বাংলাদেশের ভেতরে মিয়ানমার মাঝেমধ্যেই যে গোলা ছোড়ার ঘটনা ঘটাচ্ছে, তা দেশটির অনিচ্ছাকৃত ‘ভুল’ বলে মনে করছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন।
যুক্তরাজ্যে স্থানীয় সময় মঙ্গলবার সন্ধ্যায় হোটেল লোটেতে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নে এ মন্তব্য করেন তিনি।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘ওই এলাকার বর্ডারটা খুব ক্রিসক্রস। কখনও কখনও এটা বোঝা মুশকিল। তো সেই কারণে ওরা বলেছে যে, তারা কোনো টার্গেট করে আমাদের এখানে কিছু ফেলছে না। দু-একটি যে পড়েছে সেইগুলো বাই মিসটেক।
‘সুতরাং আমরা তাদের ডেকেছি। তারা আমাদের অঙ্গীকার করেছে, এ ব্যাপারে সতর্কতা অবলম্বন করবে।’
মিয়ানমারের সংঘাত প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘তাদের ওখানে দুই দল মারামারি করছে। যেহেতু অনেক লোক রোহিঙ্গা, এসব লোক বর্ডার এলাকায় নো ম্যান্স ল্যান্ডে থাকে। তার ফলে তারা সেখানে মিয়ানমারের সংঘাতের সময়, সময় সময় কিছু গোলাগুলি হয়।’
মিয়ানমারে সংঘাতের কারণে নতুন করে কোনো রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেয়া হবে কি না জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশে এবার আমরা খুব স্ট্রং পজিশন নিয়েছে। আমরা আমাদের এন্টার বর্ডারটা সিল করে দিয়েছি। যাতে একটাও রোহিঙ্গা আমাদের এদিকে ঢুকতে না পারে।’
আব্দুল মোমেন আরও বলেন, ‘আপনারা জানেন ইতোমধ্যে কিছু লোক চীন এলাকায় যাচ্ছে। আমাদের দিকে সাহস করে আসেনি। কারণ আমরা খুব শক্ত অবস্থা নিয়েছি। যে এবারে আমরা একটা লোককেও প্রবেশ করতে দেব না। কারণ যেগুলো আছে সেগুলো এখনো ফেরত পাঠাতে পারি নাই। শুধু আশায় আশায় আছি। ইনশাআল্লাহ ওরা ফেরত যাবে।’
সম্প্রতি বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তবর্তী এলাকার বাংলাদেশের ভেতরে বান্দরবানের ঘুমধুম এবং কক্সবাজারের উখিয়ায় মিয়ানমারের গোলা ও মর্টার শেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। সীমান্তে মিয়ানমারের সামরিক তৎপরতার পরিপ্রেক্ষিতে কয়েক দফা বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ডাকে হাজির হয়েছিলেন ঢাকায় দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশটির দূত অং কিয়াউ মো।
এ অবস্থায় বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতকে ডেকে সীমান্ত পরিস্থিতির ব্যাখ্যা দেয় মিয়ানমার। সেখানে দেশটির সীমান্তে গোলা নিক্ষেপে সেনাবাহিনী জড়িত নয় বলে সাফাই গেয়েছেন দেশটির কর্মকর্তারা। বিষয়টি নিজেদের ফেসবুক পেজেও তুলে ধরেছে নেপিডোর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
ব্যাখ্যায় সীমান্তে গোলা নিক্ষেপের ঘটনায় আরাকান আর্মি ও রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি বা আরসা জড়িত বলে মিয়ানমারের দাবির কথা নিউজবাংলাকে জানিয়েছে নেপিডোয় বাংলাদেশ দূতাবাস।