বাংলাদেশের জলবায়ু-ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় নারীরা মাত্র ৬ দশমিক ৮৯ শতাংশ কৃষি জমির মালিক, যেখানে পুরুষরা ৯৩ দশমিক ১১ শতাংশ। আর গৃহস্থালি কাজের ৯৮ দশমিক ৫৪ শতাংশ ভার বহন করে নারীরা, যেখানে পুরুষদের অবদান নগণ্য, ১ দশমিক ৪৬ শতাংশ।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) লিঙ্গ, বয়স ও প্রতিবন্ধীদের ওপর পরীক্ষামূলক জরিপের তথ্যে এমন তথ্য বেরিয়ে এসেছে। জাতিসংঘের নারী বিষয়ক সংস্থা ইউএন উইমেনের কারিগরি সহায়তায় জলবায়ু পরিবর্তন এবং দুর্যোগ মোকাবেলার ওপর জরিপটি পরিচালিত হয়েছে।
বুধবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিবিএস মিলনায়তনে আনুষ্ঠানিকভাবে এ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।
সমীক্ষায় দেখা গেছে- কৃষি, ব্যবসা, অন্যান্য সেবা অথবা দিনমজুরের কাজে নিয়োজিতদের মধ্যে ১০ দশমিক ৬০ শতাংশ নারী এবং ৮৯ দশমিক ৪০ শতাংশ পুরুষ।
জরিপের তথ্য তুলে ধরে অনুষ্ঠানে বলা হয়, জলবায়ু পরিবর্তন ও প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে নারী-পুরুষের পাশাপাশি তৃতীয় লিঙ্গ, প্রতিবন্ধী, সংখ্যালঘু, শিশুসহ সবার ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। তাই এই জনগোষ্ঠী সম্পর্কে পৃথকভাবে মূল্যায়ন এবং সুনির্দিষ্ট চাহিদা মেটাতে সব স্তরের উদ্যোগের প্রয়োজনীয়তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ৷
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি পরিসংখ্যান ও তথ্যবিজ্ঞান বিভাগের সচিব ডা. শাহনাজ আরেফিন এনডিসি বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের তীব্রতা ও ধারা বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাব মোকাবেলায় আমাদের ব্যাপক প্রস্তুতি প্রয়োজন। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য আমাদের অভিযোজন এবং প্রশমন উভয় পদ্ধতিতে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।
শিক্ষাবিদ, গবেষক, বেসরকারি ও সরকারি সব স্তরের সংস্থার সঙ্গে সম্মিলিতভাবে এবং সঠিক তথ্যের ওপর নির্ভর করে একটি ন্যায়সঙ্গত, টেকসই এবং স্থিতিস্থাপক বাংলাদেশ নিশ্চিত করতে একসঙ্গে কাজ করে যেতে হবে।’
বিশেষ অতিথি ইউএন উইমেন বাংলাদেশের কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ গীতাঞ্জলি সিং বলেন, ‘এই প্রতিবেদনের মাধ্যমে আমরা জানতে পারি যে কিভাবে স্থানীয় থেকে জাতীয় পর্যায়ে ঝুঁকি কমানোর জন্য লিঙ্গ-সমতা, জলবায়ু পরিবর্তন এবং দুর্যোগ-ঝুঁকির মধ্যে সমন্বয় করতে এই জরিপের তথ্যকে ব্যবহার করা যাবে।
‘প্রতিবেদনটি জলবায়ু পরিবর্তন এবং দুর্যোগ-ঝুঁকি হ্রাসে জেন্ডার সহায়ক তথ্য সংগ্রহে সংশ্লিষ্ট সরকারি মন্ত্রণালয় এবং বিভাগগুলোর জন্য সহায়ক হবে। আর তা জলবায়ু দুর্যোগ-প্রবণ এলাকায় বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর প্রয়োজনীয় চাহিদা মেটাতে এবং দুর্বলতা হ্রাসে সহায়তা করবে৷’
বিবিএসের মহাপরিচালক মো. মতিয়ার রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ফরিদা পারভীন, অধ্যাপক ড. সাঈদ শাহাদাত হোসেন, ড. এ. আতিক রহমান ও প্রফেসর ড. এ কে এম নুরুন নবী।