্রত্যাহার না হলে আন্দোলন চলবে।’
দক্ষিণ সুরমা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সুমন কুমার চৌধুরী বলেন, ‘দুই গ্রুপের শ্রমিক নেতাদের বিরুদ্ধে থানায় দুটি মামলা হয়েছে। পুলিশ মামলাগুলো তদন্ত করছে। মামলার এতদিন পর পরিবহন শ্রমিকদের আন্দোলন অযৌক্তিক।’
বৃহস্পতিবার রাতে ঢাকা যাওয়ার উদ্দেশে সিলেটের কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে যান বাসদ নেতা প্রণব জ্যোতি পাল। তিনি বলেন, ‘সব বাস বন্ধ রয়েছে। কেউ টিকিট বিক্রি করছে না। আচমকা এমন কর্মসূচিতে চরম দুর্ভোগে পড়েছি।’