বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বিএনপি নেতার কারখানায় আগুন কীভাবে

  •    
  • ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ১৬:১৩

বিএনপি নেতা বলেন, ‘বুধবার পুলিশ ও বিএনপি নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষের জের ধরেই রাতে পঞ্চসার ইউপি চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা গোলাম মোস্তফার লোকজন আমার ফ্যাক্টরিতে ঢোকে। তাদের সঙ্গে পুলিশের পোশাক পরা তিনজন ছিল। এ সময় ওই লোকগুলো সুতা তৈরির কাঁচামাল কেনার ২০ লাখ টাকা এবং মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। যাওয়ার সময় ফ্যাক্টরিতে আগুন ধরিয়ে দেয় তারা। এতে আমার ৭০ থেকে ৮০ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।’

মুন্সীগঞ্জের সদরে এক বিএনপি নেতার একটি সুতার ফ্যাক্টরি আগুনে পুড়ে ভস্মীভূত হয়েছে। এ সময় ফ্যাক্টরির পাশে থাকা আরও পাঁচটি ঘর আগুনে পুড়েছে।

ভুক্তভোগী বিএনপি নেতার দাবি, স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতার লোকজন ফ্যাক্টরিতে ঢুকে টাকাসহ মালামাল লুট করে নিয়ে গেছে। যাওয়ার সময় তারা আগুন ধরিয়ে দিয়ে যায়।

উপজেলার পঞ্চসার ইউনিয়নে বুধবার রাতে দেড়টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

মুন্সীগঞ্জ ফায়ার স্টেশনের স্টেশন কর্মকর্তা আব্দুর রাকিব নিউজবাংলাকে আগুনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

ভুক্তভোগী মো. নিজামুদ্দিন জেলা যুবদলের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক; বর্তমানে জেলা বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুল হাইয়ের ভাগনে তিনি।

বুধবার বিকেলে উপজেলার মুক্তারপুর এলাকায় বিএনপির বিক্ষোভ মিছিলে পুলিশের সঙ্গে নেতা-কর্মীদের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। এতে আহত হন পুলিশ, সংবাদমাধ্যমকর্মীসহ অন্তত ৫০ জন। ঘণ্টাব্যাপী এই সংঘর্ষে ভাঙচুর করা হয় ছয়টি মোটরসাইকেল। কয়েকটিতে দেয়া হয় আগুনও।

নিজামুদ্দিনের দাবি, এই সংঘর্ষের জেরে পঞ্চসার ইউপি চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা গোলাম মোস্তফার লোকজন তার ফ্যাক্টরিতে আগুন দিয়েছে। তার এ অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন অভিযুক্ত আওয়ামী লীগ নেতা।

নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘বুধবার পুলিশ ও বিএনপি নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষের জের ধরেই রাতে পঞ্চসার ইউপি চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা গোলাম মোস্তফার লোকজন আমার ফ্যাক্টরিতে ঢোকে। তাদের সঙ্গে পুলিশের পোশাক পরা তিনজন ছিল। এ সময় ওই লোকগুলো সুতা তৈরির কাঁচামাল কেনার ২০ লাখ টাকা এবং মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। যাওয়ার সময় ফ্যাক্টরিতে আগুন ধরিয়ে দেয় তারা। এতে আমার ৭০ থেকে ৮০ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।’

এদিকে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন পঞ্চসার ইউপি চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা গোলাম মোস্তফা। বলেন, ‘বুধবার পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় আমরা চিন্তিত। আগুন দেয়ার অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। পুলিশ প্রশাসন আমাদের সব ধরনের ঝামেলা থেকে দূরে থাকতে নিষেধ করেছে। আমরা শান্তিপূর্ণ অবস্থানে আছি। আজকে জেলা পার্টি অফিসে আমাদের একটি সভা রয়েছে। সেখান থেকে আমাদের পরবর্তী করণীয় নিয়ে আলোচনা করা হবে।’

এ বিষয়ে মুন্সীগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুমন দেব বলেন, ‘বিএনপি নেতার ফ্যাক্টরিতে আগুন দেয়ার সময় কোনো পুলিশ সেখানে ছিল না। কারা আগুন দিয়েছে জানা নেই। ক্ষতিগ্রস্তদের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হলে তদন্ত করা হবে।’

স্থানীয়রা জানান, মুক্তারপুর ফেরিঘাট এলাকায় বিএনপি-পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনার পর এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছিল। রাত দেড়টার দিকে আগুনের পোড়া গন্ধে এলাকাবাসীর ঘুম ভেঙে যায়। এ আগুন জ্বলছিল নিজামুদ্দিনের সুতা তৈরির ফ্যাক্টরিতে। এ আগুন পার্শ্ববর্তী কয়েকটি ঘরেও ছড়িয়ে পড়ে। এলাকাবাসী চেষ্টা করলেও আগুন নেভাতে পারেনি। ভোর ৪টা পর্যন্ত জ্বলে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। ততক্ষণে ফ্যাক্টরিসহ পাশের পাঁচটি ঘর পুড়ে যায়।

আগুনে যাদের ঘর পুড়েছে তাদের মধ্যে আছেন রমজান মিয়া নামে একজন। তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বিএনপি-পুলিশের সংঘর্ষ হলো। আমরা আমাদের বাড়িতে ছিলাম। বিএনপি নেতার ফ্যাক্টরিতে আগুন দিল। সে আগুনে আমাদের বাড়িঘর সব পড়ে শেষ হলো। আমাদের এখন খাবার মতো কিছু অবশিষ্ট নেই। যারা আগুন দিল, তাদের বিচার চাই।’

আরেক ভুক্তভোগী রেসিয়া বেগম বলেন, ‘রাতে হঠাৎ আগুন জ্বলতে দেখি। বাচ্চাদের নিয়ে ঘর থেকে বের হই। আগুনে ঘরের সব পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। কোনো রকমে প্রাণ নিয়ে ঘর থেকে বের হয়েছি।’

ঘর পুড়েছে মোকলেস মাদবরের ভাড়াটিয়া নয়ন বিশ্বাসেরও। তিনি বলেন, ‘দুটি কক্ষ ভাড়া নিয়ে থাকতাম। আগুন লাগার পর আমার স্ত্রী ও ছোট বাচ্চা নিয়ে ঘর থেকে কোনো রকম বের হতে পেরেছে। বাকি সব পুড়ে ছাই হয়ে গেছে, একেবারে নিঃস্ব হয়ে গেছি।’

মুন্সীগঞ্জ ফায়ার স্টেশনের স্টেশন কর্মকর্তা আব্দুর রাকিব বলেন, ‘খবর পেয়ে রাত ২টার পর ঘটনাস্থলে যাই। ৫টা বাজে আমরা আগুন নেভাতে সক্ষম হই।’

এ বিভাগের আরো খবর