বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

মুন্সীগঞ্জে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে আহত যুবদল কর্মীর মৃত্যু

  •    
  • ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ২২:১৭

ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে বৃহস্পতিবার রাত ৮টা ৪০ মিনিটের দিকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র বা আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মোহাম্মদ শাওন নামে ওই যুবকের মৃত্যু হয়।

ভোলা, নারায়ণগঞ্জের পর এবার মুন্সীগঞ্জের মুক্তারপুর পুরাতন ফেরিঘাটে পুলিশ ও বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষে আহত যুবদলের এক কর্মীর মৃত্যু হয়েছে।

ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে বৃহস্পতিবার রাত ৮টা ৪০ মিনিটের দিকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র বা আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মোহাম্মদ শাওন নামে ওই যুবকের মৃত্যু হয়।

মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ উপপরিদর্শক বাচ্চু মিয়া।

গতকাল বুধবার মুক্তারপুরে পুলিশ-বিএনপি নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের সময় আহত অবস্থায় শাওনসহ তিনজনকে ঢাকা মেডিক্যালে ভর্তি করা হয়।

আহত অন্য দুজন হলেন বিএনপির কর্মী জাহাঙ্গীর হোসেন ও ছাত্রদলকর্মী মোহাম্মদ তারেক।

ভর্তির সময় থেকেই শাওনের অবস্থা আশঙ্কাজনক ছিল বলে জানিয়েছিলেন চিকিৎসকরা।

নিহত শাওনের বন্ধু নাহিদ খান বলেন, বুধবার বিকেলে মুক্তারপুর ব্রিজে পুরাতন ফেরিঘাট নদীর পারে আহত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে জাহাঙ্গীরসহ তিনজনকে তারা উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যালে ভর্তি করেন।

তিনি জানান, মোহাম্মদ শাওন ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালাতেন। তিনি সমাবেশে গিয়ে আহত হয়েছিলেন।

শাওনের বাড়ি মুন্সীগঞ্জের মীরকাদিম পৌর এলাকার মুরমা গ্রামে। তার বাবার নাম সওয়াব আলী। শাওনের মাথায় গুরুতর আঘাত করা হয়েছিল বলে জানান স্থানীয় বিএনপি নেতা মো. সামী।

ঢামেক পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া বলেন, ‘বুধবার ভর্তির পর জাহাঙ্গীরকে নাক-কান-গলা বিভাগ মিরপুর ডেন্টালে পাঠানো হয়েছে, চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। তারেককে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। আর চিকিৎসাধীন অবস্থায় আইসিইউতে শাওন মারা যান।’

এই সংঘর্ষের ঘটনায় বিএনপির ১২০০ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে দুটি মামলা করা হয়েছে। গ্রেপ্তার করা হয়েছে অন্তত ২৪ জনকে।

সদর থানায় বুধবার রাতে করা মামলাদুটির একটি করেছে পুলিশ ও আরেকটি শ্রমিক লীগ কর্মী।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও অর্থ) সুমন দেব জানান, পুলিশের উপর হামলা, অস্ত্র লুটের চেষ্টা ও সরকারি কাজে বাধা দেয়ার ঘটনায় সদর থানায় এসআই মাঈনউদ্দিন মামলা করেন। তাতে প্রধান আসামি করা হয় জেলা বিএনপির সদস্য সচিব কামরুজ্জামান রতনকে। আরও ৩১৩ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত পরিচয় ১ হাজার ২০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। এই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে বুধবার রাতে আটক ২৪ জনকে।

সুমন আরও জানান, মুক্তারপুর এলাকার দোকানপাট ভাঙচুর ও মোটরসাইকেলে আগুন দেয়ার অভিযোগে আরেকটি মামলা করেন স্থানীয় শ্রমিক লীগ কর্মী আব্দুল মালেক। এতে সদর উপজেলা বিএনপির আহবায়ক মহিউদ্দিন আহমেদকে প্রধান আসামী করা হয়েছে। মামলায় ৫২ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে ২০০ জনকে।

যা ঘটেছিল

বুধবার বিকেলে ঘণ্টাব্যাপী চলে এই সংঘর্ষ।

নিউজবাংলার প্রতিবেদক ঘটনাস্থল থেকে জানিয়েছেন, কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে সদর উপজেলা, মুন্সীগঞ্জ শহর ও মিরকাদিম পৌর বিএনপি শহরের মুক্তারপুর এলাকার পুরাতন ফেরিঘাট এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশের আয়োজন করে।

বেলা আড়াইটার দিক থেকে সমাবেশে যোগ দিতে ছোট ছোট মিছিল নিয়ে নেতাকর্মীরা জড়ো হতে থাকেন। পুলিশ সেখানে অবস্থান নেয় আগে থেকেই। এ সময় পুলিশ মিছিলে বাধা দিলে বিভিন্ন মিছিল থেকে ইটপাটকেল ছোড়া শুরু হয়। সে সময় পুলিশ ফাঁকা গুলি ও টিয়ার শেল ছোড়ে।

সদর থানার ওসি তারিকুজ্জামান জানান, অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়।

এ বিষয়ে সদর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মোহাম্মদ মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘পূর্বঘোষণা অনুযায়ী সদর উপজেলা, মুন্সীগঞ্জ শহর ও মিরকাদিম পৌর বিএনপির নেতাকর্মীরা মুক্তারপুর ফেরিঘাট এলাকায় জড়ো হচ্ছিলেন। হঠাৎ পুলিশ আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠে। মিছিলের ব্যানার কেড়ে নেয় ও লাঠিচার্জ করে।

‘এতে নেতাকর্মীরা ক্ষুব্ধ হয়। আমাদের ৭০-৮০ জন আহত হয়েছে। দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। পুলিশের ওপর হামলা হয়েছে এমন কথা আমার জানা নেই।’

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুমন দেব বলেন, ‘কোনো রকমের সভা-সমাবেশের অনুমতি ছিল না। অনুমতি ছাড়া তারা রাস্তা ব্যারিকেড দিয়ে যান চলাচলের বাধা দিচ্ছিল। তাদেরই দুই গ্রুপ নিজেরা নিজেরা মারামারি করছিল। এর কারণেই পুলিশ সরিয়ে দেয়ার জন্য গেছে।

‘এ সময় তারা পুলিশের ওপর অতর্কিত হামলা করেছে। পুলিশ তখন আত্মরক্ষায় ছত্রভঙ্গ করে দেয়। আমাদের পুলিশের বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘যারা অনুমতি ছাড়া এই সমাবেশ করেছে, বিশৃঙ্খলা করেছে, তাদের সবার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

এ বিভাগের আরো খবর