বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

জোট রাজনীতিতে পিছিয়ে পড়ছে আ. লীগ

  •    
  • ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ০৮:৩৬

মহাজোটের অস্তিত্ব স্বীকার করে না জাতীয় পার্টি। ১৪ দলীয় জোট আছে কি না, তা নিয়ে শরিকরা সন্দিহান। বিপরীতে বিরোধী রাজনৈতিক শক্তি বিএনপি জোট সম্প্রসারণ ও শরিক বাড়ানোর দিকে নজর দিয়েছে।

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট থেকে বিচ্ছিন্ন হতে চাইছে অন্যতম শরিক জাতীয় পার্টি। দলটি বলছে, ২০১৪ সালের নির্বাচন থেকেই তারা আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোটে নেই।

অন্যদিকে আওয়ামী লীগের আদর্শিক জোট ১৪ দলের শরিকরাও মনে করে, জোট আছে কি নেই, তা বোঝা যায় না। সাম্প্রতিক দুই-একটি ইস্যুতে অন্তত তিন শরিক দল অবস্থান নিয়েছে সরকার তথা আওয়ামী লীগের বিপক্ষে। সম্পর্ক উন্নয়ন বা জোট বাড়ানোর তাগিদ দেখা যাচ্ছে না শাসক দল আওয়ামী লীগের মধ্যেও।

বিপরীতে প্রধান বিরোধী শক্তি বিএনপি জোটসঙ্গীদের সঙ্গে সম্পর্ক সমুন্নত রাখার পাশাপাশি নতুন মিত্রের সন্ধানে একের পর এক বৈঠক করে যাচ্ছে। অবস্থা পর্যবেক্ষণে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, জোট রাজনীতিতে পিছিয়ে পড়ছে ক্ষমতাসীন দল। যদিও আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, জাতীয় পার্টি যার সঙ্গে ইচ্ছা জোট করতে পারে। আর ১৪ দলীয় শরিকদের অবস্থান নিয়েও উদ্বিগ্ন নন তারা।

দলের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের গত রোববার একটি বেসরকারি টেলিভিশনকে বলেন, ‘জি এম কাদেরের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টি যেখানে খুশি যেতে পারে, যার সঙ্গে জোট করতে চায় করতে পারে। আওয়ামী লীগ এ বিষয় নিয়ে ভাবছে না।’

শাসক দল আওয়ামী লীগ এতদিন সমান্তরালভাবে দুটি জোট লালন করে আসছিল। একটি মহাজোট, যা মূলত নির্বাচনভিত্তিক জোট। আরেকটি ১৪ দলীয় জোট, যা গঠিত হয়েছিল আদর্শিক ঐক্যের ভিত্তিতে। ২০০৮ সালের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ১৪ দলের সঙ্গে জাতীয় পার্টির নির্বাচনি সমাঝোতা হওয়ার পর থেকে এটি মহাজোট নাম ধারণ করে। আর জাতীয় পার্টি ছাড়া অন্যান্য দল নিয়ে আওয়ামী লীগের যে জোট সেটা ১৪ দল নামে পরিচিত। আওয়ামী লীগ ছাড়া এ জোটের উল্লেখযোগ্য শরিকরা হলো জাতীয় পার্টি (জেপি-মঞ্জু), বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ), গণতন্ত্রী পার্টি, সাম্যবাদী দল, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ-রেজাউর), তরিকত ফেডারেশন, গণতান্ত্রিক মজদুর পার্টি, কমিউনিস্ট কেন্দ্র, গণআজাদী লীগ ও ন্যাপ (মোজাফফর)।

এক মঞ্চে আওয়ামী লীগসহ ১৪ দলীয় জোটের শরিক দলের নেতারা। ছবি: সংগৃহীত

শুরুতে গণফোরামও এ জোটের অংশীদার ছিল। পরে দলটি বেরিয়ে যায়। এরপর জাকের পার্টি এসে যুক্ত হলেও এর অস্তিত্ব নেই বললেই চলে।

সম্প্রতি জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের ঘোষণা দিয়েছেন, তারা আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোটে নেই এবং যাবেনও না। এ বিষয়ে জানতে চাইলে জি এম কাদের নিউজবাংলাকে বলেন, ‘২০০৮ সালের নির্বাচনে জাতীয় পার্টি আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোটে ছিল। আর ২০১৪ এবং ২০১৮ সালের নির্বাচনে নির্বাচনি বোঝাপাড়া ছিল, যা কোনোভাবেই জোট নয়।’

যুক্তি হিসেবে তিনি জানান, জোটসঙ্গী হলে জাতীয় পার্টি কোনোভাবেই বিরোধী দল হতে পারত না। আর এ দুই নির্বাচনেই তার দল স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচনে অংশ নিয়েছে। কাজেই এটা নতুন করে বলার কিছু নেই যে, জাতীয় পার্টি মহাজোটে নেই। কেননা ২০১৪ সালের পর থেকেই এ জোটের অস্তিত্ব নেই।

সম্প্রতি জ্বালানি তেল ও সারের মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদ করে রাজপথে বিক্ষোভ করেছে আওয়ামী লীগের ১৪ দলীয় শরিক ওয়ার্কার্স পার্টি ও জাসদ। সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছে গণতন্ত্রী পার্টি। ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন এবং জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু দুজনই সরকারবিরোধী বক্তব্যও দিচ্ছেন।

রাশেদ খান মেনন, দিলীপ বড়ুয়াসহ ১৪ দলীয় জোটের নেতারা। ফাইল ছবি

এ বছরের ১৩ এপ্রিল ১৪ দলীয় জোট থেকে বেরিয়ে গেছে বাংলাদেশ জাসদ। অতি সম্প্রতি জোট হিসেবেও ১৪ দলকে সক্রিয় দেখা যাচ্ছে না। জোটটির যেমন রাজপথে কোনো কর্মসূচি নেই, তেমনি অভ্যন্তরীণ বৈঠকও হচ্ছে না অনেক দিন ধরে।

বিপরীতে ২০ দলীয় জোটের নেতৃত্বে থাকা বিএনপিকে মিত্র বাড়াতে তৎপর দেখা যাচ্ছে। দলটি সম্প্রতি এলডিপি, নাগরিক ঐক্য, গণঅধিকার পরিষদ, লেবার পার্টি, বিপ্লবী ওয়ার্কাস পার্টি, গণসংহতি আন্দোলনসহ অনেক দলের সঙ্গে বৈঠক করেছে।

এসব নিয়ে আওয়ামী লীগ একেবারেই উদ্বিগ্ন নয় বলে নিউজবাংলার কাছে দাবি করেন দলটির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘সরকারে থাকলে কিছু টানাপোড়েন থাকেই। সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা বা সমালোচনা সারা বিশ্বেই বিরাজমান। শরিকদের সজাগ থাকা ভালো, কিন্তু উৎকণ্ঠা নিয়ে তো চলা উচিত নয়। অবস্থা এমন পর্যায়ে যায়নি যে, তাদের ছাড়া আওয়ামী লীগ টিকতে পারবে না।’

আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে জোটকে শক্তিশালী করা বা শরিক বাড়ানোর কোনো পরিকল্পনা আওয়ামী লীগ করছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এগুলো অনানুষ্ঠানিক বিষয়। সময়ের প্রয়োজনে যথাযথ সিদ্ধান্ত ও পরিকল্পনা গ্রহণ করা হবে।’

তার সঙ্গে একমত পোষণ করেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফও। তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার পরিচালনায় এবং দেশের উন্নয়নে মনোযোগী। নির্বাচন আসলে এসব বিষয় নিয়ে পরিকল্পনা গ্রহণ করা হবে। সে সময়ে সার্বিক অবস্থা বিশ্লেষণ করেই জোট সম্প্রসারণ এবং জোটসঙ্গীদের সঙ্গে আলোচনা হবে।’

এ বিভাগের আরো খবর