পূর্ব বিরোধ ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে এক ছাত্রলীগ কর্মীকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত এক ইউনিয়ন শ্রমিক লীগ নেতার বাড়িতে আগুন দিয়েছে বিক্ষুব্ধরা। পরে রাত ১টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।
উপজেলার গোলাকান্দাইলের কাঠপট্টি এলাকায় বুধবার রাতে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত ২২ বছরের রাকিব হাসান গোলাকান্দাইল এলাকার হারুক মিয়ার ছেলে। তিনি উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক দপ্তর সম্পাদক আতিকুর রহমান মঈনের অনুসারী ছিলেন বলে জানা গেছে।
জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার (রূপগঞ্জ) আবির হোসেন নিউজবাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, পূর্ব বিরোধ ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে রাকিবের সঙ্গে গোলাকান্দাইল ইউনিয়ন শ্রমিক লীগ নেতা দেলোয়ার হোসেনের দীর্ঘদিন ধরে দ্বন্দ্ব চলছিল। তাদের দুজনের নামেই মামলা রয়েছে। জেলও খেটেছেন তারা। উভয়ের বিরুদ্ধে এলাকায় নানা অপকর্মের অভিযোগ রয়েছে। তাদের দ্বন্দ্বের জেরে রাতে রাকিবকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাত সাড়ে ৮টার দিকে দেলোয়ারসহ ৮ থেকে ১০ জন লোক মোটরসাইকেলে করে কাঠপট্টি এলাকায় যায়। তাদের হাতে রামদা ও চাপাতিসহ দেশীয় অস্ত্র ছিল। এলাকায় গিয়ে রাকিবকে পাওয়া মাত্রই তারা রামদা ও চাপাতি দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করেন। রাকিব মাটিতে লুটিয়ে পড়লে চলে যান হামলাকারীরা।
ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা ভুলতা পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক মাহাবুবুর রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে রাকিবকে রাস্তায় ফেলে যায় দুর্বৃত্তরা। কোপে তার বাম হাত বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। পরে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।’
রাকিব উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক দপ্তর সম্পাদক আতিকুর রহমান মঈনের অনুসারী ছিলেন জানিয়ে উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফরিদ ভূইয়া মাছুম বলেন, ‘রাকিব ছাত্রলীগের কর্মী হিসেবে বিভিন্ন সভা-সমাবেশে যোগ দিতেন। যারা রাকিবকে কুপিয়ে হত্যা করেছে তাদের বিচার চাই।’
এ খবর ছড়িয়ে পড়লে রাত সাড়ে ১০টার দিকে বিক্ষুব্ধরা অভিযুক্ত দেলোয়ারের বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ ও র্যাব ঘটনাস্থলে যায়। রাত ১টার দিকে ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
কাঞ্চন ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন মাষ্টার রফিকুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘৬টি টিন শেডের ঘর ও একটি দোকানে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। আগুন নেভাতে গেলে বিক্ষুব্ধরা বাধা দেয়। পুলিশ ও র্যাব পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনলে রাত ১টার দিকে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা আগুন নেভায়। আগুনে কেউ হতাহত হয়নি।’
রূপগঞ্জ থানার পুলিশ পরিদর্শক হুমায়ুন কবির বলেন, ‘হত্যায় জড়িতরা পালিয়ে গেছে। তাদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। এ ছাড়া যারা আগুন দিয়ে অন্যের জানমাল ক্ষতি করার চেষ্টা করেছে, তাদেরও আইনের আওতায় আনা হবে। এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন।’