সাফজয়ী বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের সংবর্ধনায় খোলা বাসে যে পোস্টার সাঁটানো হয়েছিল, তাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি থাকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না।
তিনি বলেন, ‘মেয়েদের ফুটবলে সোনা জয়ের অনুষ্ঠান এমনভাবে প্রচার করেছে যেন শেখ হাসিনা দলের ক্যাপ্টেন ছিলেন। মানুষকে সোনা জয়ের ঘোরে রেখে মুন্সীগঞ্জে বিএনপির ওপর হামলা করেছে।’
বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শাহ মোয়াজ্জেম হোসেনের স্মরণসভা ও দোয়া মাহফিলে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। স্বাধীনতা ফোরাম নামে বিএনপিপন্থি একটি সংগঠন এর আয়োজন করে।
আগের দিন সাফজয়ী ফুটবলারদের সংবর্ধনা দেয় ফুটবল ফেডারেশন। এই দলের সিংহভাগ মেয়ে উঠে এসেছে বঙ্গমাতা গোল্ডকাপ টুর্নামেন্ট থেকে, যেটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একান্ত আগ্রহে আয়োজন করা হয়।
এই ফুটবলারদের সংবর্ধনায় যে বাসের ব্যবস্থা করা হয়, তাতে ফুটবলারদের পাশাপাশি হাতে বল নিয়ে শেখ হাসিনার দাঁড়িয়ে থাকা ছবিও আছে। এ ছবিটি নিয়েই মূলত প্রশ্ন তুললেন মান্না।
স্বাধীনতা ফোরামের এক আলোচনায় নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না। ছ
নাগরিক ঐক্যের নেতার দাবি, এই সংবর্ধনার মধ্যে রাজনীতি আছে। সেদিন মুন্সীগঞ্জে বিএনপি-পুলিশ সংঘর্ষের সময় নেতা-কর্মীদের মাথায় গুলি করার বিষয়টি নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি। বলেন, ‘একদিকে সংবর্ধনা, অন্যদিকে চলে হামলা।’
স্বাধীনতার পর ১৯৭৩ সালের প্রথম নির্বাচনে আওয়ামী লীগ চুরি করে জিতেছিল বলে অভিযোগ মান্নার। বলেন, ‘আওয়ামী লীগ দেশের প্রথম চোর। তারাই প্রথম ব্যালট বাক্স চুরি করেছে স্বাধীনতার পর।
‘আমরা এরশাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছি ভোট ছাড়া ক্ষমতায় থাকার জন্য। শেখ হাসিনাও এখন ভোট ছাড়া ক্ষমতায় আছে। এরশাদ স্বৈরাচার ছিলেন, তার চেয়ে বেশি স্বৈরাচার এই সরকার। এরশাদ ও আইয়ুব খানও এভাবে উন্নয়নের গল্প শুনিয়েছেন। সবাই একসঙ্গে রাস্তায় নামলে সরকারের পতন হবে। যুগপৎ আন্দোলনে সরকারের পতন ঘটাতে আমাদেরকে পারতেই হবে।’
গত নির্বাচনে বিএনপির জোট জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শরিক দলের এই নেতা বলেন, ‘ক্ষমতাসীনরা মুক্তিযুদ্ধ ও জঙ্গিবাদের ট্যাবলেট বেচেছে অনেক দিন ধরে। জঙ্গি কাকে বানানো হচ্ছে সেটি কতটুকু সত্যি তা আমাদের বের করতে হবে। ১২ বছর ধরে প্রমাণ হয়েছে উন্নয়নের নামে সরকার যা করেছে তা একেকটি লুটপাটের প্রজেক্ট।
‘সরকারের লোকেরা হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট ও পাচার করেছে। দেশে এক কোটি শিক্ষিত বেকার। ৬ কোটি টাকার কাজ ১০ কোটি টাকা দিয়ে করেছে।’
সীমান্তে মিয়ানমারের গোলাবর্ষণের ঘটনায় কঠোর ব্যবস্থা না নেয়ায় সরকারের সমালোচনাও করেন মান্না। বলেন, ‘যখন ইচ্ছে করে মারবে, তখন কিচ্ছু করতে পারবে না। এটি একটি দুর্বল সরকার। শুধু বিরোধী দলের ওপর সবল।
স্বাধীনতা ফোরামের সভাপতি আবু নাসের মোহাম্মদ রহমাতুল্লাহর সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ও।