বরিশাল সিটি করপোরেশনে ৫৯ কোটি টাকা বিদ্যুৎ বিল বকেয়া থাকায় সড়ক বাতি ও পানির লাইনের বৈদ্যুতিক সংযোগ বিচ্ছিন্ন করছে ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (ওজোপাডিকো) বরিশাল।
সিটি করপোরেশন বলছে, তিনদিন আগেই বকেয়া বিলের কিছু টাকা পরিশোধ করা হয়েছে। তারপরও বিনা নোটিশে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে।
নগরীতে রোববার বিকেল থেকে সংযোগ বিচ্ছিন্নের অভিযান শুরু করে ওজোপাডিকো বরিশাল বিভাগ। মঙ্গলবার পর্যন্ত সংযোগ না থাকায় নগরীর ৩০টি ওয়ার্ডের সব সড়ক অন্ধকারে তলিয়েছে।
ওজোপাডিকোর বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী (ভারপ্রাপ্ত) মো. ফারুক হোসেন জানান, সিটি করপোরেশনের কাছে ওজোপাডিকোর ৫৯ কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে। বকেয়া টাকার জন্য ওজোপাডিকোর বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ-২ এর আওতাধীন ৮টি সড়কের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে।
সড়কগুলো হলো নগরীর অপরাধপ্রবন এলাকা পলাশপুর সড়ক, বাণিজ্যিক এলাকা বাজার রোড ও পোর্ট রোড, আবাসিক এলাকা কলেজ রোড, কাউনিয়া ব্রাঞ্চ রোড, নতুন বাজার পুলিশ ফাঁড়ির সামনের সড়ক, নথুল্লাবাদ লুৎফুর রহমান সড়ক এবং উত্তর আমানতগঞ্জ সড়ক।
ওজোপাডিকোর বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী আমজাদ হোসেন বলেন, ‘সিটি করপোরেশনকে বকেয়া আদায়ে নোটিশ দেয়া হয়েছে। বরিশাল বিভাগীয় কমিশনারসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নিয়ে সভা করা হয়েছে। কিন্তু কোনো সমাধান না হওয়ায় সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে।’
তিনি জানান, তার অধীনে ৭টি সড়কের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। সড়কগুলো হলো কালিজিরা সড়ক, জিয়া সড়ক, ধান গবেষণা সড়ক, টিয়াখালী সড়ক, কালুশাহ সড়ক, নবগ্রাম সড়ক ও বটতলা। এসব সড়কের ৩০টি এলাকার শাখা সড়কের বিদ্যুৎ বাতি জ্বলছে না।
ওজোপাডিকো লিমিটেড বরিশালের পরিচালনা ও সংরক্ষণ সার্কেলের সহকারী প্রকৌশলী নুরুল ইসলাম বিশ্বাস জানান, প্রায় ১০ বছর ধরে বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করছে না সিটি করপোরেশন। এতে করে বড় একটি অংক জমা হয়েছে।
নুরুল বলেন, ‘সেই টাকা উত্তোলন করতে না পেরে মন্ত্রণালয়ের চাপের মুখে আছি। তাই সিটি করপোরেশনের সড়ক বাতির বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্নের অভিযান শুরু হয়েছে। সরকারের কাছে আমাদের জবাবদিহি করতে হয়।’
এসব বিষয়ে সিটি করপোরেশনের প্রশাসনিক কর্মকর্তা স্বপন কুমার দাস বলেন, ‘গত ১৮ সেপ্টেম্বর ৮০ লাখ টাকা জমা দেয়া হয়েছিল। এরপর কোনো নোটিশ না দিয়ে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। এতে ১২টি পানি উত্তোলনের মোটরের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
‘মঙ্গলবার থেকে বিষয়টি টের পেয়েছি। পানি উত্তোলন করতে না পারলে নগরীতে পানি সংকট দেখা দেবে।’
এই কর্মকর্তার দাবি, ওজোপাডিকো সিটি করপোরেশনের কাছে ৪২ কোটি ২০ লাখ টাকা পাবে।
তিনি বলেন, ‘কেন তারা এই কাজটি করল এবং কার অনুমতি নিয়ে করল তা বলতে পারছি না। আমাদেরকে কোনো কিছুই জানায়নি। হঠাৎ করে তারা সড়ক বাতি এবং পানি সরবারহের বিদ্যুৎ লাইন বিচ্ছিন্ন করে দেয়। আজ পর্যন্ত নগরীর সব সড়ক ও পানির লাইনের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।’